Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

আবার গ্রেফতার শর্মিলা চানু

ফের গ্রেফতার হলেন ইরম শর্মিলা চানু। ইম্ফলের রাজপথে আন্দোলনস্থল থেকে আবারও তাঁর ঠিকানা জওহরলাল নেহরু হাসপাতালের সিকিওরিটি ওয়ার্ড।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২২ জানুয়ারি পূর্ব ইম্ফল জেলা আদালত, চানুর বিরুদ্ধে আনা আত্মহত্যার চেষ্টা ও কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের বাধা দেওয়ার মামলা দু’টি (৩০৯ ও ৩৫৩ ধারা) খারিজ করে দেয়। সেই রাতেই হাসপাতালের সিকিওরিটি ওয়ার্ড থেকে মুক্তি পেয়ে ইম্ফলের প্রাণকেন্দ্রে মহিলা পরিচালিত ইমা কাইথেল, নুপি কাইথেল আর লক্ষ্মী বাজারের ঠিক মাঝখানে, হাঁটুগেড়ে বসা হাতি আর তাতে চড়তে থাকা যোদ্ধা-মূর্তির (স্থানীয় নাম ‘সামু মাখং’) পাদদেশে চলে আসেন চানু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৪
Share: Save:

ফের গ্রেফতার হলেন ইরম শর্মিলা চানু। ইম্ফলের রাজপথে আন্দোলনস্থল থেকে আবারও তাঁর ঠিকানা জওহরলাল নেহরু হাসপাতালের সিকিওরিটি ওয়ার্ড।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২২ জানুয়ারি পূর্ব ইম্ফল জেলা আদালত, চানুর বিরুদ্ধে আনা আত্মহত্যার চেষ্টা ও কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের বাধা দেওয়ার মামলা দু’টি (৩০৯ ও ৩৫৩ ধারা) খারিজ করে দেয়। সেই রাতেই হাসপাতালের সিকিওরিটি ওয়ার্ড থেকে মুক্তি পেয়ে ইম্ফলের প্রাণকেন্দ্রে মহিলা পরিচালিত ইমা কাইথেল, নুপি কাইথেল আর লক্ষ্মী বাজারের ঠিক মাঝখানে, হাঁটুগেড়ে বসা হাতি আর তাতে চড়তে থাকা যোদ্ধা-মূর্তির (স্থানীয় নাম ‘সামু মাখং’) পাদদেশে চলে আসেন চানু। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, স্থানীয় মানুষ, বিশেষ করে মহিলাদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করা। রাতভর সেখানে ছিলেন। শীতের রাতে, অসুস্থ চানুর জন্য বালিশ, লেপ এবং তাঁর মাথার উপরে ছাউনির ব্যবস্থা করে মণিপুর পুলিশ। গত কাল পুলিশ তাঁকে বার বার অনুরোধ জানায়, তিনি যেন তুলনামূলক ভাবে নিরাপদ ও ঢাকা কোনও জায়গায় বসে আন্দোলন চালান। কিন্তু চানু জানান, ‘সামু মাখং’কে কেন্দ্র করেই চলবে তাঁর আন্দোলন। দিনভর দফায়-দফায় সমর্থকদের সঙ্গে বৈঠক করে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঠিক করে ফেলেন তিনি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যা সাতটায় চানুর রক্তচাপ কমে ১০০/৬০ হয়ে যায়। হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার পরে, নাক থেকে তরল খাদ্যের নল খুলে ফেলেন তিনি। ফলে, ২২ জানুয়ারি সন্ধ্যা থেকে তাঁর শরীরে কিছুই ঢোকেনি। সেই সঙ্গে গাড়ির শব্দ, ধোঁয়া চানুর শরীরকে দুর্বল করে দিচ্ছিল। যে হেতু তিনি বাজারের পাশে আন্দোলন করছিলেন, তাই রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছিল। শর্মিলার ভাই ইরম সিংগজিৎ ফোনে বলেন, “রাতে চানুর শরীর আরও খারাপ হয়ে পড়ে। পুলিশ রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ চানুকে ফের জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমাদের বলা হয়, শারীরিক কারণে চানুকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। এ দিন সকালে পুলিশ জানিয়ে দেয় যে ফের ৩০৯ ধারায় চানুকে গ্রেফতার করা হল।”

আদালত বৃহস্পতিবার রায়দানের সময় পুলিশকে ভর্ৎসনা করে বলে, চানুর বিরুদ্ধে আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগ আদালতে আগে দু’বার নাকচ করার পরেও কেন পুলিশ ফের তাঁকে একটি মামলায় গ্রেফতার করছে? পুলিশ ও প্রশাসনের বক্তব্য, চানুকে বাঁচিয়ে রাখতে গেলে, হাসপাতালে রাখা ছাড়া উপায় নেই। যে হেতু চানু নিজে থেকে হাসপাতালে যাবেন না, তাই, ৩০৯ ধারা প্রয়োগ করে চানুকে হাসপাতালে ‘বন্দি’ করে রাখা ছাড়া উপায় নেই। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, শর্মিলার গণতান্ত্রিক আন্দোলন কোনও ভাবেই আত্মহত্যার চেষ্টা নয়। মণিপুর পুলিশ ভারতীয় বিচারব্যবস্থাকেই প্রহসনে পরিণত করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sharmila chanu guwahati
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE