বিধ্বস্ত মেসি।ছবি: এএফপি।
হৃদয়ে পিন বেঁধানো খোঁচাগুলোর আর জবাব দেওয়া হল না! জেতা হল না একটা আন্তর্জাতিক ট্রফিও। অথচ তার আগেই শেষ হয়ে গেল মেসি-যুগের।
একটা সময় আর্জেন্তিনা ছিল মারাদোনার। তার অনেক পরে শুরু হয়েছিল আর একটা যুগের। মেসি-যুগ।
মাঝখানের সময়টা ছিল অনেকেরই। কিন্তু, এ ভাবে নায়ক হয়ে উঠতে পারেননি তাঁদের কেউই। অনেক বড় বড় খেলোয়াড় এসেছেন। চলেও গিয়েছেন। কিন্তু, মারাদোনা রয়ে গিয়েছেন সবার মনে। ঠিক যে ভাবে মেসিও থেকে যাবেন বিশ্ব ফুটবলের সব থেকে প্রিয় শো-কেসে। যদিও তাঁর হাত ধরে আর্জেন্তিনায় আসেনি কোনও বড় আন্তর্জাতিক ট্রফি। যা নিয়ে আজও কটাক্ষ করতে ছাড়েন না মারাদোনা। তিনি তো দেশকে বিশ্বকাপ দিয়েছেন! মারাদোনাকে সেই কটাক্ষের জবাব দেওয়া হল না মেসির। দেশের ঘরে তোলা হয়নি একটা আন্তর্জাতিক ট্রফিও।
আর্জেন্তিনা শেষ আন্তর্জাতিক ট্রফি জিতেছিল ১৯৯৩-এ। দীর্ঘ ২৩ বছর আগে। এর মধ্যে তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলেছে মোট সাতটি ফাইনাল। না, জয়ের ট্রফি হাতে ফেরা হয়নি দেশে। ১৯৯১ এবং ১৯৯৩-এ পর পর দু’বার কোপা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আর্জেন্তিনা। তার পর থেকে ফাইনালে হারের রেকর্ড করে ফেলেছে মেসি-মারাদোনার দেশ। ১৯৭৮-এ ড্যানিয়েল পাসারেলা ও ১৯৮৬তে দিয়েগো মারাদোনার হাত ধরে দেশে বিশ্বকাপ এসেছিল। ১৯৯০-এ আবার ফাইনালে পৌঁছলেও রানার্স হয়েই থাকতে হয়েছিল। ২৪ বছর পর আবার ব্রাজিল বিশ্বকাপে মেসির হাত ধরে ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল আর্জেন্তিনা। কিন্তু না। শেষ রক্ষা হয়নি। জার্মানির কাছে হেরে রানার্সেই থামতে হয়েছিল।
১৯৯৩-এ কোপায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ১৯৯৫ ও ২০০৫ এ ফিফা কনফেডারেশন কাপে রানার্স হতে হয়েছে। ২০০৪, ২০০৭, ২০১৫ ও ২০১৬-র কোপার ছবিও একই। সেই রানার্স। আর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ২০১৪র বিশ্বকাপ। এর মধ্যে অবশ্য অলিম্পিকে দু’বছর সোনা জিতেছে আর্জেন্তিনা। সেটা ২০০৪ ও ২০০৮ এ। যদিও অলিম্পিকের ফলকে বিশ্ব ফুটবলে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না।
২০১৮-য় রাশিয়ায় বসতে চলেছে বিশ্ব ফুটবলের সেরা উৎসব। বিশ্বকাপ। মেসি থাকবেন না সেই বিশ্বকাপে। তার আগে রয়েছে একগুচ্ছ বিশ্বকাপের যোগ্যতা নির্ণায়ক ম্যাচ। ইতিমধ্যেই দুটো খেলে জিতেওছে। তার মধ্যে একটি ম্যাচে চিলিকে ১-২ গোলে হারিয়ে দিয়েছিল আর্জেন্তিনা। সেটা ২৪ মার্চের ঘটনা। বলিভিয়াকে হারিয়েছে ২-০তে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে আবার শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপের যোগ্যতা নির্ণায়ক পর্ব। রয়েছে ১২টি ম্যাচ। চলবে ১০ অক্টোবর ২০১৭ পর্যন্ত। এই অবস্থায় কে হবেন আর্জেন্তিনার পথ প্রদর্শক? কে হবেন মাঠের নেতা? কে ফিরিয়ে দেবেন সেই গৌরবের দিন? মেসি পারেননি। যে যন্ত্রণা আরও কয়েক বছর নীল-সাদা জার্সির অন্তরালে ডুকরে কেঁদে উঠবে প্রতিনিয়ত। সাতটা ফাইনাল তো কম কথা নয়!
আরও খবর...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy