Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বিরাটকে রাগাও সিরিজ জেতো, ভারত যুদ্ধে স্মিথ-মন্ত্র

ভারতে পা দিতে এখনও মাস দু’য়েকের দেরি। কিন্তু তার আগে নিজেদের অতীব চেনা ‘মাইন্ডগেম’ শুরু করে দিল অস্ট্রেলিয়া! বলা ভাল, শুরু করলেন স্বয়ং অস্ট্রেলিয়া ক্যাপ্টেন স্টিভ স্মিথ। এবং টার্গেটের নাম আন্দাজ করাও খুব সোজা।

বিরাট বনাম স্মিথ। দ্বন্দ্বের সেই ছবি।

বিরাট বনাম স্মিথ। দ্বন্দ্বের সেই ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:১৬
Share: Save:

ভারতে পা দিতে এখনও মাস দু’য়েকের দেরি। কিন্তু তার আগে নিজেদের অতীব চেনা ‘মাইন্ডগেম’ শুরু করে দিল অস্ট্রেলিয়া!

বলা ভাল, শুরু করলেন স্বয়ং অস্ট্রেলিয়া ক্যাপ্টেন স্টিভ স্মিথ। এবং টার্গেটের নাম আন্দাজ করাও খুব সোজা।

বিরাট কোহালি!

কোহালি যে মাঠে কতটা আবেগপ্রবণ, জানেন স্মিথ। অতীতের মতো অত উত্তেজিত হয়ে পড়েন না ঠিকই, কিন্তু আবেগের বহিঃপ্রকাশ মাঠে এখনও ভাল রকম ঘটে। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক চাইছেন, ঠিক ওখানটায় আঘাত দিতে। কোহালিকে রাগিয়ে দিতে। তাতে নাকি ভারতীয় টিমকে কাবু করা সম্ভব হলেও হতে পারে।

‘‘গত আঠারো মাসে অসাধারণ খেলেছে বিরাট। এমনিতেই ও বিশ্বমানের প্লেয়ার। তার উপর টিমের নেতৃত্বও দিচ্ছে দারুণ ভাবে,’’ এক সাক্ষাৎকারে বলে দিয়েছেন স্মিথ। সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘শরীরী ভাষাতেও অনেক উন্নতি ঘটিয়েছে বিরাট। মাঠে খুব আবেগপ্রবণ ক্রিকেটার ও। আগের চেয়ে এখন সেখানেও অনেক উন্নতি ঘটিয়েছে। কিন্তু মনে হয়, আমাদের টিমকে বিরাটকে ওই জায়গটাতেই ধরতে হবে। ওর আবেগের জায়গাটায়। বিরাটকে যদি একটু রাগিয়ে বা খুঁচিয়ে দেওয়া যায়, আর ও যদি তাতে আউট হয়, ভারতীয় টিমকে নড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।’’

অর্থাৎ, আসন্ন ভারত সফরে স্মিথদের স্ট্র্যাটেজি অতি সহজ—রাগিয়ে দাও বিরাটকে। আউট করো। এবং ভারতকে হারিয়ে দেশে ফেরো।

মুশকিল হল, ইতিহাস বলে কোহালিকে রাগিয়ে বিশেষ লাভ হয়নি। ভারতের শেষ অস্ট্রেলিয়া সফরে সেই চেষ্টা তো কম করেনি অস্ট্রেলিয়া। কোহালিকে ‘স্পয়েল্ট ব্র্যাট’ উপাধি দিয়েছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। মিচেল জনসন তো নাগাড়ে ‘উত্যক্ত’ করে গিয়েছিলেন কোহালিকে। ঘটনা হল, ও সবে লাভ তো হয়ইনি, উল্টে কোহালির পাল্টা জবাবের তেতো ওষুধ গিলতে হয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে! সেই সিরিজে চার-চারটে সেঞ্চুরি করেন ভারতের টেস্ট অধিনায়ক। আর উত্তর যে শুধু সেঞ্চুরির কষাঘাতে দিয়েছিলেন, তা নয়। তার বাইরেও দিয়েছিলেন। মিচেল জনসনকে বাউন্ডারি মেরে কোহালির ‘ফ্লাইং কিস’ দেওয়ার ছবিটা তো এখনও ভুলতে পারেনি ক্রিকেটপ্রেমীরা।

সেই কারণেই কি না কে জানে, স্মিথ এ বার ওই ‘কোহালিকে রাগিয়ে দেব’-র বাইরে বিশেষ কিছু বলতে চাননি। উল্টে নিজেদের ‘আন্ডারডগ’ হিসেবেই ধরছেন ফেব্রুয়ারিতে ভারতে চার টেস্টের সিরিজে। স্মিথ বলে দিয়েছেন, ‘‘কোনও সন্দেহ নেই সফরটা মারাত্মক কঠিন হবে। চার টেস্টের সফর। আমরাই ওখানে আন্ডারডগ। ভারতে সিরিজ জিততে পারলে সেটা বড় ব্যাপার হবে। প্রস্তুতি নিচ্ছি। আর আমি এটাও মনে করি যে, উপমহাদেশে আমরা আগে যে ক্রিকেট খেলেছি এ বার তার চেয়ে অনেক ভাল খেলতে পারব।’’

কিন্তু প্রস্তুতি আর তার রেজাল্টের মধ্যে তফাত থাকে। ইংল্যান্ড যখন এসেছিল, অনেকেই ভাবতে পারেনি এ রকম লজ্জাজনক ভাবে সিরিজ হেরে তাদের ফিরতে হবে। কোহালির পিছনে তারাও পড়ে গিয়েছিল, ঠিক যে ভাবে আসন্ন সফরে পড়তে চাইছে স্মিথের অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ড ০-৪ হেরে ফিরেছে। অস্ট্রেলিয়া— তাদের আবার ভারত সফরে এসে শেষ জয় ২০০৪ সালে। আজ থেকে বারো বছর আগে। শেষ সিরিজে তো ধোনির ভারতের কাছে ‘ব্রাউনওয়াশ’ হয়ে ফিরেছিল অস্ট্রেলিয়া। চার টেস্টের সিরিজ হেরে ফিরেছিল ৪-০। স্মিথ মানছেন, ভারতে ভারতকে হারানো অসম্ভব কঠিন একটা ব্যাপার হতে যাচ্ছে। বলছেনও যে, ‘‘ঘরের মাঠে এখন ওরা টানা খেলছে। প্রচুর জিতেওছে।’’ কিন্তু তার পরেও ধুরন্ধর অস্ট্রেলীয় কূটনৈতিক চালে বিশ্বাস রাখতে চান স্মিথ। চান, ধূর্ততার যুদ্ধটা আগে জিততে। ওটা হলে পরেরটাও নাকি হবে। কোহালিকে নড়িয়ে দিতে পারলে ভারতও নড়বে।

ভারত অধিনায়ক স্মিথের কথার উত্তরে কোথাও কিছু বলেননি। তিনি আপাতত ছুটিতে। কোহালির পাল্টা কুঠার এখন কতটা অস্ট্রেলীয় রক্ত ঝরায়, সেটাই শুধু দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Steve Smith Virat Kohli
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE