Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রায় শুনে ডুকরে উঠলেন কাঠগড়াতেই

চুলবুল পাণ্ডের চোখে জল! রিল লাইফের নায়ক তত ক্ষণে জেনে গিয়েছেন, ধোপে টেঁকেনি তাঁর যুক্তি। বিচারক ডি ডব্লিউ দেশপাণ্ডে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘বিনা লাইসেন্সে, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সেই রাতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন আপনিই।’’ অপেক্ষা শুধু রায় ঘোষণার। ‘গাড়ি চাপা দিয়ে অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর মামলায় দোষী সাব্যস্ত সলমন খান’— বিচারক রায় শোনানোর সঙ্গে সঙ্গেই ভেঙে পড়লেন সুপারস্টার। কাঠগড়াতে বসেই সলমন খান ডুকরে কেঁদে উঠলেন। কিন্তু এই তিনিই তো ভক্তদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, জেলে যেতে হলে মাথা পেতে মেনে নেবেন ভবিতব্যকে। ভুল করলে শাস্তি পেতে হয়, তা বলে টিভি ক্যামেরার সামনে কান্নাকাটি করার মতো ‘স্টার’ তিনি নন।

সকাল থেকেই উত্কণ্ঠা ঘিরে ছিল পরিবারকে। আদালতে যাওয়ার জন্য যখন বের হচ্ছিলেন সলমন, তাঁকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেলেন মা সালমা খান।

সকাল থেকেই উত্কণ্ঠা ঘিরে ছিল পরিবারকে। আদালতে যাওয়ার জন্য যখন বের হচ্ছিলেন সলমন, তাঁকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেলেন মা সালমা খান।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৫ ০৪:৫১
Share: Save:

চুলবুল পাণ্ডের চোখে জল!

রিল লাইফের নায়ক তত ক্ষণে জেনে গিয়েছেন, ধোপে টেঁকেনি তাঁর যুক্তি। বিচারক ডি ডব্লিউ দেশপাণ্ডে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘বিনা লাইসেন্সে, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সেই রাতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন আপনিই।’’ অপেক্ষা শুধু রায় ঘোষণার।

‘গাড়ি চাপা দিয়ে অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর মামলায় দোষী সাব্যস্ত সলমন খান’— বিচারক রায় শোনানোর সঙ্গে সঙ্গেই ভেঙে পড়লেন সুপারস্টার। কাঠগড়াতে বসেই সলমন খান ডুকরে কেঁদে উঠলেন।

কিন্তু এই তিনিই তো ভক্তদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, জেলে যেতে হলে মাথা পেতে মেনে নেবেন ভবিতব্যকে। ভুল করলে শাস্তি পেতে হয়, তা বলে টিভি ক্যামেরার সামনে কান্নাকাটি করার মতো ‘স্টার’ তিনি নন।

কোর্টে ক্যামেরা থাকার কথা নয়। কিন্তু কথা রাখলেন না সলমন!

১৩ বছরের মামলায় অপরাধ প্রমাণের পর যেন ঝড় বয়ে গিয়েছে তাঁর উপর দিয়ে। দৃশ্যতই বিধ্বস্ত। প্রাণপণে চেষ্টা করছেন কান্না গেলার।

মুম্বইয়ের দায়রা আদালতের ৫২ নম্বর ঘরের ভিতরে কী হচ্ছে, সেই খবর তত ক্ষণে চাউর হয়ে গিয়েছে গোটা দেশে। হবে না-ই বা কেন? সলমন খানের মামলার রায় ঘোষণা বলে কথা। সকাল থেকেই তাই সাজো সাজো রব দক্ষিণ মুম্বইয়ের এই নিম্ন আদালতে। ঝামেলা এড়াতে বিশাল পুলিশ বাহিনী ছিল কোর্ট চত্বরে। ভিতরেও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা।

সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ আদালতের তিন নম্বর গেটে এসে পৌঁছয় বলিউড তারকার গাড়ি। সারথি সেই অশোক সিংহ, মালিককে বাঁচাতে ২৮ সেপ্টেম্বর রাতের হত্যাকাণ্ডের যাবতীয় দায় যিনি ক’দিন আগেই তুলে নিয়েছিলেন নিজের কাঁধে।

পরনে হাল্কা নীল ডেনিম আর সাদা শার্ট। গাড়ি থেকে নেমে সোজা কোর্টে ঢুকে যান সলমন খান। এমন গুরুত্বপূর্ণ দিনে ভাই-বোনেরা অবশ্য তাঁকে একা ছাড়েননি। দুই ভাই সোহেল-আরবাজ ও বোন অর্পিতা-আলভিরা পৌঁছে যান শুনানি শুরুর আগে। পরিবার ছাড়াও ‘ভাই’-এর পাশে দাঁড়াতে আদালতে গিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা বাবা সিদ্দিকি, প্রযোজক রমেশ তউরানি, সলমনের সচিব রেশমা শেট্টি। সলমনের আত্মীয়-বন্ধুরা, পুলিশ, কৌঁসুলি, সাংবাদিক মিলিয়ে ৫২ নম্বর ঘরে তখন প্রায় শ’দুয়েক লোকের ভিড়। এজলাস ঠাসা, তাই প্রিয় অভিনেতার খবর পেতে কোর্টের বাইরেই জমায়েত হতে থাকেন ভক্তরা। এগারোটার কিছু পরে বসে আদালত। সময় যত গড়ায়, ভেতরে-বাইরে ততই চড়তে থাকে উত্তেজনার পারদ।

‘‘আপনার বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছিল। সব ক’টি অপরাধই প্রমাণিত হয়েছে। কিছু বলবেন কি?’’— শেষ বারের মতো বিচারক জিজ্ঞাসা করেছিলেন তারকাকে। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আজও সলমন দাবি করেন, ২০০২-এর ২৮ সেপ্টেম্বরের সেই রাতে গাড়ি চালাননি তিনি। বিচারক দেশপাণ্ডে রায় শোনানোর পর অবশ্য আর স্থির থাকতে পারেননি তিনি।

ক্ষণিকের বিরতি শেষে শুরু হয় সাজা ঘোষণার পর্ব। একটাই প্রশ্ন তখন ঘুরছে— ‘কত বছরের জেল?’

সলমন তত ক্ষণে কিছুটা সামলে নিয়েছেন নিজেকে। থমথমে মুখ। পাঁচ বছরের কারাবাসের নির্দেশটা শোনার পরেও তুলনায় নিরুত্তাপ দেখাচ্ছিল তাঁকে। যদিও পাঁচ বছরের সাজা হবে, এতটা পরিবারের কেউই আশা করেননি বলে জানান ঘনিষ্ঠেরা। ফলে খবরটা পেয়ে নিজেদের সামলাতে পারেননি সলমনের মা-বাবা। দুঁদে চিত্রনাট্যকার সেলিম খান কান্নায় ভেঙে পড়েন। কোনও মতে তাঁকে সামলান দুই মেয়ে। ইতিমধ্যে বাড়ি থেকে খবর আসে, রায় শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মা সালমা খান। কাঁদতে কাঁদতেই বাড়িতে ছোটেন ছোট ভাই সোহেল খান।

এত চোখের জল অবশ্য পুরো বৃথা যায়নি। তিন বছরের বেশি সাজায় নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন করা যায় না। আইনজীবীরা তাই এ দিনই অস্বাভাবিক দ্রুততায় দ্বারস্থ হন বম্বে হাইকোর্টের। সলমন তখনও বসে দায়রা আদালতেই। জেলযাত্রার প্রস্তুতি চলছে। তৈরি প্রিজন ভ্যান। আয়োজন শুরু হয়ে গিয়েছে আর্থার রোড জেলে। বিকেল গড়াতে প্রায় গোললাইন বাঁচিয়ে এল সেই সুখবর। মিলেছে দু’দিনের অন্তর্বর্তী জামিন।

সন্ধে সওয়া সাতটা। ঘরের ছেলে ঘরে চললেন আজকের মতো। ১০০ কোটি ক্লাবের সাম্রাজ্য আর গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টের আরাম পিছনে রেখে আর্থার রোড জেলই তাঁর আগামী ঠিকানা হবে কি না, তা জানতে অপেক্ষা আরও দু’দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE