অরুণ জেটলি। —ফাইল চিত্র।
নবান্নর পাশে নিতিনভাই। অরুণ জেটলির বিরুদ্ধে একজোট পশ্চিমবঙ্গ ও গুজরাতের অর্থমন্ত্রী— অমিত মিত্র ও নিতিনভাই পটেল।
রাজনৈতিক ভাবে বিপরীত মেরুতে থাকা তৃণমূল ও বিজেপির নেতাদের এক বিন্দুকে এনেছে রাজ্যের আর্থিক সমস্যা। দু’জনেই এক সুরে মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব।
মাসের পয়লা তারিখের বদলে এখন ১৫ তারিখে রাজ্যগুলিকে করের ভাগ মেটাচ্ছে কেন্দ্র। কারণ, জিএসটি চালুর পর কেন্দ্রের কোষাগারে রাজস্ব ঢুকতে ঢুকতে ২০ তারিখ পেরিয়ে যাচ্ছে। এতেই সমস্যায় পড়েছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা। মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত সংসার চালাতে নাভিশ্বাস উঠছে। মাসের শুরুতেই ধার করতে হচ্ছে।
গত সেপ্টেম্বরেই জেটলিকে কড়া চিঠি লিখেছিলেন অমিত মিত্র। প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন আলোচনা ছাড়াই কেন্দ্র এই একতরফা সিদ্ধান্ত নিল? এ বার একই প্রশ্ন গুজরাতের নিতিনভাই পটেলের। যিনি শুধু অর্থমন্ত্রী নন। গুজরাতের উপ-মুখ্যমন্ত্রীও।
বৃহস্পতিবার বাজেটের প্রস্তুতি নিয়ে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন জেটলি। সেখানেই নিতিন দাবি তোলেন, রাজ্যকে পাওনা মেটানোর তারিখ মাসের ১৫ তারিখ থেকে এগিয়ে ফের ১ তারিখ করা হোক। না হলে মাসের শুরুতে ধার করতে গিয়ে বাড়ছে সুদের বোঝা। রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া কেন এমন সিদ্ধান্ত, ফের সেই প্রশ্নও তোলেন নিতিনভাই।
কেন্দ্রে বিজেপি সরকার। অর্থমন্ত্রীর পদে বিজেপিরই নেতা জেটলি। অর্থসচিবের পদেও গুজরাতেরই হসমুখ অধিয়া। নরেন্দ্র মোদীর একান্ত আস্থাভাজন। মোদী মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে গুজরাতে গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে গুজরাতেরই উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী তোপ দাগছেন— দিল্লির বিজ্ঞানভবনে এমন বিরল দৃশ্য দেখে সব রাজ্যের অর্থমন্ত্রীই বৃহস্পতিবার মুচকি হেসেছেন। সবটাই নাটক কি না— সেই কৌতূহলও তৈরি হয়েছে।
অমিত মিত্র ওই বৈঠকে ছিলেন না। কিন্তু খবর শুনে নবান্নয় বসে তাঁর মুখেও হাসি ফুটতে বাধ্য। একাধিক বার তিনি দাবি করেছেন, জিএসটি-র মতো বিষয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগগুলিতে অনেক বিজেপির অর্থমন্ত্রীর সমর্থন রয়েছে। খোদ গুজরাতের অর্থমন্ত্রী তা প্রমাণ করলেন। সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, নিতিনভাইয়ের কথা জেটলির পক্ষে অগ্রাহ্য করা সম্ভব নয়। বিজেপির অন্দরমহলে তাঁর দাপট যথেষ্ট। মোদীর পরে মুখ্যমন্ত্রী পদেরও দাবিদার ছিলেন তিনি। গুজরাতে নতুন সরকার তৈরির পরে অর্থ দফতর না পেয়ে এমন বেঁকে বসেছিলেন যে, মোদী-অমিত শাহের হস্তক্ষেপে তা ফিরিয়ে দিতে হয়।
কিন্তু অমিত-নিতিনদের দাবি মেনে নেওয়া কি কেন্দ্রের পক্ষে সম্ভব?
বৈঠকে জেটলি ওই দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বটে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রক সূত্রের যুক্তি, এখনই এই দাবি মানা মুশকিল। জিএসটি-তে রাজস্ব মিলছে মাসের ২০ তারিখে। তা ছাড়া জিএসটি থেকে আয়ও আশানুরূপ নয়। তবু বাজেটের অনুমান অনুযায়ীই রাজ্যগুলিকে করের ভাগ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে বাস্তবে কেন্দ্রকেই অতিরিক্ত বোঝা বইতে হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy