Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
কুপেকাত প্রোটিয়াসরা

অশ্বিনদের ঘূর্ণি-ঝড়ে মোহালিতে প্রাক দীপাবলীর রোশনাই

সকালের প্রথম এক ঘণ্টার ছবি আর তার পরের ঘণ্টার। দুটো ছবি সম্পুর্ণ দু’রকম। আর তাতেই ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম টেস্ট ক্রমশ থ্রিলারে পরিণত হওয়ার উপক্রম। মাত্র ৬০ রানের মধ্যে আধ ডজন উইকেট হারানোর পর দক্ষিণ আফ্রিকাকে এই টেস্ট জয়ের জন্য ২১৮-র টার্গেট দিল ভারত।

ভারতকে ম্যাচে ফেরালেন জাডেজারা। ছবি: রয়টার্স।

ভারতকে ম্যাচে ফেরালেন জাডেজারা। ছবি: রয়টার্স।

রাজীব ঘোষ
মোহালি শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৫ ১৩:৩২
Share: Save:

আড়াই দিনেই খেল খতম। মোহালির ২২ গজে প্রোটিয়া বধ। ঘরের মাঠে শ্রেষ্ঠদের হারিয়ে অধিনায়ক কোহলির নেতৃত্বে বিরাট জয়। শুক্রবার জাদেজা-অশ্বিনদের সিংহ বিক্রমে আইএস বৃন্দা স্টেডিয়ামে অকাল দীপাবলীর রোশনাই।

আচ্ছা শেষ কবে এতটা নাস্তা-নাবুদ হয়ে ছিলেন ডেভিলিয়ার্সরা? ভারতই বা শেষ কবে এতটা দাপটের সঙ্গে বিশ্বের অন্যতম সেরা দলকে হারিয়ে ছিল? এই জয় কতটা কৃতিত্ব অশ্বিনদের কতটা মোহালির বিতর্কিত পিচের সে হিসেব নিকেশ এখন তাকে তোলা থাক। স্কোর বোর্ড বলছে দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১০৮ রানে বান্ডিল করে দিয়ে ভারত প্রথম টেস্টটা ১০৯ রানে জিতে নিল।

মোহালির খামখেয়ালি পিচের মতিগতি দেখে বোঝাই যাচ্ছিল এই পিচে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫০ তাড়া করাটাই প্রায় অসম্ভব হবে। কিন্তু আমলাদের সেই কাজটাতো সোজা করে দিয়ে ছিলেন পূজারারাই। গত কাল বোলারদের সেট করে দেওয়া গোছানো চিত্রনাট্যে খেলতে নেমে পিচের বিষাক্ত ছোবলে আক্রান্ত হয়েছেন বিরাটরাও। হিসেব নিকেশ ঘেঁটে ফেলে, টপাটপ ড্রেসিং রুমে ফিরে আমলাদের জন্য মোটে ২১৮ রানের টার্গেট রাখতে পেরে ছিলেন ভারতের ব্যাটিং বীররা। প্রথমেই ভ্যান জিলের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে কিপার ভিলাসের হাতে জমা করে দিয়ে ফিরে এলেন ক্যাপ্টেন কোহলি।

তার পর পুজারা। ইমরান তাহিরের বল ফ্রন্ট ফুটে না খেলে ডিফেন্স করতে গেলেন। ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে স্লিপে আমলার হাতে।

ঋদ্ধিমান সাহার সঙ্গে অজিঙ্ক রাহানে যোগ দেওয়ার পর অনেকেই ভাবতে শুরু করেছিলেন, এ বার একটা বড় না হোক ভদ্রস্থ পার্টনারশিপ হতে চলেছে। কিন্তু মাত্র ন’বল খেলেই হারমারের গোত্তা খাওয়া ভিতরে ঢুকে আসা বল ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে থাকা পরিবর্ত বাভুমার দিকে পাঠিয়ে দিলেন। ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্যাচ নিলেন বাভুমা।

মাত্র চার ওভারের মধ্যে ছবিটা আমূল পাল্টে যাওয়ায় থতমত খেয়ে যাওয়া দুই ভারতীয় ব্যাটসম্যান রবীন্দ্র জাডেজা ও ঋদ্ধিমান তখন বেশ চাপে। চাপ বাড়ানোর জন্য ফিল্ডাররাও ঘিরে ধরলেন তাঁদের। হারমারকে মিড অনের উপর দিয়ে তুলে একটা ড্রাইভও হাঁকান ঋদ্ধি। কিন্তু তাতে চার রানই আসে। ক্রিজে পড়ে থেকে বিপক্ষ বোলারদের হতাশ করে তোলাই তখন ব্যাটসম্যানদের কাজ। কিন্তু এই উইকেটে রান বানানো তো দূরের কথা, পড়ে থাকাটাই বেশ কঠিন। রাহানের মতো টেকনিকে সেরা ব্যাটসম্যানই যেখানে থতমত খেয়ে উইকেট ছুড়ে দিয়ে চলে আসছেন, সেখানে বাকিরা কী করবেন?

হারমারের যে ওভারে জাডেজা তাঁকে বাউন্ডারির বাইরে পাঠান, সেই ওভারেই এলবিডব্লিউ-র ফাঁদে পড়ে যান। এর পর অশ্বিনের নামার কথা থাকলেও কোহলি আগে পাঠালেন অমিত মিশ্রকে। তিনিও পাঁচ বলের বেশি খেলতে পারলেন না। উল্টোদিকে ঋদ্ধি অবশ্য একটা দিক ধরে রেখেছিলেন। অশ্বিন, যিনি আগের দিন বলেছিলেন উইকেটটা ব্যাটিং করার পক্ষে বেশ সহজ হয়ে উঠেছে, সেই তিনি ন’মিনিট ক্রিজে থাকার পর তাহিরের বলে স্লিপে আমলার হাতে ক্যাচ দিয়ে বেরিয়ে যান।

১২৫-২-এ দিন শুরু করার পর লাঞ্চে ভারত ১৮৫-৮! মাত্র দু’ঘন্টার ধসে ভারত বিধ্বস্ত।

কিন্তু বাংলার উইকেটকিপার অদম্য। ভারতকে দুশোর দিকে নিয়ে গেলেন তিনি। হারমারকে একটা বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। তাহিরকেও ডিপ মিড উইকেট দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে বার করে দেন। কিন্তু এই তাহিরের বলই একবার ঋদ্ধির ব্যাট ছুঁয়ে, প্যাড হয়ে শর্ট লেগে ক্যাচ হয়েছিল।

অতএব, মন টন খারাপ করে যখন কী ভাবে হার বাঁচানো যায় ভেবে টিভির পর্দায় চোখ রাখতে বসা তখনই ফের ম্যাজিক শুরু করলেন রবীন্দ্র জাদেজা। এবং হ্যাঁ, মোহালির পিচও

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE