শেষ বারের মতো রওনা দিল মিটারগেজ ট্রেন। ছবি: সুদীপ সিংহ
ব্রডগেজ লাইনের কাজের জন্য ছ’মাসের জন্য রেল চলাচল বন্ধ হল দক্ষিণ অসমে। ১ অক্টোবর থেকে লামডিং-শিলচর রুটে ওই কাজ শুরু হবে। সে জন্য আগামী কালই ১১৫ বছরের পুরনো ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ করছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। আজ সবুজ পতাকা দেখিয়ে শেষ বারের মতো মিটারগেজ ট্রেনগুলিকে বিভিন্ন স্টেশন থেকে রওনা দেওয়ার সঙ্কেত দেওয়া হয়। প্ল্যাটফর্মে বের হয়ে ট্রেনগুলিকে বিদায় জানান স্টেশনমাস্টার, রেলকর্মীরা।
গেজ পরিবর্তনের প্রকল্পে প্রথম দফায় লামডিং, বদরপুর হয়ে শিলচর পর্যন্ত ব্রডগেজ লাইন বসানো হবে। সে জন্য ট্রেন চলাচল বাতিল করা হয়েছে মিজোরামের ভৈরবী, মণিপুরের জিরিবাম, করিমগঞ্জের মহীশাসন এবং দুল্লভছড়া রুটেও। তবে করিমগঞ্জ-আগরতলা রুটে এক জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল।
মিটারগেজ লাইন, ট্রেনগুলিকে বিদায় জানাতে দু’দিন ধরে দক্ষিণ অসমে নানা অনুষ্ঠান চলছে। এ দিন শিলচর থেকে ‘বরাক ভ্যালি এক্সপ্রেস’ শেষ বারের মতো লামডিং রওনা দেওয়ার আগে তেমনই অনুষ্ঠান করা হয়। বদরপুরেও ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে দাঁড়িয়ে গান করেন স্থানীয় শিল্পীরা। তাঁদের বক্তব্য, এই বিদায় বিষাদের নয়। বরং ব্রডগেজের মতো উন্নত পরিকাঠামো তৈরির আশায় সকলেই খুশি। উদ্বেগও অবশ্য রয়েছে। কারণ, ১০ বছরে লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ লাইন তৈরির কথা থাকলেও, ১৮ বছরেও কাজ শেষ হয়নি। এলাকার বাসিন্দারা চাইছেন, প্রতিশ্রুতি মতো ছ’মাসেই লাইন বসানোর কাজ শেষ করুক রেল। সময়ে কাজ শেষের দাবিতে শিলচরের স্টেশনমাস্টারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তা দেওয়া হবে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজারের কাছে।
শিলচরে মিটারগেজের ঐতিহাসিক অধ্যায় এ বার শেষ হল। দেশভাগের আগে ওই লাইন দিয়েই জুড়েছিল শ্রীহট্ট, ঢাকা, চট্টগ্রাম, পশ্চিমবঙ্গ। স্বাধীনতার পর পাহাড়ে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল মিটারগেজ লাইন। ১৯৬১ সালের ভাষা সংগ্রামের সঙ্গেও জড়িয়ে ওই রেললাইন। শিলচর স্টেশনেই রেল লাইনে সত্যাগ্রহ চলাকালীন গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। তাতে মৃত্যু হয় ১১ জন তরুণ-তরুণীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy