দেড় টাকার একটি সিরিঞ্জের দাম ৪৮৩ টাকা। লাভ ১০১১ শতাংশ। ২৬ টাকার অক্সিজেন মাস্কের দাম ২৩০ টাকা। বাজার দরের চেয়ে ৭৭১ শতাংশ বেশি। ৮২ টাকার ইনজেকশন বেড়ে হয়েছে ৪২৮ টাকা। লাভ এক ধাক্কায় ৪২৩ গুণ।
গুরুগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিলের নমুনা। রোগটা অতি পরিচিত ডেঙ্গি। ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটির রিপোর্টে উঠে এসেছে বেসরকারি হাসপাতালের এই ছবি। যার ভিত্তিতে নতুন ওষুধ নীতি আনার দিকে এগোচ্ছে কেন্দ্র।
গত বছর ১৬ লক্ষ টাকা খরচ করেও ডেঙ্গি-আক্রান্ত ছেলেকে বাঁচাতে পারেননি রাজস্থানের গোপেন্দ্র সিংহ পারমার। দিন সাতেক পরেও ছেলে নেতিয়ে পড়েছে দেখে জমি-জিরেত বেচে হাসপাতালের টাকা মিটিয়ে দৌড়ে এসেছিলেন সরকারি হাসপাতাল রামমনোহর লোহিয়া-তে। শেষরক্ষা হয়নি। হাসপাতালটির খোঁজ কে দিয়েছিল? গোপেন্দ্রর উত্তর, ‘‘কেন, অ্যাম্বুল্যান্সের চালক!’’
জয়ন্ত সিংহ মেয়ের ডেঙ্গির জন্য ভরসা করেছিলেন গুরুগ্রামেরই আর একটি বেসরকারি হাসপাতালের উপরে। ১৫ দিনে বিল দাঁড়ায় সাড়ে ১৫ লক্ষ টাকা। মেয়েটি তার পরেও বাঁচেনি অবশ্য।
বারবার এমন অভিযোগ পেয়ে তদন্ত কমিটি গড়ে মনোহরলাল খট্টারের সরকার। কেন্দ্রীয় রাসায়নিক ও সার মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থাটি তার রিপোর্টে জানিয়েছে, হাসপাতালগুলি এক লপ্তে বিপুল অর্থের ওষুধ কেনে। বাজারের চালু দাম থেকে কম পয়সায় তারা ওষুধ পায়। কিন্তু ওষুধ সংস্থাগুলির উপর নির্দেশ থাকে, প্যাকেটে বর্ধিত দাম ছাপতে হবে।
যে কারণে ২ টাকার ভিটামিন ইনজেকশনের দাম পড়ে ১০৮ টাকা। কিন্তু প্যাকেটে দাম লেখা থাকায় রুগির পরিবারের পক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে, বলছেন দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালের চিকিৎসক সুমিত রায়।
সুমিতবাবুর কথায়, ‘‘একই ওষুধ বড় ও ছোট হাসপাতালে বেশি ও কম দামে বিক্রি করে ওষুধ সংস্থাগুলি।’’ বেসরকারি হাসপাতাল ও ওষুধ লবি এখন এতটাই শক্তিশালী যে, সরকারি সংস্থার রিপোর্টেও হাসপাতালগুলির নাম নেওয়া যায়নি।
উদ্বিগ্ন রাসায়নিক ও সারমন্ত্রী অনন্ত কুমারও। তিনি বলেন, ‘‘এর আগে স্টেন্টের দাম কমাতে পদক্ষেপ করা হয়েছে। হাসপাতালগুলিতেও পদক্ষেপ করা হবে। খুব দ্রুত নতুন ওষুধ নীতি আনতে চলেছে সরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy