রূপ কানোয়ার। ১৯৮৭ সালে রাজস্থানে স্বামীর সঙ্গে ‘সহমরণে’ যান আঠারো বছরের রূপ।
স্বামীর চিতায় ঝাঁপ দিয়ে ‘সতী’ হয়েছেন এক মহিলা। এই দাবি সহরসা-র কাহরা ব্লকের পরমিনিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের। তবে দয়াদেবী (৬৫) নামে ওই মহিলার ছেলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, স্বামীর মৃত্যুশোক সহ্য করতে না পেরে তাঁর মা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাই দু’জনকে একই চিতায় সৎকার করা হয়। জেলার এসপি পঙ্কজ সিংহ জানিয়েছেন, তিনি নিজে ওই গ্রামে গিয়ে সকলের সঙ্গে কথা বলেছেন। তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনও কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, অনেক দিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন চরিত্র যাদব (৭০)। গত কাল তাঁর মৃত্যু হয়। পরিজনরা গ্রামের একটি শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য করতে যান। তখন নিজের বাড়িতেই ছিলেন দয়াদেবী। সঙ্গে ছিলেন তাঁর পুত্রবধূ। শ্মশান থেকে ফিরে আসার পরে মৃতের ছেলে রমেশ মণ্ডল ও অন্য পরিজনরা স্নান করতে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফেরার পর মায়ের খোঁজ করেন রমেশবাবু। কিন্তু দয়াদেবীকে পাওয়া যায়নি। খোঁজ করার সময় কয়েক জন গ্রামবাসী জানান, দয়াদেবীকে গ্রামের শ্মশানের দিকে যেতে দেখা গিয়েছে। কয়েক জন বাসিন্দা দাবি করেছেন, দ্রুত শ্মশানে পৌঁছন রমেশবাবুরা। কিন্তু তাঁদের চোখের সামনেই স্বামীর চিতায় ঝাঁপ দেন ওই মহিলা। কেউ তাঁকে আটকানোর সুযোগ পাননি। যদিও এ কথা মানতে চাননি রমেশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, সহরসা-তে পরম্পরা অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে চিতা সাজানো হয়। কাঠ, চন্দনকাঠ, ঘুঁটে দিয়ে তৈরি ওই চিতার উচ্চতা হয় চার ফুটের কাছাকাছি। সেগুলো জ্বলেও অনেক ক্ষণ ধরে। প্রাথমিক ভাবে এসপি-র বক্তব্য, স্বামীকে হারিয়েই এ কাজ করেছেন দয়াদেবী। আধঘণ্টার মধ্যেই পুরো ঘটনাটি ঘটে। ওই মহিলা যখন শ্মশানে পৌঁছন তখনও চিতাটি জ্বলছিল। পুলিশ জানিয়েছে, মহিলার পরিজন এবং গ্রামবাসীদের বক্তব্য ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়েছে।
১৯৮৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রাজস্থানের শিকার জেলার দেওরালা গ্রামে স্বামীর সঙ্গে ‘সহমরণে’ যান রূপ কানোয়ার নামে বছর আঠারোর এক তরুণী। ওই সময় শ্মশানে হাজির ছিলেন কয়েক হাজার স্থানীয় মানুষ। রূপকে ‘সতীমাতা’ বলে চিহ্নিত করে রাতারাতি সেখানে মন্দিরও তৈরি হয়ে যায়। ঘটনার কথা ছড়াতেই দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিকে ৪৫ জনের বিরুদ্ধে রূপকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে মামলা করে পুলিশ। পরে প্রমাণের অভাবে সকলেই বেকসুর খালাস পেয়ে যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy