গত চার মাসে তিন বার। ফের সাড়ে তিন বছরের একটি মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল বেঙ্গালুরুর স্কুলে। গত কালের সেই ঘটনার কথা চাউর হতেই বুধবার সকাল ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকেরা। বেঙ্গালুরুর ওই স্কুল চত্বরে ঘটনার প্রতিবাদে জমায়েত করেন তাঁরা। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষের কেউই তাঁদের সঙ্গে দেখা করেননি।
শিশুটির উপরে ওই নির্যাতনের কথা পুলিশকে জানিয়েছেন তার বাবা-মা। সেই অভিযোগ অনুযায়ী, মেয়েটিকে স্কুল থেকে তার মা যখন আনতে যান, তখনই খুব কান্নাকাটি করছিল সে। তার আচরণ অস্বাভাবিক ঠেকায় তখনই সন্দেহ হয়েছিল মায়ের। এর পরে তিনি দেখেন মেয়ের গায়ে জ্বর। মা যখন জিজ্ঞেস করেন, মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলে কেউ তাকে মেরেছে। লোকটিকে সে চেনে না। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরীক্ষার পরে চিকিৎসকরা জানান, মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
তিন মাস আগেই শহরের স্কুলে ছ’বছরের একটি মেয়েকে গণধর্ষণের প্রতিবাদে পথে নেমেছিল বেঙ্গালুরু। সেই ঘটনায় ওই স্কুলের দু’জন জিম প্রশিক্ষক গ্রেফতার হন। তার পরে গত অগস্টে স্কুল চত্বরে আট বছরের একটি মেয়েকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে স্কুলেরই এক প্রবীণ শিক্ষকের বিরুদ্ধে। স্কুলে শিশুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি আরও জোরালো হয়। কিন্তু তার পরেও যে পরিস্থিতির কোনও বদল হয়নি, এ দিনের ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
এ বার ঘটনাস্থল জালাহাল্লি এলাকার অর্কিড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। আজও এই ঘটনা নিয়ে উত্তেজনার পারদ চড়ছে বুঝে বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার এম এন রেড্ডি বলেছেন, “এক জন মহিলা এসিপি-র নেতৃত্বে বিশেষ দলকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। স্কুলকর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসিটিভি ফুটেজ। মেডিক্যাল রিপোর্টে বলা হয়েছে, মেয়েটির শরীরে যে ধরনের আঘাত এবং ক্ষত রয়েছে, তাতে স্পষ্ট যে মেয়েটির উপরে নিগ্রহ চালানো হয়েছে।” কিন্তু পুলিশ নিশ্চিত নয় যে ঘটনাটি স্কুলের মধ্যেই ঘটেছিল, না স্কুল চত্বরের বাইরে। অভিভাবকদের দাবিমতো স্কুলের প্রধানকেও ডেকে পাঠানো হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে। কারণ স্কুলটি আন্তঃরাজ্য প্রতিষ্ঠান। এর বেশি তথ্য দিতে চাননি রেড্ডি।
কিন্তু তাতে অভিভাবকদের শান্ত করা যায়নি। সাড়ে তিন বছরের মেয়েটির পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা। এক জন বললেন, “আমরা প্রচণ্ড ভয় পাচ্ছি। আমার দুই মেয়ে এখানে পড়ে। ওরা এই স্কুলটা খুব পছন্দ করে। কিন্তু এর পর কী হবে, বুঝতে পারছি না।” আর এক জনের দাবি, “যা ঘটেছে, তা যদি সত্যি হয়, মেয়েটির পাশে আছি। ওর বিচারের জন্য লড়াই করব।”
জাতীয় মহিলা কমিশনও বিষয়টিতে নজর রাখছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy