সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জোট বাঁধার বিষয়টিই যে এ বারে ‘হার্ট অব এশিয়া’ সম্মেলনের মঞ্চ দখল করে নেবে সেটা প্রত্যাশিতই ছিল। আজ তাতে বাড়তি মাত্রা যোগ করে পাকিস্তানের মদতে সমৃদ্ধ সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির নামও চিহ্নিত করা হল অমৃতসর-ঘোষণাপত্রে। লস্কর ই তইবা, হাক্কানি নেটওয়ার্ক, জইশ ই মহম্মদের মতো সংগঠনের নাম করে বলা হয়েছে, অবিলম্বে এই সমস্ত জঙ্গি সংগঠনকে নির্মূল করতে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ঐকমত্য তৈরি করতে হবে। বন্ধ করতে হবে জঙ্গিদের আর্থিক জোগান-সহ এবং অন্যান্য সহায়তাও।
উরি হামলার পর বারবার চেষ্টা করা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক স্তরে সন্ত্রাস প্রশ্নে সে ভাবে বিচ্ছিন্ন করা যায়নি ইসলামাবাদকে। কিন্তু এই প্রথম বার একটি বড় মঞ্চে সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে একযোগে খড়্গহস্ত হওয়া সম্ভব হল। বিষয়টি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এই সম্মেলনের অন্যতম শরিক দেশ খোদ পাকিস্তান। ফলে পাক বিদেশনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা সরতাজ আজিজের সামনে, কাবুলকে পাশে রেখে সন্ত্রাস প্রশ্নে যে চাপ তৈরি করার কৌশল নিয়েছিল সাউথ ব্লক, তা শেষ পর্যন্ত সফল হল বলেই দাবি করছে বিদেশ মন্ত্রক।
কী রয়েছে ঘোষণাপত্রে?
এক কথায়, ছত্রে ছত্রে সন্ত্রাসবাদ বিরোধিতা। বলা হয়েছে, ‘গোটা অঞ্চলে এবং বিশেষ করে আফগানিস্তানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সর্বদাই আতঙ্কিত। তালিবান এবং লস্কর, জইশ-ই-মহম্মদ, হাক্কানি নেটওয়ার্ক-এর মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি ক্রমাগত হিংসা চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থন জোগানোর মত ঘটনা যে ঘটতেই থাকে, সে ব্যাপারটিকে মাথায় রেখে দাবি করা হচ্ছে সমস্ত রকম সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করা হোক।’ এর পর বলা হয়েছে, ‘আমরা চাই যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদ নিশ্চিহ্ন করতে এবং সন্ত্রাস পরিকাঠামো ও জঙ্গিদের স্বর্গোদ্যান ধ্বংস করতে, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সংঘবদ্ধ প্রয়াস করা হোক।’ ঘোষণাপত্রের গোড়াতেই বলা হয়েছে, ‘অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলানো, অন্য দেশের সার্বভৌমত্ব এবং অন্য দেশের ভূখণ্ড দখলের জন্য অস্ত্র ব্যবহার না-করার মতো বিষয়গুলিতে আমাদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে।’
আজ সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। আফগানিস্তানের উপ-বিদেশমন্ত্রীকে পাশে বসিয়ে জেটলিও সন্ত্রাস প্রশ্নে আক্রমণাত্মক বিবৃতি দিয়েছেন। কোনও রাখঢাক না করেই জেটলি বলেন, ‘‘এই প্রথমবার হার্ট অব এশিয়া-র ঘোষণাপত্রে আল কায়দা, লস্কর, জইশ-এর মত সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের নাম করা হল।’’
তাঁর কথায়, ‘‘এই ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে সন্ত্রাসবাদ এই মুহূর্তে শান্তি এবং সুস্থিতির প্রশ্নে সব চেয়ে বড় বিপদ। জঙ্গিদের নিরাপদ স্বর্গ্যোদান, পরিকাঠামো এবং পুঁজির জোগানকে অবিলম্বে বন্ধ করার প্রশ্নে আমরা ঐকমত্য হয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy