নরেন্দ্র মোদীর উপরে আস্থা রেখেও তাঁর সরকারের বিভিন্ন অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করতে ছাড়েননি তিনি। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির প্রথম বাজেটকে ‘হতাশাজনক’ বলতেও ছাড়েননি। ওয়াশিংটনের পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকনমিক্স এবং সেন্টার ফর গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট-এর সেই অর্থনীতিবিদ অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যম এ বার অর্থ মন্ত্রকের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পেতে চলেছেন বলে খবর। রঘুরাম রাজন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গত এক বছর ধরেই এই পদটি খালি। সরকারি সূত্রে খবর, জেটলি ইতিমধ্যেই সুব্রহ্মণ্যমের নামে সিলমোহর বসিয়েছেন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রিসভার নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটি। তাতে আছেন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মোদী-সরকারের প্রথম দেড় মাসের কাজের মূল্যায়ন করে স্কোর কার্ড তৈরি করেন সুব্রহ্মণ্যম। তাতে মূল্যবৃদ্ধি কমানোর পদক্ষেপ, শ্রম আইনের সংস্কার নিয়ে মোদী সরকারের সিদ্ধান্তকে ‘এ’ গ্রেড দিলেও গাড়ি শিল্পকে চাঙ্গা করতে কর ছাড় দেওয়া ও চিনিতে ভর্তুকি বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে যথাক্রমে ‘সি’ ও ‘ডি’ দিয়েছিলেন। জেটলির বাজেটকে ‘হতাশাজনক’ বলেন তিনি। তাঁর যুক্তি ছিল, ভর্তুকির বোঝা কমানোর সাহস দেখাতে পারেননি জেটলি। রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্য স্থির করেছেন, তা-ও অবাস্তব। তবে আশা প্রকাশ করেছিলেন, মোদী সরকার যা বলছে, তা করে দেখাবে। সুব্রহ্মণ্যম মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার পদে বসলে তিনি হবেন দ্বিতীয় ব্যক্তি, যিনি আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন। তাঁর পূর্বসূরি রঘুরাম রাজনও আইএমএফ-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ হিসেবে কাজ করেছেন।
কর্মজীবনের গোড়ার দিকে গ্যাট (জেনারেল এগ্রিমেন্ট অন ট্যারিফ্স অ্যান্ড ট্রেড)-এ কাজ করেছেন অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যম। সেই গ্যাট এখন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় রূপান্তরিত। সম্প্রতি সেখানে আমেরিকা-সহ একাধিক দেশ মুক্ত বাণিজ্যের স্বার্থে খাদ্যে ভর্তুকি কমানোর কথা বললেও দিল্লি তা মানতে রাজি হয়নি। সে সময় অরবিন্দ দিল্লির অবস্থানের নিন্দাই করেন। চলতি বছরে আর্থিক বৃদ্ধির হার পাঁচ শতাংশের উপরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। আর মূল্যবৃদ্ধি আগের তুলনায় কমলেও সরকার চিন্তামুক্ত হতে পারেনি। সুব্রহ্মণ্যমের সামনে এই দু’টিই বড় চ্যালেঞ্জ।