Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নোট বাতিলের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের মিছিল

৫০ দিনে দেশের ভাঁড়ারে কত কালো টাকা জমা পড়ল, টাকা বদলাতে গিয়ে যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কিনা—ইত্যাদি নানা প্রশ্ন তুলে জেলায় জেলায় আজ মিছিল করল কংগ্রেস।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:১২
Share: Save:

৫০ দিনে দেশের ভাঁড়ারে কত কালো টাকা জমা পড়ল, টাকা বদলাতে গিয়ে যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কিনা—ইত্যাদি নানা প্রশ্ন তুলে জেলায় জেলায় আজ মিছিল করল কংগ্রেস।

হাইলাকান্দিতে কংগ্রেস কার্যালয় থেকে শহর পরিক্রমা করে মিছিল আসে জেলাশাসকের অফিসের সামনে। সেখানেই তাঁরা মোদীর নোট বাতিলের প্রতিবাদে অবস্থান ধর্মঘটে বসে পড়েন। পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি থাকার কথা জানিয়ে আপত্তি করলেও কর্ণপাত করেননি কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। ফলে আন্দোলনকারীদের সবাইকেই গ্রেফতার করা হয়। সারা দুপুর আটকে রেখে বিকেলে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দিয়ে গ্রেফতার বরণ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস পর্যবেক্ষক সঞ্জীব রায়, জেলা কংগ্রেস সব-সভাপতি ইশাক আলি বড়ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদক সামসুদ্দিন বড়লস্কর, হীরালাল দত্ত পুরকায়স্থ, হীরেন্দ্রচন্দ্র পাল, মাধবী শর্মা প্রমুখ। প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায় বা রাহুল রায়কে আজ হাইলাকান্দির কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। সাধারণ সম্পাদক সামসুদ্দিন বড়লস্কর জানিয়েছেন, বিসিসিআইয়ের জরুরি সভার দরুন গৌতমবাবু শহরে নেই। রাহুলবাবুর গরহাজির থাকা নিয়ে তিনি নিজেও উষ্মা প্রকাশ করেন।

অন্য দিকে, করিমগঞ্জে বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থের নেতৃত্বে দুই শতাধিক কংগ্রেস কর্মী মিছিল করে জেলাশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকপত্র দেন। মিছিলে অংশগ্রহণকারী সবাই জেলাশাসকের কার্যালয় চত্বরে ঢুকতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। সেখানে কিছুটা ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে এক প্রতিনিধিদল জেলাশাসক প্রশান্ত কুমার মহন্তের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে স্মারকপত্র তুলে দেন। কমলাক্ষবাবু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বৈরাচারী শাসক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘টাকা বদলে সর্ব বৃহৎ কেলেঙ্কারি হয়েছে দেশে। সস্তায় প্রচার পেতে গিয়ে তিনি দেশকে বিরাট লোকসানের মুখে ঠেলে দিয়েছেন।’’

শিলচরে আবার ভিন্ন দৃশ্য। মিছিল করে অফিসপাড়ায় ঢোকার মুখে শহিদ ক্ষুদিরামের মূর্তির পাদদেশে সভা সেরে নেন কংগ্রেসিরা। অফিসপাড়ায় ঢুকেই ১৪৪ ধারার নিষেধাজ্ঞা মেনে নিজেরাই মাইক বন্ধ করে দেন। জেলাশাসকের অফিসে প্রবেশের জন্যও ছিল না ধাক্কাধাক্কি। পাঁচজন প্রতিনিধি বাছাই করাই ছিল। একে একে অফিসের ভিতরে ঢোকেন সাংসদ সুস্মিতা দেব, জেলা কংগ্রেস সভাপতি কর্ণেন্দু ভট্টাচার্য, প্রাক্তন মন্ত্রী অজিত সিংহ, প্রাক্তন দুই বিধায়ক রুমি নাথ ও আতাউর রহমান মাঝারভুইয়া। তাঁরা জেলাশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে এক স্মারকপত্র প্রদান করেন।

যাঁর উদ্দেশে স্মারকপত্র তাঁরা তাঁর বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিচার চেয়েছেন। আদিত্য বিড়লা গ্রুপ এবং সহারা গ্রুপ থেকে কোটি কোটি টাকা নরেন্দ্র মোদী পেয়েছেন বলে স্মারকপত্রে অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁদের আরও অভিযোগ, নোট বাতিলের আগে বিজেপি-আরএসএস প্রচুর সম্পত্তি কিনেছে, মহারাষ্ট্রে বিজেপি মন্ত্রীদের কাছ থেকে নতুন-পুরনো নোটে প্রচুর কালো টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, সে সবের উপযুক্ত তদন্ত হয়নি। নোট বাতিলের ফলে ১১৫ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়ে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তাঁদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও করেন তাঁরা।

স্মারকপত্র দিয়ে বেরিয়ে সুস্মিতা দেব বলেন, মোদী এতদিন শুধু কালো টাকার কথা বলতেন। এখন আর সেসব বলেন না। নতুন স্লোগান আমদানি করেছেন—ক্যাশলেস। কালো টাকা কোথায় গেল, জানতে চান সুস্মিতাদেবী। প্রাক্তন মন্ত্রী অজিত সিংহ বলেন, মোদীর সিদ্ধান্তে চা শ্রমিকরা অসহায় অবস্থায়। সে সবের খবর রাখেন না বিজেপি নেতারা। তিনি উপযুক্ত পরিকাঠামো ছাড়া এই ধরনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Banned Notes Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE