মোহন ভাগবত
দাও ফিরে সেই হিন্দুত্ব। ২০১৯-এর আগে বিজেপির বীজমন্ত্র এটাই।
সেই লক্ষ্যে শীঘ্রই অমিত শাহ নাগপুরে গিয়ে মোহন ভাগবতের সঙ্গে গুজরাত ভোট নিয়ে পর্যালোচনায় বসবেন। নাগপুর-ঘনিষ্ঠ আর এক মন্ত্রী নিতিন গড়কড়ীকেও এই প্রক্রিয়ায় সামিল করা হচ্ছে। দ্রুত ভাগবতের সঙ্গে বসতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদীও। ভাগবত এখন রাজ্যওয়াড়ি সফরে ব্যস্ত। সেটা সম্পূর্ণ হলেই বৈঠক হবে।
ঠিক হয়েছে, এক দিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ-বজরং দল আর শিবসেনাকে নিয়ে রামমন্দির নির্মাণের সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ করা হোক। সুব্রহ্মণ্যম স্বামী সঙ্ঘের এই কাজে দলের পক্ষ থেকে সক্রিয় ভূমিকা নেবেন। ব্যবহার করা হবে যোগী আদিত্যনাথকেও।
দ্বিতীয়ত ঠিক হয়েছে হিন্দুত্বকে প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার করা হবে। তার অঙ্গ হিসেবে উত্তরপ্রদেশ-বিহার-অসম-বাংলার মতো মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্যে সংখ্যালঘু তোষণের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক প্রচার হবে। কর্নাটকে টিপু সুলতান অথবা রাজস্থানে পদ্মাবতীর মতো বিতর্ক জিইয়ে রাখা হবে। আরএসএস-ও সক্রিয় হবে। তৃতীয় ধাপে এই হিন্দুত্বকে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুর জাতীয়তাবাদী
শক্তি হিসেবে প্রচার করা হবে। যেখানে পাকিস্তান ও অনুপ্রবেশ বিরোধিতা এমনকী চিন বিরোধিতাকেও কাজে লাগাতে হবে। চতুর্থ ধাপে স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ ও আরএসএস-এর কয়েকটি সংগঠনের মাধ্যমে স্বদেশি অর্থনীতির প্রচার করা হবে। কৃষিতে ডব্লিউটিও-র বিরোধিতা করার লাইনও নেওয়া হবে।
১৯৮৯ সালে লালকৃষ্ণ আডবাণী বিজেপি-আরএসএস ও বিশ্বহিন্দু পরিষদকে একত্রিত করে হিন্দু জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটান। এখন তিন বছর কেন্দ্রে মোদীর সরকার চলার পরে বি়জেপি আবার নতুন করে বলছে, ‘‘হিন্দুত্ব আমাদের কোর ইস্যু। বিকাশ-উন্নয়ন করতে হবে। কিন্তু ওটা ভোটের প্রচারের প্রধান অস্ত্র হয় না।’’
অরুণ জেটলি একদা গোরক্ষকদের সভায় যোগ দিতে ভোপাল গিয়েছিলেন উমা ভারতীর সঙ্গে। অরুণ গরুর গায়ে হাত দিচ্ছিলেন না, কিন্তু উমা গরুকে জড়িয়ে ধরে ছবি তোলেন। তার পর অরুণকে বলেন, ‘গোমাতাকে স্পর্শ করুন। কর্মীরা খুশি হবেন।’ অরুণ তাই করেন। উন্নয়ন নিয়ে লম্বা বক্তৃতা দিয়ে হাততালি পাননি কিন্তু ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতেই কর্মীরা উদ্বেল। অরুণ বুঝেছিলেন, কমিউনিস্টদের যেমন সভাশেষে বলতেই হয় ‘নভেম্বর বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক’, বিজেপিতে তেমনই ‘জয় শ্রীরাম’।
অতএব ২০১৯-র আগে উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়। একের পর এক ভোট আর সব ভোটেই আপাতত অন্ধের যষ্টি ‘জয় শ্রীরাম’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy