মিছিল থেকে আটক মণীশ সিসৌদিয়া। ছবি: পিটিআই
গিয়েছিলেন গ্রেফতার হতে। কিন্তু পুলিশ তাঁদের আটক করল। কয়েক ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রেখে ছেড়েও দিল। আর রবিবার আম আদমি পার্টির (আপ) এই সব কাণ্ডে সরগরম রইল রাজধানীর রাজপথ।
এ দিন যন্তরমন্তরে ধর্নার জন্য আপকে অনুমতি দিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। কিন্তু বিধায়ক ও নেতা-কর্মীদের নিয়ে হেঁটে, গাড়িতে মিছিল করে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে যেতে শুরু করেন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। মাঝপথে তাঁদের গাড়ি আটকে দেয় পুলিশ। অতএব হেঁটেই প্রধানমন্ত্রী বাসভবনের দিকে যেতে শুরু করেন আপ-এর বিধায়করা। শেষ পর্যন্ত ১৪৪ ধারা অমান্য করায় উপমুখ্যমন্ত্রী-সহ ৫২ জন আপ বিধায়ককে আটক করে পুলিশ। যাঁদের আটক করা যায়নি, তাঁরাও থানায় চলে আসেন গ্রেফতার হওয়ার জন্য। পরে পুলিশ অবশ্য সকলকেই ছেড়ে দেয়। সিসৌদিয়া পরে বলেন, ‘‘এসেছিলাম গ্রেফতার হতে। পুলিশ যখন আটক করছে, তখনও ভেবেছিলাম গ্রেফতার করা হচ্ছে। কিন্তু পরে বুঝলাম তা নয়।’’
কেন দল বেঁধে গ্রেফতার বরণ করতে গিয়েছিলেন আপ বিধায়করা?
কাল আপ বিধায়ক দীনেশ মোহনিয়াকে সাংবাদিক সম্মেলন থেকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। যৌন হেনস্থার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই দিল্লির সব্জি বাজারের প্রধান থানায় গিয়ে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর করেন। অভিযোগ, তাঁকে হুমকি দিয়েছেন উপমুখ্যমন্ত্রী। আপ-এর অভিযোগ, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকারের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশ একের পর এক আপ বিধায়ককে নিশানা করছে। নতুন এফআইআর-এর পর উপমুখ্যমন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন। সেই কারণে বিজেপি-র উপর চাপ বাড়াতে এ দিন সকালে সব বিধায়ককে জড়ো করে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে মিছিল করে যেতে শুরু করেন সিসৌদিয়া। যাতে তাঁদের সকলকে গ্রেফতার করা হয়।
সিসৌদিয়া বলেন, ‘‘রোজ কোনও না কোনও ভুয়ো অভিযোগের ভিত্তিতে আপ বিধায়কদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। সব বিধায়কের পিছনে দিল্লি পুলিশ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক এক জনকে আলাদা করে গ্রেফতার করার থেকে ভাল আমরা সকলে একসঙ্গে মিলে গ্রেফতার বরণ করি। তা হলে আর দিল্লি পুলিশের ঝঞ্ঝাট থাকবে না। তারা বরং দিল্লির আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করার, ধর্ষণ আটকানোর সময় পাবে।’’
দিল্লি পুলিশের অবশ্য বক্তব্য, সিসৌদিয়ার বিরুদ্ধে করা অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে যে গ্রেফতার করা যায় না, সেটি আমরা সকালেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলাম। তবু তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে ১৪৪ ধারা ভেঙেছেন। তাই তাঁদের আটক করা হয়।
গত কাল মোহনিয়াকে গ্রেফতার করার বিষয়েও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে দিল্লি পুলিশ। তারা জানিয়েছে, মোহনিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগটি গুরুতর। অনেক বার তাঁকে নোটিস দেওয়া হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা না করার জন্য তাঁকে গ্রেফতার করা ছাড়া পথ ছিল না।
কাল মোহনিয়াকে গ্রেফতারের পর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল মোদীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেছিলেন, জরুরি অবস্থা জারি করছেন প্রধানমন্ত্রী। দিল্লি বিজেপির সভাপতি সতীশ উপাধ্যায় আজ বলেন, ‘‘সব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে টেনে আনা, তাঁর বাড়ির সামনে হানা দেওয়া কেজরীবালের স্বভাব হয়ে গিয়েছে। সকাল-সন্ধে মোদীর নাম জপ না করলে তাঁর হজম হয় না। এ সব বাদ দিয়ে বরং তিনি দিল্লির জন্য কোনও কাজ করুন।’’ সিসৌদিয়ার পাল্টা জবাব, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারই তো কোনও কাজ করতে দিচ্ছে না। সব্জি বাজারের প্রধান অনৈতিক কাজ করছে বলে তাঁকে ধমকিয়েছি, মুখ্যমন্ত্রীও এমন অনেক অনৈতিক কাজ দেখলে ধমক দেন। তার ভিত্তিতে এফআইআর করে বারবার দিল্লি সরকারকে হেনস্থা করলে কাজ হবে কোথা থেকে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy