অস্ট্রেলিয়া শিবিরে জয়ের উল্লাস। ছবি: রয়টার্স।
প্রথম ইনিংসে ১০৫ রানে অল-আউটের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ১০৭ রানে শেষ ভারত। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে হার ৩৩৩ রানে।
আড়াই দিনেই শেষ ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটের ‘অপরাজেয়’ গরিমা। নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ডকে হোয়াইট ওয়াশ করে বাড়ি পাঠানোর পর অনেকেই ভেবেছিলেন দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়াকেও একই ভাবে উড়িয়ে দেবে বিরাট কোহালি অ্যান্ড ব্রিগেড। কিন্তু তেমনটা হল না। বরং ঘরের মাঠে যে ভাবে মুখ থুবড়ে পড়ল ভারতীয় দল সেটা দেখে অস্ট্রেলিয়াও অবাক। ভারতের গর্বের ইতিহাসে জোড় ধাক্কা দিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। শুরু থেকে শেষ ভারতের মাটিতে ভারতের বিরুদ্ধে রাজত্ব করে গেলেন স্মিথ অ্যান্ড ব্রিগেড। বল হাতে যে সাফল্য ভারতের থেকে আশা করা গিয়েছিল, ঠিক উল্টোটাই দেখিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। যে ঘূর্ণি উইকেটের দৌলতে বিদেশি দলগুলো হাবুডুবু খায়, সেই উইকেটই এ বার ব্যুমেরাং হয়ে ফিরল ভারতের দিকে।
আরও খবর: ‘অধিনায়ক বিরাটের আগ্রাসনের মধ্যে সৌরভের সেই আবেগ দেখতে পাই’
ব্যাট করছেন চেতেশ্বর পূজারা।
পুণের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের স্টেডিয়ামে অসহায় আত্মসমর্পন দেখা গেল ভারতের। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ২৬০ রানে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস গুটিয়ে যাওয়ার পর মনে করা হয়েছিল ভারতীয় স্পিনাররা তাঁদের চেনা ছন্দেই খেল দেখাতে শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু উৎসবের ছন্দ পতন ঘটল ভারত ব্যাট হাতে নামতেই। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ২৬০ রানের জবাবে নেমে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় বিরাট কোহালিরা। বল হাতে যতটুকু সাফল্য দেখিয়েছিলেন ভারতের বোলাররা ব্যাট হাতে তার মর্যাদাটুকু রাখতে পারলেন না ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ইনিংসে ভারতের ব্যাট থেকে এল সর্বোচ্চ ৬৪ রানের ইনিংস। করলেন লোকেশ রাহুল। এর পর ৪৪/৩ থেকে ৯৪/৩। তার পর সাত উইকেট পড়ে গিয়েছিল মাত্র ১১ রানে। দলের ৯৪ রানে প্যাভেলিয়নে ফেরেন লোকেশ। ৯৫-এ পর পর আউট হন রাহানে, ঋদ্ধিমান, অশ্বিন। ৯৮ রানে ফেরেন জয়ন্ত যাদব। ১০১-এ জাডেজার পর ১০৫-এ উমেশ যাদব আউট হতেই শেষ হয়ে যায় ভারতের ইনিংস। ছ’টি উইকেট নিয়ে প্রথম ইনিংসে হিরো অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ ও’কিফ।
সেঞ্চুরি করার পর স্টিভ স্মিথ।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের সেঞ্চুরি-সহ ২৮৫ রানে শেষ হয় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। অশ্বিনের চার ও জাডেজার তিন উইকেটের সৌজন্যে অস্ট্রেলিয়া অল-আউট হয়ে গেলেও সেই রান তাড়া করে জয় ছিনিয়ে নেওয়া যে ভারতের ব্যাটসম্যানদের পক্ষে সম্ভব ছিল না সেটা প্রমাণ হয়ে গেল ভারত ব্যাট হাতে নামতেই। প্রথম ইনিংসে ১০৫-এ অল-আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ১০৭-এই শেষ ভারত। এ বারও স্টিভ ও’কিফের দখলে ছয় উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৩১ রান করলেন পূজারা। প্রথম ইনিংসেরই অ্যাকশন রিপ্লে দেখা গেল দ্বিতীয় ইনিংসেও। ৭৭/৪ থেকে রাহানে আউট হওয়ার পর ৮৯ রানে ফিরলেন অশ্বিন, ৯৯-এ ঋদ্ধিমান ফেরার পর ১০০-তে গেলেন পূজারা। ১০২ রানে জাডেজা, ইশান্ত আউট হওয়ার পর পাঁচ রানই যোগ হয়েছিল শেষ উইকেটে। দশম উইকেট হিসেবে দুই ইনিংসেই নাম লেখা থাকল দুই যাদবের। প্রথম ইনিংসে উমেশ যাদবের পর দ্বিতীয় ইনিংসে জয়ন্ত যাদবের। ১২টি উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হলেন স্টিভ ও’কিফে। তিনি একাই বুঝিয়ে দিলেন একটু শক্ত বোলিংয়ের সামনে এ ভাবেই ভেঙে দেওয়া যায় ভারতের ব্যাটিং শক্তিকে। বিশেষ করে ভারতের মিডল অর্ডারের ধসে টিম ম্যানেজমেন্টের মাথায় এখন পাহাড় প্রমাণ চাপ।
এদিনও মাঠে অসুস্থ হয়ে পরেন রেন শ। চিকিৎসা চলছে।
এই টেস্ট হারের পর থমকে গেল অধিনায়ক বিরাট কোহালির টানা অপরাজিত থাকার দৌড়। এর আগে এক টানা ১৫ টেস্টে হারেনি ভারত। ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে এটা কোহালির রেকর্ড।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy