প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গে চিন্তাভাবনা বছরখানেক আগেই শুরু হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাও ছিল। কিন্তু রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলির রাশ টানা এখনও সম্ভব হয়নি। একটি কমিশন গঠনও করা হয়। কথা ছিল, বেসরকারি স্কুলের যথেচ্ছ ‘ফি’ নেওয়া বন্ধ করতে তারা একটি নির্দেশিকা তৈরি করবে। কিন্তু বছর প্রায় ঘুরে গেলেও কাজ বিশেষ এগিয়েছে বলে কোনও খবর নেই। ঠিক সেই সময়েই প্রতিবেশী রাজ্য অসম বেসরকারি স্কুলের রাশ টানতে এক ধাপ এগিয়ে গেল। আজ অসম বিধানসভায় পেশ করা হয়েছে জোড়া বিল। একটি বিলে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের কাছ থেকে যথেচ্ছ টাকা নেওয়া বন্ধ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি স্কুলে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নিশ্চিত করতে আনা হয়েছে দ্বিতীয় বিলটি।
অসম নন-গভর্নমেন্টাল এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন (রেগুলেশন অব ফিজ্) বিল ও অসম নন-গভর্নমেন্টাল এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন (রেগুলেশন অব ম্যানেজমেন্ট) বিল দু’টি আজ সরকারের তরফে বিধানসভায় পেশ করেন মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি। এই বিল পাশ হয়ে আইন বলবৎ হলে বেসরকারি স্কুলগুলি পড়ুয়াদের থেকে ফি বছর ইচ্ছে মতো ভর্তি ফি ও লাগামছাড়া মাসিক ফি আদায় করতে পারবে না। প্রতি শিক্ষাবর্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান, পরিকাঠামো, বিনিয়োগ, সুযোগ-সুবিধে, ছাত্র সংখ্যা, আয় ও সম্প্রসারণের দিকে নজর রেখে ফি-এর ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ার জন্য বিলটিতে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় বিলটিতে স্কুল গড়তে ন্যূনতম কতখানি জমি প্রয়োজন তা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। পাশাপাশি, সব স্কুলে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, বিপর্যয় মোকাবিলার পরিকাঠামো, পর্যাপ্ত পার্কিং, পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য পৃথক ও যথেষ্ট সংখ্যক শৌচালয় ইত্যাদি নানা পরিকাঠামো নিশ্চিত করার ব্যবস্থা রয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে স্কুলে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের এনসিটিই মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে হবে। স্কুলকে সরকারি বিধি মানতে হবে ও শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো মেনেই মাইনে দিতে হবে। আইন না মানলে বিভিন্ন সাজারও বিধান রয়েছে বিলটিতে। অসমে সব বোর্ডের স্কুলকেই এই প্রস্তাবিত আইনের আওতায় রাখা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গেও বেসরকারি স্কুলগুলির বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ দীর্ঘ দিন ধরে উঠছে। বেসরকারি স্কুলের ফি-কাঠামোয় লাগাম দিতে গত বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি কমিশন তৈরি করে দেন। বেসরকারি স্কুলগুলির ফি-কাঠামো, দানের পরিমাণ,বছরের মাঝপথে ছাত্রদের থেকে বাড়তি টাকা নেওয়া হচ্ছে কি না এবং স্কুলগুলির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ পর্যালোচনা করার কথা ওই কমিশনের। কিন্তু বছর পার হতে চললেও সেই কমিশন এখনও কাজই শুরু করতে পারেনি। এক সূত্রের মতে, এ বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য কমিশনের যে আইনি-কবচ থাকা দরকার সেটাই নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy