Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বাংলাদেশ-নীতি নিয়ে ফাঁপরে অসম বিজেপি

ত্রিশঙ্কু অবস্থা অসম বিজেপির। লোকসভা ভোটের আগে ইউপিএ সরকারের যে সব সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বিজেপি নেতারা এ রাজ্যে ভোট চেয়েছিলেন, এখন ক্ষমতায় বসে তাতেই সিলমোহর দিচ্ছে মোদী সরকার। ফলে এ রাজ্যে এক দিকে কংগ্রেস, অন্য দিকে অগপ, আসুর মতো বিরোধী দল ও সংগঠনের তোপের মুখে পড়েছেন রাজ্য বিজেপির নেতারা।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৪ ০৩:৫৮
Share: Save:

ত্রিশঙ্কু অবস্থা অসম বিজেপির। লোকসভা ভোটের আগে ইউপিএ সরকারের যে সব সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বিজেপি নেতারা এ রাজ্যে ভোট চেয়েছিলেন, এখন ক্ষমতায় বসে তাতেই সিলমোহর দিচ্ছে মোদী সরকার। ফলে এ রাজ্যে এক দিকে কংগ্রেস, অন্য দিকে অগপ, আসুর মতো বিরোধী দল ও সংগঠনের তোপের মুখে পড়েছেন রাজ্য বিজেপির নেতারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ভূমি হস্তান্তর চুক্তি, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী প্রসঙ্গ বা বৃহৎ নদীবাঁধ বিতর্ক নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে দরবার করতে ছুটেছেন রাজ্য বিজেপি নেতারা। রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের বিজেপি প্রতিনিধি দল এখন দিল্লিতে বিভিন্ন মন্ত্রীর দরজায় দরজায় ঘুরছেন।

সম্প্রতি বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বাংলাদেশ সফরে যান। অসমের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের দাবি, সেখানে অনুপ্রবেশ বন্ধে ঢাকার উপরে চাপ দেওয়া তো দূরে থাক, এই প্রসঙ্গের অবতারণাই করেননি সুষমা। পাশাপাশি, গত কাল অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকির সঙ্গে আলোচনার পরে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানান, অবিলম্বে নামনি সুবনসিরি নদীবাঁধের কাজ শুরু করা হবে। এই ঘোষণার পরে রাজ্য জুড়ে ফের শুরু হয়েছে আন্দোলন। নদীবাঁধ বিরোধী আন্দোলনে আগে সামিল হয়েছিল রাজ্য বিজেপি। কিন্তু সরকারে এসেই এনডিএর মন্ত্রী সেই বাঁধ নির্মাণে ছাড়পত্র দেওয়ায় কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি, আসু-সহ তাবড় দল ও সংগঠন বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুঙ্কার দিয়েছে।

ভোটের আগে অসমে বাংলাদেশি সমস্যা ও অনুপ্রবেশই ছিল বিজেপির সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। কিন্তু বর্তমান সরকার ভিসার নিয়ম শিথিল করার চিন্তাভাবনা শুরু করায় বা অনুপ্রবেশ নিয়ে বাংলাদেশকে চাপ না দেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ এখন সরব। তাঁর কথায়, “বিজেপির দু’মুখো চেহারাটা দ্রুত মানুষের সামনে চলে এল।” তাঁর প্রশ্ন, “যে ভূমি হস্তান্তর চুক্তি নিয়ে বিজেপি এত বিরোধিতা করেছিল বিজেপি সেই চুক্তিই বহাল রাখছে। এত দ্বিচারিতা কেন?”

এই পরিস্থিতিতে সোনোয়ালরা প্রথমে সুষমার সঙ্গে দেখা করেন। পরে সোনোয়াল জানান, “তরুণ গগৈ ভুল তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আব্দুল হাসান মাহমুদ আলির বৈঠকে ভূমি হস্তান্তর নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।” ভিসা প্রসঙ্গে সোনোয়াল বলেন, “সুষমাজি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকার বিনা ভিসা, পৌঁছ-ভিসা ও ‘মাল্টিপল ভিসা’র প্রস্তাব দিয়েছিল। প্রথম দু’টি প্রস্তাব কেন্দ্র খারিজ করেছে। কেবল মাত্র পর্যটকদের জন্য মাল্টিপল ভিসা দেওয়া হলেও, সে ক্ষেত্রে ৯০ দিনের মধ্যে ওই ব্যক্তিকে স্বদেশে ফিরে যেতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE