Advertisement
১১ মে ২০২৪

দলিতের ঘরে তিন রাত, তবু বিফল শিবরাজ

রাজ্যে বিধানসভা ভোট আগামী বছর। তার আগে এই আসনটির দখল পেতে মরিয়া ছিলেন শিবরাজ। উত্তরপ্রদেশের লাগোয়া মধ্যপ্রদেশের এই কেন্দ্রে পাশের রাজ্যের নেতা এনে ওজন বাড়িয়েছিলেন প্রচারের। সভা করেন উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব মৌর্যও। লাভ হল না তবু।

শিবরাজ সিংহ চৌহান। ছবি: সংগৃহীত।

শিবরাজ সিংহ চৌহান। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৫
Share: Save:

আদিবাসীর ঘরে রাত কাটাবেন মুখ্যমন্ত্রী। রাতারাতি হয়েছিল শৌচালয়। মুখ্যমন্ত্রী ফিরে যেতেই তা উধাও!

আজ বুঝি তারই ফল পেলেন শিবরাজ সিংহ চৌহান। এ দিন চিত্রকূট বিধানসভার উপনির্বাচনের ভোট গোনার পরে দেখা গেল, মধ্যপ্রদেশের সেই তুর্রা গ্রামে তো বটেই, এলাকায় আদিবাসীদের ঘরে তিন রাত কাটিয়েও দলের প্রার্থীকে জেতাতে পারেননি তিনি। বিজেপির প্রার্থী শঙ্করদয়াল ত্রিপাঠীকে ১৪ হাজারের বেশি ভোটে পিছনে ফেলে আসনটি দখল করেছেন কংগ্রেসের নীলাংশু চতুর্বেদী। চিত্রকূটে এই উপনির্বাচন হয়েছিল কংগ্রেসেরই বিধায়ক প্রেম সিংহের মৃত্যুতে। সে অর্থে এটা মোটেই বিজেপির লোকসান নয়, ঘরোয়া আলোচনায় বলছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু বিজেপির উদ্বেগ বাড়ার আসল কারণটি অন্য।

রাজ্যে বিধানসভা ভোট আগামী বছর। তার আগে এই আসনটির দখল পেতে মরিয়া ছিলেন শিবরাজ। উত্তরপ্রদেশের লাগোয়া মধ্যপ্রদেশের এই কেন্দ্রে পাশের রাজ্যের নেতা এনে ওজন বাড়িয়েছিলেন প্রচারের। সভা করেন উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব মৌর্যও। লাভ হল না তবু। উল্টে ভোটের আগের বছরে বিজেপির উদ্বেগ বাড়াল রাহুল গাঁধীর দল।

উমা ভারতী, বাবুলাল গৌর, তার পরে টানা তিন দফা শিবরাজ— ২০০৩ থেকে ১৪ বছর বিজেপি শাসন চলছে রাজ্যে। চিত্রকূট ছিনিয়ে শিবরাজ দেখাতে চেয়েছিলেন, ভোটের হাওয়া এ বারও তাঁর দিকেই। তাঁকে সেই সুযোগ না দিয়ে, কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা আজ বললেন, ‘‘হাওয়া বদলাচ্ছে। কংগ্রেসের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ছে।’’ হার মেনে শিবরাজ বললেন, ‘‘জনতার রায় শিরোধার্য। গণতন্ত্রে জনমতই আসল আধার। এর পরেও চিত্রকূটের উন্নয়নে খামতি থাকবে না।’’ আর শিবরাজ-ঘনিষ্ঠরা বলছেন, গোটা রাজ্যে মত নয় এটা।

নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের কোনও প্রান্তে পঞ্চায়েত বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোটেও গেরুয়া শিবির জয় পেলে সেটিকে ‘মোদীর জয়’ বলে মেলে ধরত বিজেপি। আজ বিজেপি-রাজ্যেই হারের পর দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চুপ। ঘরোয়া মহলে তাঁরা বলছেন, আসনটি বরাবরই ছিল কংগ্রেসের দখলে। নব্বইয়ের দশকের পর ২০০৮ সালে এক বার মাত্র বিজেপি জিতেছিল ওখানে। মুখে এ কথা বললেও সর্বশক্তি দিয়েও যে আসনটি দখল করা যায়নি, সেটাই আশঙ্কার বিষয় বিজেপির কাছে। নিজে তিন দিন ঘাঁটি গেড়ে থেকে, আদিবাসীর ঘরে তিন রাত কাটিয়ে সেই গ্রামেই দলকে জেতাতে পারেননি শিবরাজ। দলের প্রার্থী শঙ্করদয়াল জেতেননি নিজের শ্বশুরবাড়ির গ্রামেও। সেটাও অশনি-সঙ্কেত বিজেপির কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE