Advertisement
০৫ মে ২০২৪
National news

বিয়ে করতেই লোক দিয়ে শ্যালিকাকে যৌন হেনস্থা করিয়েছিলেন ইরশাদ!

ফাঁদ ছিল, ঘুঘুও ছিল। কিন্তু, শিকারির হাতে শিকার ধরা পড়ার আগেই ফাঁস হয়ে গেল ফাঁদের গেরো। ফন্দি এঁটে যৌন নিগ্রহ করিয়ে শ্যালিকাকে বিয়ের চালটা তাই ভেস্তে গেল ইরশাদের। আপাতত কেজি হালি থানার শ্রীঘরেই ঠাঁই হয়েছে তাঁর।

ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ এবং ডানদিকে ধৃত ইরশাদ

ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ এবং ডানদিকে ধৃত ইরশাদ

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৭ ১৩:৩০
Share: Save:

ফাঁদ ছিল, ঘুঘুও ছিল। কিন্তু, শিকারির হাতে শিকার ধরা পড়ার আগেই ফাঁস হয়ে গেল ফাঁদের গেরো। ফন্দি এঁটে যৌন নিগ্রহ করিয়ে শ্যালিকাকে বিয়ের চালটা তাই ভেস্তে গেল ইরশাদের। আপাতত কেজি হালি থানার শ্রীঘরেই ঠাঁই হয়েছে তাঁর।

৩৪ বছরের ইরশাদ খান পেশায় সেলস‌্ এগ্‌জিকিউটিভ। বেঙ্গালুরুর নাগাওয়ারার বাসিন্দা। বহু দিন ধরেই শ্যালিকাকে বিয়ে করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু স্ত্রী এবং পরিবারের অন্যদের ভয়ে তা শ্যালিকাকে জানানোর সাহস জুগিয়ে উঠতে পারেননি। শেষে ফন্দি আঁটেন যৌন নিগ্রহ করিয়ে শ্যালিকার অসহায়তার সুযোগ নেওয়ার। সব কিছু পরিকল্পনামাফিকই এগোচ্ছিল। গত শুক্রবার এক ব্যক্তিকে দিয়ে শ্যালিকাকে হেনস্থাও করান তিনি। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশের কাছে ধরা পড়ে যান।

কী ভাবে পুরোটা প্ল্যান করেছিলেন ইরশাদ?

ইরশাদ জানতেন শ্যালিকা রোজ সকাল ৬টা নাগাদ হেঁটে অফিস যান। ওই সময়ে রাস্তা প্রায় ফাঁকাই থাকে। এক ব্যক্তিকে দিয়ে তাঁর পিছু নেওয়ান ইরশাদ। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বেঙ্গালুরুর নাগাওয়ারা বাসস্ট্যান্ডের কাছে ওই লোকটিই শ্যালিকার হাত ধরে মাটিতে ফেলে দেয়। জোরজবরদস্তির সময় তাঁর হাত ও পায়ে আঘাত লাগে। জিভ এবং ঠোঁটেও কামড়ে দেয়। তাঁর চিৎকারে আশেপাশের লোকেরা বেরিয়ে পড়লে তাঁকে ফেলে রেখে পালায় ওই ব্যক্তি। পরে কে জি হালি থানায় শ্যালিকা যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করেন। স্থানীয় হাসপাতাল থেকে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসাও করানো হয়। গত শুক্রবার এই খবরটিও সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে এসেছিল।

পুলিশ জানায়, এমনিতেই এই সময়ে যৌন হেনস্থার খবরে বেঙ্গালুরু সরগরম। পূর্ব বেঙ্গালুরুর কাম্মানাহাল্লিতে এক মহিলার যৌন হেনস্থার ঘটনায় তোলপাড় হয় কর্নাটক। সিসিটিভি ফুটেজে যে হেনস্থার ছবিও ধরা পড়েছিল। এই সুযোগটাকেই হাতছাড়া করতে চাননি ইরশাদ। নিজের পরিকল্পনার জন্য কাম্মানহাল্লির এই ঘটনারই সাহায্য নিয়েছিল ইরশাদ। ভেবেছিলেন, এই নিগ্রহের পর অসহায় হয়ে পড়বেন শ্যালিকা এবং তাঁর পরিবার। আর সেই সুযোগেই মোক্ষম চালটা চালবেন। একপ্রকার মাসিহা হয়ে উদয় হবেন শ্যালিকা এবং তাঁর পরিবারের সামনে।

কী রকম?

পুলিশ জানিয়েছে, ইরশাদ শ্যালিকাকে বিয়ের প্রস্তাব দেবেন। অসহায় পরিবার তা মেনেও নেবে। এতে এক দিকে যেমন পরিবারের কাছে তাঁর ভাবমূর্তি আরও ভাল হবে, পাশাপাশি শ্যালিকাকে বিয়ে করার দীর্ঘ দিনের ইচ্ছাও পূরণ হয়ে যাবে। সব কিছু পরিকল্পনামাফিকই এগোচ্ছিল। কিন্তু তদন্তের সময় ইরশাদের অতি উৎসাহ তদন্তকারীদের মনে সন্দেহ জাগিয়ে তোলে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করাতে জবাবে অসঙ্গতি মেলে। এর পরই ইরশাদকে চেপে ধরেন তদন্তকারীরা। জেরার সামনে ভেঙে পড়েন তিনি। স্বীকার করে নেন শুক্রবার সকালে কাজে যাওয়ার সময় শ্যালিকার উপরে যে অচেনা লোকটি ঝাপিয়ে পড়েছিল, তা তাঁরই পাঠানো।

তদন্তকারীদের অনুমান, এই ঘটনায় সঙ্গে শ্যালিকাও যুক্ত থাকতে পারে। কারণ, শুক্রবার ঘটনার পর ওই মহিলা অভিযোগে জানান, অফিস যাওয়ার সময় এক অচেনা ব্যক্তি তাঁকে অনুসরণ করছিল। এর কিছু পরেই আচমকা তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাঁর জিভ ও ঠোঁটে কামড় দেয়। সেই তিনিই আবার শনিবার নিজের অভিযোগ কিছুটা বদলে বলেন, ওই সময়ে এতটাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন যে নিজেই জিভ এবং ঠোঁটে কামড়ে ফেলেছিলেন। এই অসঙ্গতিই জেরেই তিনিও পুলিশের সন্দেহের তালিকায়।

আরও পড়ুন: বোরখাও আটকাতে পারল না হেনস্থা, বেঙ্গালুরুর রাস্তায় ফের আক্রান্ত মহিলা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bengaluru Molestation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE