নিয়মের তোয়াক্কা না করেই মানুষের উপরে বেআইনি ভাবে ওষুধ পরীক্ষার অভিযোগ উঠল একটি বহুজাতিক সংস্থার বিরুদ্ধে! ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে রাজস্থান সরকার।
অভিযোগ, গত ১৯ মার্চ জয়পুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কয়েক জনের উপর একটি ওষুধের পরীক্ষা চালায় বহুজাতিক একটি সংস্থা। চিকিৎসক মহল এবং পুলিশ সূত্রের অভিযোগ, হাড়ের অসুখ সংক্রান্ত একটি ওষুধ বেআইনি ভাবে প্রয়োগ করা হয় চুরু জেলার বিদাসর ও ভরতপুর জেলার কিছু শ্রমিকের উপরে। তার পরেই বমি, জ্ঞান হারানো-সহ একাধিক উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাঁরা। তখনই বিষয়টি নজরে আসে। এই পরীক্ষা চালানোর বিনিময়ে তাঁদের মাথাপিছু ৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন আক্রান্ত এক শ্রমিক। ওই ব্যক্তির দাবি, এই ধরনের কোনও পরীক্ষার বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি তাঁদের।
নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ওষুধ মানুষের উপরে প্রয়োগ করার আগে একাধিক স্তরে পশুদের উপরে প্রয়োগ করা হয়। মানুষের উপরে প্রয়োগ করলে তার কী ফল হতে পারে, কত মাত্রা অবধি ওষুধটি সহনীয়— এই ধরনের একাধিক বিষয় খতিয়ে দেখার জন্যই পশুদের উপর পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। সেই সব ধাপ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে একাধিক নিয়ম মেনে তবেই মানুষের উপর ওষুধটি পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, রাজস্থানের ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। ওষুধটি মানুষের উপর পরীক্ষার জন্য ছাড়পত্রই পায়নি।
শুধু তা-ই নয়, এই ধরনের পরীক্ষা, চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বলা হয়, তার ক্ষেত্রে প্রথমে ক্লিনিক্যাল এথিক্যাল কমিটির থেকে অনুমতি নিতে হয়। ন’জনের ওই কমিটিতে থাকেন চিকিৎসক, আইনজীবী, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি। আরও একটি নিয়ম হল, ওষুধটি যে রোগের জন্য, সেই রোগে আক্রান্তদের উপরেই তাকে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনও নিয়মই মানা হয়নি বলে অভিযোগ।
ঘটনাটি সামনে আসার পরেই নড়েচড়ে বসেছে রাজস্থানের বিজেপি সরকার। এমনিতেই ভোটের আগে নানা ঘটনায় যথেষ্ট চাপে মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। তার উপর এই ঘটনায় সরকারের নজরদারি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কালীচরণ সরাফ। এ জন্য তিন সদস্যের একটি প্যানেল তৈরি করে সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়াও ঘটনার তদন্ত করতে ‘সেন্ট্রাল ড্রাগস কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন’ তিন সদস্যের একটি দলকে জয়পুরে পাঠিয়েছে।
এশিয়া, আফ্রিকার দেশগুলিতে কোনও নিয়মকানুন না মেনেই বহুজাতিক ওষুধ সংস্থাগুলি পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায় বলে আগেও বহু বার অভিযোগ উঠেছে। ভারতেও এ নিয়ে বেশ কয়েক বার হইচই হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy