দেশের দুই বাম-শাসিত রাজ্য কেরল ও ত্রিপুরায় এখন বিশেষ নজর গেরুয়া শিবিরের। সেই লক্ষ্যেই ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য কেরলে ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দিল বিজেপি।
দক্ষিণী রাজ্যে ‘জনরক্ষা যাত্রা’য় যোগ দেওয়ার অবসরে সংগঠনের হালহকিকতের সরেজমিন সমীক্ষা করেছিলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। বিস্তারিত আলোচনা করেছিলেন রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে। বিভিন্ন স্তরে সংগঠনের দায়িত্বে থাকা নেতা, রাজ্য নেতৃত্ব এবং কেরলের ভারপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষকের রিপোর্টের ভিত্তিতে আপাতত ১১টি লোকসভা আসনকে চিহ্নিত করেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান ও কর্নাটকের নেতা নতিন কুমার কাটিলকে ওই ১১টি আসনে নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, আপাতত ওই আসনগুলিকে নজরে রেখে সেইমতো সাংগঠনিক প্রস্তুতি চালানো হবে। লোকসভা ভোটের কাছাকাছি সময়ে আবার পর্যালোচনা করে দেখা হবে, ওই তালিকায় কিছু অদল-বদল করা দরকার কি না।
কেরলের মোট লোকসভা আসন ২০টি। ওই রাজ্য থেকে বিজেপি-র এখন কোনও সাংসদ নেই। কেরলকে তাঁরা গুরুত্ব দিচ্ছেন, এই বার্তা দিতে আলফন্স কান্ননতনমকে সম্প্রতি কেন্দ্রে মন্ত্রী করেছেন নরেন্দ্র মোদী-শাহেরা। তার পরে তাঁকে রাজ্যসভায় জিতিয়ে আনা হয়েছে বিজেপি-শাসিত রাজস্থানের একটি আসন থেকে। কেরলে সাংসদের খরা কাটাতে এ বার বিজেপি-র নজর যে ১১টি আসনে, তার মধ্যে আছে উত্তরের পাঁচটি এবং দক্ষিণের ৬টি। উত্তর কেরলের চালাকুড়ি, ত্রিশূর, পালাক্ক়়ড়, কোঝিকোড়, কাসারগোড় আসনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্রকে। আর দক্ষিণ কেরলের তিরুঅনন্তপুরম, কোল্লম, আট্টিঙ্গল, মাভেলিকারা, আলাপ্পুঝা ও পাতানমতিট্টা আসন দেখভাল করবেন কর্নাটকের কাটিল। বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক, তামিলনাডুর নেতা হরিহর রাজা কেরলে দলের পর্যবেক্ষক। ধর্মেন্দ্র ও কাটিলের দায়িত্ব লোকসভা আসন সংক্রান্তই।
তবে এই দায়িত্ব বণ্টন নিয়ে বিজেপি-র অন্দরে কিছু প্রশ্ন আছে। কর্নাটকে বিধানসভা ভোট এ বছরেই। কাটিলকে সেখানে ব্যস্ত থাকতে হবে। আবার ২০১৯-এ ধর্মেন্দ্রের নিজের যেমন লোকসভা ভোট থাকবে, তেমনই ওড়িশায় বিধানসভা নির্বাচনও হবে। নিজেদের রাজ্যের ব্যস্ততা সেরে ওই দুই নেতা কী ভাবে কেরলের মতো ‘কঠিন’ রাজ্যে আসন নজরদারি করবেন, প্রশ্ন আছে বিজেপি শিবিরের একাংশে।
রাজ্য বিজেপি-র পদাধিকারীরা অবশ্য বলছেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে ওই দুই নেতাই আসনের দায়িত্বে থাকবেন। পরে কোনও সমস্যা হলে তখন ভাবা যাবে। কেরল বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি কুম্মনম রাজশেখরনের বক্তব্য, ‘‘বাছাই করা সব আসনকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সর্বভারতীয় সভাপতি।’’ আর সিপিএমের এক পলিটব্যুরো সদস্যের মন্তব্য, ‘‘কেরলে রক্তগঙ্গা বওয়াচ্ছে আরএসএস-বিজেপি! তারা আসন বাছাই করে ঝাঁপাবে, এতে আর আশ্চর্য কী?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy