সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হবে সোমবার থেকে। তার আগে লোকসভায় বিরোধী দলনেতার পদ দাবি করে স্পিকার সুমিত্রা মহাজনের কাছে স্মারকলিপি পেশ করবে কংগ্রেস। এ ব্যাপারে তাঁদের দাবি মানা না হলে কংগ্রেস যে আদালতের দ্বারস্থ পর্যন্ত হবে সেই হুমকি দলীয় নেতৃত্ব আগেই দিয়েছেন।
কিন্তু চরম পদক্ষেপ করার আগে এ বিষয়ে যুক্তি সাজিয়ে কাল আনুষ্ঠানিক ভাবে স্পিকারের সামনে দাবি রাখতে চাইছেন দলীয় নেতৃত্ব।
লোকসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই বিরোধী দলনেতার পদটি নিয়ে জলঘোলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিজেপি নেতৃত্ব গোড়া থেকেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রাক্তন স্পিকার মাভলঙ্করের একটি সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরতে চাইছেন, যেখানে তিনি মত প্রকাশ করেছিলেন যে প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পেতে হলে কোনও রাজনৈতিক দলকে লোকসভার মোট আসন সংখ্যার অন্তত দশ শতাংশ আসনে জিততে হবে।
যদি বিজেপি দলীয় তরফে এ কথা এখনও বলেনি। বরং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু আজ বলেন, “এ ব্যাপারে স্পিকার সিদ্ধান্ত নেবেন। বিষয়টি আমার এক্তিয়ারভুক্ত নয়।”
কিন্তু স্মারকলিপিতে কংগ্রেস যে যুক্তি সাজাতে চলেছে, তা হল, ৭৭ সালে সাংসদদের বেতন আইনে বলা হয়েছে, সভায় বিরোধী দলগুলির মধ্যে যার সদস্য সংখ্যা সব থেকে বেশি হবে, তারাই প্রধান বিরোধী দল হিসাবে গণ্য হবে। সেই দলের থেকেই একজন বিরোধী দলনেতা হবেন। স্পিকারের সিদ্ধান্ত কখনও আইনের থেকে বড় হতে পারে না।
কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, ৭৭ সালে ওই আইন পাশের পরেও ৮০ সাল থেকে ৮৯ সাল পর্যন্ত লোকসভায় কোনও বিরোধী দলনেতা ছিল না। মাভলঙ্করের সূত্র মেনে সেই পরিস্থিতি হয়েছিল, তা নয়। আসলে তখন কোনও বিরোধী দল লোকসভায় প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা দাবি করে স্পিকারের কাছে যায়নি।
কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, ৭৭ সালে সাংসদদের বেতন আইন পাশের পর তার ভিত্তিতেই স্থির হয়, কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনার, মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের মতো সাংবিধানিক পদে নিয়োগের জন্য গঠিত কমিটিতে লোকসভার প্রধান বিরোধী দলনেতা থাকবেন। তখন এক বারও কোথাও বলা হয়নি যে লোকসভার বিরোধী দলনেতা না থাকলে কী হবে? কারণ, লোকসভায় বিরোধী দলনেতা থাকবে না, এমনটা সংসদীয় গণতন্ত্রের মূল সুরের পরিপন্থী বলেই মনে করা হয়েছিল।
যদিও এত কিছু যুক্তি সাজানোর পরেও কংগ্রেস নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন, সম্ভবত স্পিকার বিরোধী দলনেতার পদটি কংগ্রেসকে ছেড়ে দেবে না। দলীয় সূত্র বলছে, কংগ্রেসও মনে মনে সেটাই চাইছে। কারণ, এই নেতাদের মতে স্পিকারের সিদ্ধান্ত মানে পরোক্ষে তা শাসক দলেরই সিদ্ধান্ত। বিজেপি সংকীর্ণ রাজনীতি করছে এবং সরকার ফাসিবাদীর মতো আচরণ করছে বলে অভিযোগ এনে তখন সংসদে হট্টগোল করার পরিকল্পনাও রয়েছে কংগ্রেসের। তা ছাড়া, এ ব্যাপারে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করতেও সচেষ্ট হবে কংগ্রেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy