অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন
ভালই ছুটছিল অর্থনীতির গাড়ি। তার ইঞ্জিন খারাপ করে, ফের চালু করার কৃতিত্ব নিতে চাইল নরেন্দ্র মোদী সরকার!
আজ ২০১৭-’১৮ সালের যে আর্থিক সমীক্ষা সংসদে পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, তাতে কার্যত স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে যে, নোটবন্দির ফলেই অর্থনীতির ইঞ্জিন বিগড়ে গিয়েছিল। তার উপরে তড়িঘড়ি জিএসটি চালু হওয়ায় আরও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। নোট বাতিলের ফলেই যে বৃদ্ধির হার কমেছে, সে ব্যাপারে কোনও রাখঢাক না করেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যনের ‘উপদেশ’, নোটবন্দির মতো ‘বৈপ্লবিক’ পদক্ষেপ দরকার নেই। যে সব সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে, তা শেষ করাই যথেষ্ট।
সরকার অবশ্য স্বাভাবিক ভাবেই ভাল ইঞ্জিন খারাপ করার চেয়ে আবার তাকে সারিয়ে তোলাকে বড় করে দেখাতে চায়। আর্থিক সমীক্ষা বলছে, চলতি বছরে বৃদ্ধির হার ৬.৭৫%-এ আটকে থাকলেও আগামী অর্থ বছরে ৭ থেকে ৭.৫%-এ উঠে আসবে। সরকারের দাবি, সংস্কারের ফলেই সাময়িক ধাক্কা কাটিয়ে ভারত আবার জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন নেবে।
সুব্রহ্মণ্যন কিন্তু মনে করিয়েছেন যে, ৮ শতাংশের বেশি হারে বৃদ্ধির ক্ষমতা রয়েছে এ দেশের অর্থনীতির। যার অর্থ, নোট বাতিলের আড়াই বছর পরেও তুলনায় ঝিমিয়েই থাকবে অর্থনীতি। সুব্রহ্মণ্যন বলেন, ‘‘একটা সময় পর্যন্ত, ভারতের বৃদ্ধির হার বাড়ছিল। ২০১৬-র মাঝামাঝি থেকে চাকা উল্টো দিকে ঘুরতে শুরু করে।’’ কী ভাবে? তাঁর জবাব, নোট বাতিলের ফলে রফতানি কমে। বাড়ে আমদানি।
আরও পড়ুন: গোলাপি মলাটে বন্দি মেয়েদের প্রতি অনিঃশেষ অবিচার
রফতানি ফের বাড়ছে, অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু সেখানে ঝুঁকির কথাও শুনিয়েছেন সুব্রহ্মণ্যন। শেয়ার বাজারে আচমকা ধসের সম্ভাবনা ও অশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি। এই দুইয়ের ফলে অর্থনীতি থমকে দাঁড়াতে পারে। দু’ক্ষেত্রেই খুব সতর্ক থাকতে হবে বলে জানিয়ে বাকি সংস্কার দ্রুত শেষ করতে বলেছেন তিনি।
কিন্তু সংস্কারের পথে হাঁটার পথে বড় অন্তরায় ভোট। লোকসভা ভোটের আগে এ বারই শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। ফলে খানিকটা জনমোহিনী হতেই হবে মোদীকে। আজ তিনি বলেছেন, এ বারের বাজেটের লক্ষ্য গরিব এবং দলিতদের কাছে সুফল পৌঁছে দেওয়া। আর্থিক সমীক্ষাও কৃষিকে চাঙ্গা করা ও তরুণদের জন্য কাজের ব্যবস্থার উপরে জোর দিতে বলেছে।
বিরোধীরাও এ নিয়েই বিঁধেছে সরকারকে। রাহুল গাঁধী টুইট করেছেন: ‘আর্থিক সমীক্ষা বলছে, অচ্ছে দিন এসেই গিয়েছে, সামান্য ক’টা হোঁচট ছাড়া— শিল্প, কৃষি, জিডিপি আর কর্মসংস্থান কমেছে!’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy