পুল করতে গিয়ে গম্ভীরের মিস হিট। (ডান দিকে) ঘাতক শ্রীনাথ অরবিন্দ। বৃহস্পতিবার ইডেনে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
শেষ দুই ইনিংসে যাদের মোট রান ১১৭৯, সেই দিল্লি বৃহস্পতিবার সকালে ইডেনে নেমে ৯০-এ অল আউট!
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি।
বডোদরায় ৫৮৯ ও ওয়াংখেড়েতে ৫৯০ তুলে আসা দিল্লির ইডেনে কি না এই হাল!
ইডেন উইকেটই ফের ভিলেন নয় তো?
দু’ঘন্টা আটত্রিশ মিনিটে গৌতম গম্ভীর, ঋষভ পন্থ-সহ দিল্লির পুরো ব্যাটিং লাইন-আপ কর্নাটকের বাঁ-হাতি মিডিয়াম পেসার শ্রীনাথ অরবিন্দ ও অফস্পিনার কৃষ্ণাপ্পা গৌতমের বোলিংয়ে শুয়ে পড়ার পর এই প্রশ্নই উঠে গিয়েছিল।
কিন্তু কর্নাটকের দুই ওপেনার রবিকুমার সমর্থ ও ময়ঙ্ক অগ্রবালের হাফ সেঞ্চুরি ও ৮৭-র পার্টনারশিপ ও দিনের শেষে কর্নাটকের ১৩১-৩ বুঝিয়ে দিল ইডেনের উইকেটে জুজু নেই। বরং একটু ধরে খেললে এই উইকেট থেকে রান পাওয়াই যেত।
চিকুনগুনিয়া থেকে উঠে আসা ভারতীয় দলের অন্যতম প্রধান স্ট্রাইক বোলার ইশান্ত শর্মাও এ দিন সবচেয়ে বেশি খরুচে হয়ে রইলেন তাঁর সতীর্থদের তুলনায়। চারটে স্পেলে যে দশ ওভার করলেন ইশান্ত, তাতে ৩৪ রান দিলেন। শুধু তাই নয়, বল জায়গাতেই রাখতে পারছিলেন না। আগের ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি পাওয়া কর্নাটকের অন্য ওপেনার সমর্থ তো তাঁকে পুল করে সোজা গ্যালারিতেও পাঠিয়ে দেন।
ইডেনে দুই নাইটের যুদ্ধটা এ দিন একেবারে ম্যাড়মেড়ে হয়ে যায়। গম্ভীররের অপ্রত্যাশিত আউটের পর রবিন উথাপ্পার ব্যাটিংও কম হতাশ করার মতো নয়। প্রায় এক ঘন্টা ক্রিজে থেকে ৪৩ বল খেলে তাঁর অবদান মাত্র পাঁচ!
রঞ্জি ট্রফিতে ঘরের মাঠের সুবিধা পাওয়া বন্ধ হয়ে গেলেও উথাপ্পা ও কেকেআর অধিনায়ক গম্ভীর তো এই ম্যাচে সেটাই পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু যে ভাবে পুল করতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন গম্ভীর, দেখলে খারাপই লাগবে। যে বলটা ছেড়ে দেওয়া যেত, সেটাতেই বাউন্ডারি খুঁজতে গিয়ে ফিরে গেলেন। ওয়াংখেড়েতে ট্রিপল সেঞ্চুরি করে আসা ঋষভ পন্থের অবস্থাও প্রায় এক। ২০ বলে ২৪ রান করলেন তিনি। দল ৫২-৪ হয়ে যাওয়ার পরও তিনি কেন এত তাড়াহুড়ো, কে জানে? কুড়ি বলের এই ইনিংসেও দু-দু’বার স্লিপে ড্রপড হলেন। তাঁর ক্যাচ পড়ার পরের বলগুলোতেই বাউন্ডারিও হাঁকালেন বিরাট কোহালির আগ্রাসনের ভক্ত এই তরুণ। কিন্তু সেই স্লিপেই আবার ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি। ওয়াংখেড়েতে আগের ম্যাচে প্রায় পৌনে আট ঘণ্টা ক্রিজে পড়ে ছিলেন যিনি, সেই ঋষভের মধ্যে অদ্ভূত ভাবে এ দিন তাড়াহুড়ো করতে গেলেন।
চোট পাওয়া বিনয় কুমারের পরিবর্তে নামা অরবিন্দ বা অফ স্পিনার গৌতম যে দারুণ ভয়ঙ্কর বোলিং করেছেন এ দিন, তাও নয়। লাইন আর লেংথ ঠিক রেখে এক দিক থেকে বলটা করছিলেন অরবিন্দ। অন্য দিক থেকে অভিমন্যু মিঠুন বেশ চাপে রেখেছিলেন ব্যাটসম্যানদের। দুই তরফ থেকে এই আক্রমণকেই পাল্টা দিতে গিয়ে কাত দিল্লি।
এক দিনে ১৩ উইকেট। বাইশ গজ নিয়ে প্রশ্ন করতেই ইডেন কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়ের জবাব, ‘‘কেউ যদি উইকেটে পড়ে থাকতে না চায়, যদি উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসে, তা হলে তার দায়ও উইকেটের ঘাড়ে চাপবে?’’
ইডেনের উইকেট যে নন্দ ঘোষ নয়, সেটাই বোধহয় মনে করিয়ে দিতে চাইলেন কিউরেটর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy