প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর গত বছর পাকিস্তানি বোন কমর জহান ডাকে পাঠিয়েছিলেন রাখি। এ বার কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরাসরি তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখি পরেছেন।
রাখি উৎসবে মোদীর এই পদক্ষেপের মধ্যেও কি লুকিয়ে রয়েছে রাজনীতির প্যাঁচ? অনেকেই কিন্তু একে শিয়রে থাকা বিহার ভোটের সঙ্গেই জুড়ে দেখছেন। দিল্লির বিধানসভায় ভরাডুবির পরে পটনায় এ বার মোদীর সম্মানের লড়াই। তাই অনেক আগে থেকেই যুদ্ধ জয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন মোদী। সে রাজ্যের উন্নয়নে সোয়া লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। আরবমুলুকে গিয়ে প্রথম বার মসজিদে গিয়েছেন। এক গুজরাতিকে বিয়ে করা পাকিস্তানি মহিলা, যিনি ১৮ বছর ধরে রাখি পরাচ্ছেন মোদীকে, তাঁকে এই প্রথম দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছেন। আর আজ পটনায় লালু-নীতীশ-সনিয়ার যৌথ সভার আগেই রেডিওতে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানটিকেও মোদী বেছে নিয়েছিলেন বিহার ভোটের প্রস্তুতি হিসেবে ।
পটনার গাঁধী ময়দানে সনিয়াদের সভা শুরুর আগেই সকালে রেডিও-র অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ধর্ম সম্প্রদায়কে নিয়ে কৌশলী অবস্থানের কথা শুনিয়েছেন মোদী। সংখ্যালঘুদের বার্তা দিতে তিনি বলেন, সম্প্রতি সুফি বিদ্বজ্জনদের সঙ্গে তাঁর যে বৈঠক হয়েছে, তাতে তিনি বুঝতে পেরেছেন ইসলামকে সঠিক স্বরূপে পৌঁছনো কতটা জরুরি। প্রধানমন্ত্রী জানান, শীঘ্রই বুদ্ধগয়ায় বৌদ্ধদের সম্মেলনে যোগ দেবেন তিনি। পাশাপাশি, মহারাষ্ট্র সরকার যে মুম্বই ও লন্ডনে অম্বেডকরের স্মারক বানাতে উদ্যোগী হয়েছে, তারও প্রশংসা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য, শোষিত দলিতদের কাছে টানার চেষ্টা।
একই সঙ্গে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কথা টেনে গরিবদের জন্য কাজ করার দাবিও করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারের নিচু তলার চাকরিতে ইন্টারভিউ প্রথা তুলে দেওয়া, জনধন প্রকল্পের সাফল্য, গরিবদের আরও রোজগারের চেষ্টা—আকাশবাণী-র ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের নিশানা বিহারই। সে রাজ্যের বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ভুপেন্দ্র যাদবের মতে, ‘‘এই সব সরকারি প্রকল্প বিহারের গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, যাতে মানুষ টের পান আসল উন্নয়নের কান্ডারি নরেন্দ্র মোদীই।’’
সকালে মোদীর বার্তা দিয়ে শুরু। তার পরে পটনায় সনিয়া-নীতীশদের জনসভা শেষ হতেই জবাব দিতে নেমে পড়ে বিজেপি। বিহার বিজেপির নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদের মন্তব্য, ‘‘পটনায় আজ স্বাভিমান সভা ছিল না, ছিল বিহারের অপমান সভা।’’ রবিশঙ্করের খোঁচা, ‘‘নীতীশ কুমার একার জোরে একটা সভা করারও সাহস দেখাতে পারছেন না। লালু ও সনিয়ার দুয়ারে গিয়ে এখন ওঁকে সভা করতে হচ্ছে।’’
সনিয়া-লালু-নীতীশের জবাব দিতে দু’দিন পরেই ভাগলপুরে মোদীর জনসভা। গাঁধী ময়দানের থেকে সেখানে অনেক বেশি লোক জমানোটাই এখন লক্ষ্য বিজেপির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy