দলের দুই নেতা এআইইউডিএফ শিবিরে যোগ দেওয়ায় ‘সিঁদুরে মেঘ’ দেখছে হাইলাকান্দি কংগ্রেস নেতৃত্ব। রদবদলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে জেলা পরিষদে। মারধরের মামলায় অভিযুক্ত বর্তমান সভাধিপতি এনামউদ্দিনের বদলে নতুন সভাধিপতির খোঁজ শুরু করেছেন পরিষদের কয়েক জন সদস্য।
কংগ্রেস সূত্রে খবর, করিমগঞ্জ জেলা পরিষদের মতো এ বার হাইলাকান্দিও হাতছাড়া হতে পারে বলে দলের অন্দরমহলে আশঙ্কা ছড়িয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতির বদল এখন তাই শুধু সময়ের অপেক্ষা। করিমগঞ্জে এআইইউডিএফ জেলা পরিষদের ক্ষমতায় রয়েছে। হাইলাকান্দি জেলা পরিষদই কংগ্রেসের কব্জায়। কিন্তু সভাধিপতি এনামউদ্দিনের দু’রাতের হাজতবাস ও দুই কংগ্রেস সদস্যের দলত্যাগের জেরে হাইলাকান্দির কুর্সি কংগ্রেসের হাতছাড়া হতে পারে বলে কানাঘুষো চলছে। ১১ সদস্যের হাইলাকান্দি জেলা পরিষদে কংগ্রেসের সদস্য ৬। বিরোধী শিবিরে রয়েছেন ৫ জন। তার মধ্যে এআইইউডিএফ নির্বাচিত সদস্য ছিলেন ২। সম্প্রতি ২ জন কংগ্রেস সদস্য ওই দলে যোগ দেওয়ায় তা বেড়ে হয়েছে ৪। তা ছাড়া অসম গণ পরিষদের এক জন সদস্য রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আরও এক জন সদস্য বিরোধীদের সমর্থন করলেই পালাবদল ঘটতে পারে। সেই সূত্রের দিকে তাকিয়েই এগোচ্ছেন এনাম-বিরোধীরা। জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, কংগ্রেস সদস্যদের একাংশ সভাধিপতি বদল চাইছেন। প্রথম থেকেই এনামউদ্দিনকে সভাধিপতি করার সিদ্ধান্ত দলের অনেকে মেনে নিতে পারেননি। ক্ষোভ বেড়ে চলছিল। দুই কংগ্রেস সদস্যের দলত্যাগে সেই ক্ষোভ প্রকাশ্যে এল।
কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ খবর, বর্তমান পরিস্থিতিতে এনামউদ্দিনকে গদি বাঁচাতে হলে শিবির বদল করে এআইইউডিএফ শিবিরের সঙ্গে হাত মেলাতে হবে। না হয় চেয়ার হারানোর ঝুঁকি নিতে হবে। যদিও রাজনীতির টানাপড়েন নিয়ে কোনও পক্ষই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি নন।
প্রদেশ কংগ্রেসের সদস্য শামসুল ইসলাম বড়লস্কর বলেছেন, ‘‘যাঁরা দল ছেড়েছেন, তাঁরা সুবিধাবাদী। তাঁদের যাওয়া-আসায় দলের কিছু সমস্যা হবে না।’’ এআইইউডিএফ যুবনেতা দুলন মজুমদার বলেন, ‘‘রাজনীতিতে অনেক কিছুই সম্ভব। কংগ্রেসের আরও দু’জন সদস্য আমাদের দিকে আসতে চাইছেন।’’ কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের মধ্যে অসন্তোষ মেটাতে প্রয়োজনে সভাধিপতি বদল করতেও রাজি হাইকম্যান্ড। দলের নেতাদের একাংশের বক্তব্য, পুলিশকে মারধর করা-সহ অন্য কাজে জেলা পরিষদের ভাবমূর্তি ম্লান করেছেন এনামউদ্দিন। সে কারণেই দল ছেড়ে অনেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। সে দিকে তাকিয়েই ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে এনামউদ্দিনকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি করে রাখা দলের পক্ষে ক্ষতিকারক হতে পারে। এনামউদ্দিন যে ভাবে ঘরে-বাইরে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন, তাতে হাইলাকান্দি জেলা পরিষদও কংগ্রেসের হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানার জন্য সকলেই তাকিয়ে রয়েছেন গৌতম রায়ের দিকে।
চিন্তিত নন এনাম। পুলিশকে মারধরের ঘটনায় আদালতের নির্দেশে দু’রাত হাজতে কাটিয়ে মুক্তি পান তিনি। এ দিন সমর্থকরা মিছিল করে তাঁকে জেলা পরিষদ দফতরে নিয়ে যান। এনাম বলেন, ‘‘আমি রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। দোষী হলে শাস্তি দেওয়া হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy