Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
আক্রমণাত্মক ঊষা

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লোঢা বদলাবে কী করে

লোঢা কমিশনের সর্বশেষ বিধান নিয়ে আক্রমণাত্মক মেজাজে নেমে পড়লেন বোর্ডের প্রাক্তন এবং সিএবি-র বর্তমান আইনজীবী ঊষানাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। লোঢার নতুন বিধানের দু’টো বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন তিনি। শ্রদ্ধাপূর্বক আবেদন করলেন, পুনর্বিবেচনার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:০৬
Share: Save:

লোঢা কমিশনের সর্বশেষ usha nath banerjee questions lodha commission's latest Provision নিয়ে আক্রমণাত্মক মেজাজে নেমে পড়লেন বোর্ডের প্রাক্তন এবং সিএবি-র বর্তমান আইনজীবী ঊষানাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। লোঢার নতুন বিধানের দু’টো বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন তিনি। শ্রদ্ধাপূর্বক আবেদন করলেন, পুনর্বিবেচনার।

প্রাক্তন বোর্ড আইনজীবী বুঝতে পারছেন না, কী করে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বদলে দিতে পারে লোঢা কমিশন। ‘‘আমি কাউকে অসম্মান করছি না। লোঢা কমিশনকেও আমি সম্মান করি। কিন্তু সম্মান জানিয়েও একটা প্রশ্ন করতে চাই। যেখানে সুপ্রিম কোর্ট গত ১৮ জুলাই একটা চূড়ান্ত রায় দিয়েছেন। যার বিপক্ষে রিভিউ পিটিশন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। সেই চূড়ান্ত রায়কে কী করে পাল্টে দেওয়া যায়?’’

ঊষা দু’টো বিষয়ের কথা তুলছেন। এক, বোর্ড এবং রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা মিলিয়ে ক্রিকেট কর্তাদের প্রশাসনিক জীবনকে আঠারো থেকে ন’বছরে নামিয়ে আনা। আর দুই, কুলিং অফ পিরিয়ডের শুরুর সময়। তাঁর বক্তব্য, কুলিং অফ পিরিয়ড শুরু হওয়া উচিত বোর্ড এবং রাজ্য সংস্থার গঠনতন্ত্র সংশোধনের পর। তার আগে নয়।

‘‘কুলিং অফ পিরিয়ড নিয়ে কিন্তু লোঢা কমিশন একটা টার্ম ব্যবহার করেছিলেন। যে, ওয়ান শ্যাল নট হোল্ড টু কন্সিকিউটিভ টার্ম ইন আ পোস্ট। অর্থাৎ, অতীত বা বর্তমান নয়, এখানে ভবিষ্যতের কথা বলা হচ্ছে। মানে একজন কর্তা নির্দিষ্ট কোনও পদে আসবে। সেখানে তিন বছর থাকবে। তার পর কুলিং অফে যাবে। কিন্তু লোঢার নয়া বিধানে সেটা হচ্ছে না,’’ বলে দিচ্ছেন ঊষা।

ঘটনা হল, লোঢার সর্বশেষ বিধান দেশজুড়ে চরম বিভ্রান্তি তৈরি করে দিয়েছে। ক্রিকেট প্রশাসন চালানোর মতো কাউকে আর পাওয়াই যাচ্ছে না। এমনকী বোর্ড প্রেসিডেন্ট হওয়ার মতো কেউ নেই প্রায়। একমাত্র সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু লোঢার নয়া বিধানে তিনি আগামী মার্চে বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদে এলেও পদে থাকতে পারবেন মোটে চার মাস। তার পর তাঁকে কুলিং অফে চলে যেতে হবে।

‘‘প্রথমেই বলে দিই, আমি কোনও নির্দিষ্ট নামের জন্য এই রিভিউয়ের দাবি করিনি। করেছি, গোটা দেশের ক্রিকেট প্রশাসনের স্বার্থে,’’ বলে দিচ্ছেন ঊষা। সঙ্গে আরও যোগ করেন, ‘‘কুলিং অফ পিরিয়ড নিয়ে আগে বললাম। এ বার ন’বছরের প্রশাসনিক জীবনের ব্যাপারটায় আসি। লোঢা কমিশনের রেকমেন্ডেশন অনুযায়ী যা চূড়ান্ত রূপ পায় ১৮ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট রায়ে। যে রায়ে বলা হয়েছিল, অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ মিলিয়ে কেউ ন’বছরের বেশি বোর্ড বা রাজ্য সংস্থায় থাকতে পারবে না। এটাকে আরও পরিষ্কার করে দেন লোঢা কমিশন। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬-র এক দফা প্রশ্নোত্তর পর্বে। যেখানে তাঁরা বলে দেন, কোনও ব্যক্তি রাজ্য সংস্থায় ন’বছর কাটিয়ে ফেলে তার পর বোর্ড প্রশাসনেও ন’বছর থাকতে পারবে।’’

ঊষার কথা ধরলে, গতকালের লোঢার সর্বশেষ বিধানের পর যা পাল্টে গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘গত কাল লোঢা কমিশন যা বলেছেন, তাতে নয় প্লাস নয় আঠারো নয়। কোনও ক্রিকেট প্রশাসকের সর্বোচ্চ মেয়াদ হবে ন’বছর। বোর্ডে হোক বা রাজ্যে। কিন্তু ন’বছর হয়ে গেলে আর কোথাওই থাকা যাবে না।’’ এখানেই থামছেন না সিএবি আইনজীবী। বরং বললেন, ‘‘ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে লোঢা কমিটি বলেন যে, সুপ্রিম কোর্ট ৩ জানুয়ারির রায়ে আগের রায়ের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। কিন্তু ৩ জানুয়ারির রায় দেখলে বোঝা যাবে যে তাতে পরিষ্কার বলা হয়েছে, ২ জানুয়ারির রায়ে যেখানে বোর্ডে ন’বছরের বেশি থাকা যাবে না বলা হয়েছিল, সেখানে ভুলবশত রাজ্য সংস্থার কথাটা উল্লেখ করা হয়নি। যা এ বার রাজ্য সংস্থাতেও যোগ করা হল।’’ এবং বলে-টলে ঊষার সর্বশেষ সংযোজন, ‘‘‘আমার প্রশ্ন হল, সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায় কি এ ভাবে পাল্টে দেওয়া যেতে পারে? লোঢা কমিশন, বা সুপ্রিম কোর্ট নিজেও কি সেটা পারেন? আমার মতে, ব্যাখ্যাটা সঠিক নয়। তাই শ্রদ্ধার সঙ্গে আবেদন করছি ভারতীয় ক্রিকেটের স্বার্থে এর পুনর্বিবেচনা করা হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Usha Nath Banerjee Lodha Commission
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE