কোর্টেই নিজের পনিটেল কাটছেন কুজনেৎসোভা।
টেনিস কোর্টে চূড়ান্ত নাটক! ম্যাচ হারার মুখে দাঁড়িয়ে নিজের পনিটেল কেটে ফেললেন শ্বেতলানা কুজনেৎসোভা। পরের গেম হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন। এর পর ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচিয়ে প্রথম রাউন্ড পকেটস্থ করলেন। সোমবার এমন সব নাটকীয় মুহূর্তের সাক্ষী রইলেন সিঙ্গাপুর ইন্ডোর স্টেডিয়ামের দর্শকেরা। শেষমেশ তিন সেটের যুযুধানে টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অ্যাগ্নিয়েস্কা রাডওয়ানস্কাকে বাড়ি পাঠালেন ৭-৫, ১-৬, ৭-৫-তে।
পোল্যান্ডের রাডওয়ানস্কার বিরুদ্ধে প্রথম দু’টি সেটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর দু’জনেই একটা করে সেট জেতেন। তবে তৃতীয় সেটে যেন কিছুতেই রাডওয়ানস্কার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছিলেন না রাশিয়ান খেলোয়াড়। একটা সময় তো মনে হচ্ছিল, ক্লান্তিতে হয়তো কোর্টেই ভেঙে পড়বেন তিনি। চূড়ান্ত সেটে ১-২ পিছিয়ে ছিলেন কুজনেৎসোভা। তখনই হঠাৎ ঘটালেন একটা অদ্ভুত কাণ্ড! পয়েন্ট ব্রেকে নিজের সিটে বসে চেয়ে নিলেন একটা কাঁচি। হতাশায় বিনুনি করা চুলে কাঁচি চালাতে লাগলেন। এর পর ঘ্যাঁচ ঘ্যাঁচ করে কেটে ফেললেন পনিটেলের অনেকটা অংশ। পরের গেমে যাওয়ার আগে নিজের চেয়ারে তা ছুড়ে মারলেন। কোর্টের পাশে কুজনেৎসোভার এই কীর্তিতে তখন হতবাক দর্শকেরা। তবে এর পরেও যেন ভাগ্য সাড়া দিচ্ছিল না। এক সময় তো গেমের মাঝেই সাইডলাইনের পাশে গিয়ে তোয়ালেতে মুখ ডুবিয়ে ঝরঝর করে কেঁদে ফেললেন। মুখ মুছে যখন গেম শুরু করলেন তখনও তাঁর গাল বেয়ে চোখের জল গড়িয়ে পড়ছে। এর পর বেশ অবিশ্বাস্য ভাবেই ম্যাচ রিটার্ন হল কুজনেৎসোভার। টানা তিনটে গেম জিতে এক সময় ম্যাচ পয়েন্টও বাঁচিয়ে ফেললেন তিনি। শেষমেশ নিজের কেরিয়ারে সবচেয়ে চমকপ্রদ জয় ছিনিয়ে নেন কুজনেৎসোভা।
তাঁর এই টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ মেলাতেও ছিল নাটকীয় মুহূর্ত। ২০০৯-এর পর নিজের প্রথম ডব্লিউটিএ টুর্নামেন্ট খেলছেন ৩১ বছরের কুজনেৎসোভা। মহিলা টেনিসের সেরা আট জনকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের এই টুর্নামেন্টে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে কোয়ালিফাই করেছেন। সাত জনের নাম আগে থেকে জানাই ছিল উদ্যোক্তাদের। তবে অষ্টম স্থানে কে নামবেন তা জানতে অপেক্ষা ছিল শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। শেষমেশ মস্কোর ক্রেমলিন কাপে ব্রিটেনের জোয়ানা কোন্তাকে হারিয়ে সিঙ্গাপুরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেন বিশ্বের ৫৭ নম্বর কুজনেৎসোভা।
ইনস্টাগ্রামে নিজের চুল কাটার ওই ভিডিও পোস্ট করেছেন কুজনেৎসোভা। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, “এক সময় তো মনে হচ্ছিল যেন কোর্টেই শুয়ে পড়ব। আর আমাকে কেউ উঠিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু, আমি খেলতেই থাকি।” কিন্তু, এমনটা কেন করলেন দু’বারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী? কুজনেৎসোভা বলেন, “ম্যাচের ওই সময় আমি নিজেকে জিজ্ঞাসা করলাম, বেশ! এ মুহূর্তে আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কী? ম্যাচ না পনিটেল, যেটা আমি পরে ফিরে পাব? চিন্তা করলাম, অবশ্যই ম্যাচ! আর যার জন্য এখনই ঝাঁপাতে হবে। ব্যস! এর পর আর বেশি কিছু চিন্তা করিনি।”
আরও পড়ুন
সাকিবের উইকেট ছুড়ে দেওয়াটা এখনও মানতে পারছেন না কোচ, ক্যাপ্টেন
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy