বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত দু’জনই। অথচ দু’জনেরই প্রাক-টুর্নামেন্ট প্রস্তুতিতে চোটের ছায়া ছিল। তাই কতটা ফিট হয়ে নামতে পারবেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে তা নিয়ে ভক্তকুল আশঙ্কায়। সে সব উড়িয়ে দু’জনেই জানিয়ে দিচ্ছেন মেলবোর্ন পার্কে নামতে তৈরি। তাঁরা— সেরেনা উইলিয়ামস ও মারিয়া শারাপোভা।
২০০৮ অস্ট্রেলিয়ান ওপেন চ্যাম্পিয়ন শারাপোভাকে নিয়ে অবশ্য সপ্তাহ দু’য়েক আগেই সমর্থকদের মধ্যে প্রবল আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। বাঁ-হাতে অস্বস্তির জন্য যখন তিনি ব্রিসবেন ওপেন থেকে সরে দাঁড়ান। এই টুর্নামেন্টেই গত বার খেতাব জিতেছিলেন মাশা। তার চেয়েও বড় কথা, গত বছরের মাঝামাঝি থেকে এই বাঁ হাতে চোটের সমস্যা তাঁকে ভোগাচ্ছিল।
তবে ভক্তদের আশঙ্কা দূর করে দিলেন এ দিন পঞ্চম বাছাই। তিনি বলছেন গত বার মেলবোর্ন পার্কে রানার্স হিসেবে শেষ করার রেকর্ডটা এ বার আরও উন্নত করাটাই এখন তাঁর টার্গেট। ‘‘যখন চেয়েছিলাম তার চেয়ে কিছুটা আগেই মেলবোর্নে চলে এসেছি। তাতে এ সপ্তাহে এখানে প্র্যাকটিস করার সুযোগ পেয়েছি। প্রচুর কোর্টে প্র্যাকটিস করে দারুণ লাগছে।’’ সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘সব সময়ই আমি প্র্যাকটিসকে ভীষণ গুরুত্ব দিয়েছি। তাই নিজের উপর একটা বিশ্বাস রয়েছে যে হয়তো ব্রিসবেনে (প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট) পাঁচটা ম্যাচ খেলতে পারিনি। কিন্তু যে ভাবে প্র্যাকটিস করেছি তাতে মেলবোর্নে আমি লড়াই করার মতো জায়গায় রয়েছি।’’
একই রকম আত্মবিশ্বাসী সেরেনাও। যিনি এ বার সাত নম্বর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেতাব জেতার টার্গেট নিয়ে নামবেন। তবে প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট হপম্যান কাপের মাঝামাঝি যিনি হাঁটুর চোটের জন্য সরে দাঁড়িয়েছিলেন। একশো শতাংশ ফিটনেস নিয়ে প্র্যাকটিস করতে পারছেন কি না জানতে চাইলে গত বারের চ্যাম্পিয়ন বলেন, ‘‘একশো কুড়ি-তিরিশ শতাংশ দিচ্ছি প্র্যাকটিসে। এ সপ্তাহে প্রচুর পরিশ্রম করেছি। এ দিন কিছুটা আরাম করতে চেয়েছিলাম। তবে আমার কাছে আরাম মানে দু’ঘণ্টার প্রবল শারীরিক কসরৎ। হাঁটুর অবস্থা এখন অনেক ভাল। কোনও সমস্যা এখন নেই।’’ নিজের প্রস্তুতি নিয়ে সেরেনা আরও বলেন, ‘‘চেয়েছিলাম প্রস্তুতি ম্যাচে নামতে, সেটা হয়নি। তবে এত বছর খেলার পর এ ব্যাপারটা (প্রস্তুতি ম্যাচ ছাড়াই টুর্নামেন্টে নামা) সামলাতে পারব বলেই মনে হয়।’’
তবে যতই নিজের প্রস্তুতি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হোন না কেন, প্রথম ম্যাচে নামার আগে কিছুটা সতর্ক মাশা। এ বার যিনি জাপানের নাও হিবিনোর বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন অভিযান শুরু করবেন। ‘‘গ্র্যান্ড স্ল্যামে প্রথম ম্যাচ সব সময়ই কঠিন। বিশেষ করে এমন এক জন প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে যাঁর বিরুদ্ধে এর আগে আমি কখনও খেলিনি। এমন পরিস্থিতিতে অনেক কিছু মাথায় রাখতে হয়। দ্রুত সমস্যার সমাধানের ব্যাপারটাও থাকে।’’
গত বার ফাইনালে মাশার ঘাতক, মার্কিন তারকা অবশ্য অন্য কথা বললেন, ‘‘আমার জন্য কঠিন ড্র-ই অপেক্ষা করে বেশির ভাগ সময়। তাই এটা কোনও ব্যাপার নয়। আমি এ সব ভাবি না। কার বিরুদ্ধে খেলতে হবে সেটা বড় কথা নয়। একটা সময়ে সবার বিরুদ্ধেই আপনাকে খেলতে হয়। এ ভাবেই এটা ভাবি।’’
মাশা আবার এ দিন অজানা প্রতিদ্বন্দ্বীকে সামাল দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন বুঝিয়ে দিলেও সাংবাদিকদের একটা প্রশ্ন হয়তো আশা করেননি। হয়তো ঘটনাটাও। সেটা কী? পেশাদার টেনিস প্লেয়ারদের নানা সমস্যা সামলে চলতে হয়। জেট ল্যাগ, প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন হোটেলে থাকা, পোশাক হারিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা তাই টেনিস প্লেয়ারদের জীবনে স্বাভাবিক ঘটনা। বিশ্বের অন্য বেশ ক’য়েকটি টুর্নামেন্টের মতো মেলবোর্নেও প্লেয়ারদের জন্য লন্ড্রি রয়েছে। যেখানে দিন দশেক আগেই শারাপোভা তাঁর ফেভারিট একটি একটি লং স্লিভ শার্ট হারিয়েছেন বলেছিলেন। তাই এ দিন সাংবাদিক বৈঠকের শেষের দিকে শারাপোভাকে হঠাৎ প্রশ্ন করা হয়, মেলবোর্নে ফের কোনও লন্ড্রি সমস্যায় পড়তে হয়েছে নাকি? মাশা কিছুটা থমকে হঠাৎ হেসে বলে ওঠেন, ‘‘আসলে কিছুক্ষণ আগেই একজোড়া অন্তর্বাস ফেরত দিয়ে এলাম। লেপার্ড প্রিন্টের। আমার নয়। আশা করি ওগুলো আসল মালিক ফেরত পাবেন।’’
আর এ বারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেতাবটা? সেটা কি গত বারের মালিকের হাতবদলে ফেরত পাবেন মাশা? সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy