Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ বার না জিতলে আর খেলব না

ইস্টবেঙ্গল তেরো বছর আই লিগ পায়নি। তার মধ্যে দশ বছরই তিনি আছেন টিমে। আজ, রবিবার শিলিগুড়ির ধুন্ধুমার ম্যাচে সবচেয়ে সিনিয়র ফুটবলার। আই লিগে এ বার শেষ দেখতে চান তিনি। সেই মেহতাব হোসেন শনিবার একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজার-কে।

ভরসা: অনুশীলনে নামছেন মেহতাব এবং ওয়েডসন। নিজস্ব চিত্র

ভরসা: অনুশীলনে নামছেন মেহতাব এবং ওয়েডসন। নিজস্ব চিত্র

রতন চক্রবর্তী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:৩৬
Share: Save:

ইস্টবেঙ্গল তেরো বছর আই লিগ পায়নি। তার মধ্যে দশ বছরই তিনি আছেন টিমে। আজ, রবিবার শিলিগুড়ির ধুন্ধুমার ম্যাচে সবচেয়ে সিনিয়র ফুটবলার। ভাইচুং ভুটিয়ার পাস থেকে জীবনের স্মরণীয় গোলটা করেছেন ডার্বিতে। হোসে ব্যারেটোকে নড়তে দেননি বহুবার। বিদেশিদের রমরমার বাজারে আইএসএল থেকে আই লিগ এখনও মিডফিল্ড জেনারেল হিসাবে সব কোচের কাছেই অপরিহার্য তিনি। আই লিগে এ বার শেষ দেখতে চান তিনি। সেই মেহতাব হোসেন শনিবার একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজার-কে।

প্রশ্ন: আপনি তো ঘোষণাই করে দিয়েছেন, এ বার ইস্টবেঙ্গল আই লিগ না জিতলে আর লাল-হলুদ জার্সি পরবেন না। কেন এমন সিদ্ধান্ত?

মেহতাব: কারণ আমি মনে করছি এ বার লিগ খেতাব না পেলে আমার কপালে এই ট্রফিটা জেতা হবে না। দশ বছর খেলছি। পারলাম না তো। আমি হয়তো অপয়া। আমি না থাকলে যদি ইস্টবেঙ্গল খেতাব পায় তা হলে সবথেকে খুশি হব আমি। সে জন্যই এমন সিদ্ধান্ত। আমি বলছি, ‘হয় এ বার নয়তো নেভার’।

প্রশ্ন:সে জন্যই এ বারের ডার্বি আপনার কাছে স্পেশ্যাল?

মেহতাব: একদমই তাই। কারণ শিলিগুড়ির এই ডার্বি জিততে না পারলে ইস্টবেঙ্গল খেতাব পাবে না। সে জন্যই রবিবারের ম্যাচটা হবে মেহতাবের মরণ-বাঁচন ম্যাচ। হারলে বা ড্র করলে লিখে দিতে পারেন, লাল-হলুদে মেহতাবের দিন শেষ হয়ে গেল।

প্রশ্ন:ডার্বির আগের রাতটা তা হলে কি এ বার বিনিদ্র কাটবে?

মেহতাব: চোদ্দো বছর আগে যখন প্রথম ডার্বি খেলেছিলাম, তার আগের দিন ঘুমোতে পারিনি। প্রচন্ড উত্তেজিত ছিলাম। তার পর মনে হয় ৫০টার বেশি ডার্বি খেলেছি। কেন জানি না, এ বার তার চেয়েও বেশি উত্তেজনা অনুভব করছি। সে বারও ভেবেছিলাম পারব তো? এ বারও সে রকমই মনে হচ্ছে। আমার এ বারের ডার্বির স্লোগান— হয় মারো, নয় মারো।

প্রশ্ন:ফেড কাপ-সহ অসংখ্য ট্রফি পেয়েছেন। কিন্তু আই লিগটা পাননি। শুধু ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের জমানাতেও দু’দু’বার অল্পের জন্য ফস্কে গিয়েছে খেতাব। রহস্যটা কী?

মেহতাব: যে ট্রফিই পেয়ে থাকি না কেন, আই লিগ-ই এক নম্বর খেতাব। এক বার পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত লিগ পাইনি। টানা শীর্ষে থেকেও ওএনজিসি-র মতো টিমের কাছে হেরে নিশ্চিত খেতাব হাতছাড়া হয়েছে। আমাদের ক্লাবে রানার্সের কোনও দাম নেই। এ বারও দেখুন কী হচ্ছে। চেন্নাইেয়ের মতো দুর্বল টিমের কাছে হেরে চাপে পড়ে গেলাম ডার্বির আগে। ওটা জিতে থাকলেই অনেক নিশ্চিন্ত থাকতে পারতাম।

প্রশ্ন:সে তো গোলকিপারের ভুলে হল, তাই না?

মেহতাব: (করুণ হেসে) ওই পোজিশনটা আমাদের টিমের জন্য যেন আই লিগে অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গুরপ্রীত সিংহ অত বড় গোলকিপার হয়েও ডুবিয়েছিল। সন্দীপ নন্দী, অভিজিৎ মণ্ডলের মতো তারকা গোলকিপার এমন গোল খেয়েছিল যে আমরা ছিটকে গিয়েছিলাম। জয়ন্ত পাল ডুবিয়েছিল। রেহনেশ গত ডার্বিতেই ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিল। কিন্তু চেন্নাই ম্যাচে এত খারাপ গোল কী ভাবে খেল জানি না।

প্রশ্ন:গোলকিপার না হয় অভিশাপ। কিন্তু কোচও তো ডোবাচ্ছেন। তিনি এক টিমই খেলিয়ে যাচ্ছেন?

মেবতাব: কোচের সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছু বলব না। বড় ম্যাচের আগে বিতর্কে জড়ানোর ইচ্ছে নেই। তবে আমাদের টিমের সবথেকে বড় সমস্যা হচ্ছে ভাষা। প্লাজার সঙ্গে যদি ক্রিস পেইন খেলার সময় একে অন্যকে নির্দেশই না দিতে পারে তা হলে তো সমস্যা হবেই। মোহনবাগানে এটা নেই। অনেক দিন একসঙ্গে থাকায় নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়াটা বেশি। সনি-কাতসুমিরা একসঙ্গে মনে হয় তিন বছর খেলে ফেলল।

প্রশ্ন:তা হলে বলছেন, মোহনবাগান রবিবার অ্যাডভান্টেজ পাচ্ছে ড্রেসিংরুম রসায়ন ঠিকঠাক আছে বলে?

মেহতাব: সবটা না হলে কিছুটা তো বটেই। ডাফি যা খেলছে, ও সালগাওকরেও এত ভাল কখনও খেলেনি। দেবজিৎ আমাদের ক্লাবে কিছু করতে পারেনি। ওখানে গিয়ে দেখুন কী খেলছে। সব মিলিয়ে মোহনবাগান বেশ ভালই খেলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE