নরেন্দ্র মোদীর দূতের সঙ্গে কট্টরবাদী হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানির বৈঠকের দাবি নতুন মোড় নিল। দু’দিন পরেও গিলানির পক্ষ থেকে সেই দূতের নাম প্রকাশ্যে আনা হল না। আর মোদীর দূত বলে এনডিএ-শরিক লোকজনশক্তির যে দুই নেতার নাম উঠে এসেছে, তাঁরাও দাবি করছেন, বৈঠক হয়েছে। তবে মোদীর দূত হয়ে যাননি তাঁরা। মোদীর কোনও বার্তা তাঁরা পৌঁছে দেননি।
গিলানি দাবি করেছিলেন, গত ২২ মার্চ মোদীর দূত হিসাবে দুই কাশ্মীরি পণ্ডিত তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। কাশ্মীর সমস্যার সমাধানের জন্য নরম মনোভাব নেওয়ার বার্তাও তাঁর কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় মোদীর পক্ষ থেকে। কিন্তু আরএসএসের আদর্শে বিশ্বাসী মোদী কোনও বাস্তবসম্মত নীতি নিতে পারবেন না বলেই সেই প্রস্তাব তিনি খারিজ করে দিয়েছেন বলে জানান গিলানি। এই দাবির পরেই বিজেপি এর সত্যতা অস্বীকার করে দূতের নাম প্রকাশের পাল্টা দাবি জানায়। এরই মধ্যে গোয়েন্দা সূত্র মারফত সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, গিলানির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রামবিলাস পাসোয়ানের দলের যুব নেতা সঞ্জয় সারফ ও আর এক নেতা এম এল মাট্টু। কিন্তু সঞ্জয় দাবি করেন, তিনি এক মাস আগেই দেখা করেছেন তাঁর সঙ্গে। সম্প্রতি কোনও বৈঠক হয়নি। এনডিএ-শরিক রামবিলাসও দাবি করেছেন, গিলানির সঙ্গে তাঁর দলের নেতা দেখা করতেই পারেন। তার সঙ্গে মোদীর কোনও সম্পর্ক নেই। বিজেপির কিছু নেতা অবশ্য ঘরোয়া স্তরে দাবি করছেন, মোদী যদি ক্ষমতায় আসে তা হলে হুরিয়তদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। আপাতত ভোটের মধ্যে সেটা এনডিএ-র শরিক দল লোকজনশক্তি পার্টির মাধ্যমেই হোক না কেন। অতীতেও বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর অটলবিহারী বাজপেয়ীকে এই কাজ করতে হয়েছিল। তৎকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ব্রজেশ মিশ্র এই আলোচনার কাজ করতেন। প্রথম দিকে লালকৃষ্ণ আডবাণীর সঙ্গে এ নিয়ে অবশ্য বাজপেয়ীর মতপার্থক্য ছিল। আপত্তি ছিল আরএসএসেরও। পরে হুরিয়তকে ভাঙার কৌশল নেওয়া হয়। শেষের দিকে কট্টরবাদী নেতা গিলানি নয়, হুরিয়তের নরমপন্থী গোষ্ঠী মিরওয়াইজ উমের ফারুকের সঙ্গেই এই আলোচনা চালানো হয়। যে কারণে গিলানির দাবির পর মিরওয়াইজ পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করে কট্টরবাদী নেতাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান। বলেন, কাশ্মীরের স্বার্থ-বিরোধী কাজ করছেন গিলানি।
গত শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে নির্বাচন বয়কট ও ভোটের দিন জনতা কার্ফুর ডাক দিয়েছেন গিলানি। পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছে এ নিয়ে। এ-হেন গিলানির কাছে দূত পাঠানোর কথা অস্বীকার করে বিজেপির এক নেতা বলেন, “ক্ষমতায় এলে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের জন্য সকলের সঙ্গেই কথা বলতে হতে পারে। কিন্তু তা বলে ভোটের মধ্যে নয়। সে ক্ষেত্রে গিলানির থেকে মিরওয়াইজের সঙ্গেই আগে কথা হবে। কিন্তু ভোট বয়কটের ডাক দেওয়া কট্টরবাদী নেতাদের কাছে মোদী কোনও দূত পাঠাবেন এমনটি মনে করার কোনও কারণ নেই।”
বিজেপির ওই নেতার আরও দাবি, “জম্মু-কাশ্মীরের মধ্যে একমাত্র জম্মুতেই বিজেপির কিছুটা প্রভাব রয়েছে। সেখানে ভোট হয়ে গিয়েছে। মোদী জম্মু থেকেই নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। ফলে ভোটের মধ্যে গিলানির এই দাবিতে বিজেপিরও কোনও রাজনৈতিক লাভ নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy