ডং ও বেলো। যাঁদের নিয়ে বিতর্ক।
চল্লিশ বছর পরে পিকে-র ইস্টবেঙ্গলের টানা ছ’বারের লিগ জয়ের বিরল রেকর্ডকে তাড়া।
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের লাল-হলুদের সেই ইতিহাসের ভাগীদার হতে চলার রসায়ন কী?
ময়দানের দশ জনের মধ্যে নয় জনের উত্তর হবে তিনটে— নতুন কোরিয়ান রিক্রুট ডংয়ের ভয়ঙ্কর গোল-ক্ষুধা। মাঝমাঠের ধারাবাহিক গনগনে জ্বলা। কোনও ম্যাচে কোচের ‘প্ল্যান এ’ না খাটলে ‘প্ল্যান বি’-র কার্যকারিতা।
এবং সেই উত্তরদাতা ডাহা ফেল করছেন!
চতুর্থ এবং ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ চতুর্থ কারণটা ভুললে চলবে না।
নিয়মানুবর্তিতা।
যে কোনও পেশায় সাফল্যের যা অন্যতম প্রধান শর্ত।
যে কঠোর নিয়মানুবর্তিতা এ বার সেই প্রাক-মরসুমে কল্যাণীর আবাসিক শিবির থেকে ইস্টবেঙ্গলে বহমান।
যে নিয়মানুবর্তিতার সোমবার আরও কঠোর দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন লাল-হলুদ কোচ। পাঁচ মিনিট দেরিতে ঢোকায় প্র্যাকটিসেই নামতে দিলেন না টিমের প্রাণভোমরা ডো ডং এবং ডিফেন্সের জেনারেল বেলো রজ্জাককে!
কলকাতা লিগ জয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা টিমে বিশৃঙ্খলার যে কোনও জায়গা নেই, সেটা বড় দলের বঙ্গসন্তান কোচ তো বোঝালেন-ই। এটাও দেখালেন, তাঁর কাছে নামের চেয়েও বড় নীতি। হয়তো সে জন্যই ডার্বির মাত্র পাঁচ দিন বাকি থাকতেও তারকাদের রেয়াত করলেন না। বিশ্বজিৎ বলছিলেন, ‘‘কেউ মাঠে গোল করছে বলে কি মাঠের বাইরে বিশৃঙ্খলার লাইসেন্স পেয়ে যাবে? সাফল্যের চূড়োয় উঠতে ডিসিপ্লিন খুব জরুরি। আমি যত দিন ইস্টবেঙ্গলে আছি এ সব বরদাস্ত করব না।’’
সে ‘অপরাধী’ হোক না লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা। কিংবা অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার। তাতে কী? পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়ও মনে করছেন, বিশ্বজিৎ যদি এই সাহসী মনোভাব ধরে রাখতে পারেন, তা হলে ইস্টবেঙ্গল এই মরসুমে নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে। ‘‘এ রকম এক দিন করেই বন্ধ করলে চলবে না কিন্তু। বিশুকে বলব, এটা ধরে রাখ বাবা,’’ ঘটনাটা শুনে বললেন পি কে।
বিশ্বজিতের জন্য অবশ্য একটা অন্য তত্ত্বও দিচ্ছেন পিকে। ‘‘আমি প্র্যাকটিস থেকে কাউকে বঞ্চিত করতাম না। বরং পুরো মাঠে অতিরিক্ত তিনটে ল্যাপ দৌড় করাতাম। তখন আমার ফুটবলার হাত জোড় করে ক্ষমা চাইলেও তাকে ছাড়তাম না।’’
নতুন মরসুমে বিশ্বজিতের দলে এ রকম শৃঙ্খলার প্রমাণ আগেও পাওয়া গিয়েছে। কল্যাণীতে আবাসিক শিবিরের সময় সব ফুটবলারের জন্য একটা হাজিরা-খাতা চালু করেছিলেন কোচ। ফুটবলাররা কখন আসছেন, কখন বেরোচ্ছেন তার হিসেব রাখার জন্য। দেরিতে ঢুকলেই পাঁচশো টাকা জরিমানা। এ দিনের ‘অপরাধে’ ডং আর বেলোকেও যেটা দিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy