যোগী আদিত্যনাথ
গোরক্ষপুরে শিশু মৃত্যুর কারণ খুঁজতে গিয়ে গভীর হয়ে উঠছে অক্সিজেন সিলিন্ডার রহস্য। আর বিভিন্ন তথ্য সামনে আসায় ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠছে পর্দার আড়ালে দুর্নীতি আর দালালচক্রের খেলা।
নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব চন্দ্রকান্ত মিশ্র ঘটনাস্থলে গিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলে একটি রিপোর্ট পেশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নড্ডাকেও সেই আট পৃষ্ঠার রিপোর্টটির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে। সেখানেই বাবা রাঘবদাস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ নিয়ে একটি দুষ্টচক্র কাজ করার ইঙ্গিত রয়েছে।
স্বাস্থ্যসচিবের রিপোর্টে বলা হয়েছে, গোরক্ষপুর এলাকায় বহুবছর ধরে এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ রয়েছে। প্রতি বছর বিশেষ করে অগস্ট মাস নাগাদ ওই এলাকায় এনসেফ্যালাইটিসে শিশুমৃত্যু হয়ে থাকে। কিন্তু এ বার অক্সিজেনের অভাব ওই হাসপাতালে ছিল না— এই দাবি একেবারেই ঠিক নয়।
বলা হয়েছে, পুষ্পা সেলস নামে হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহকারী সংস্থাটির মালিক মণীশ ভাণ্ডারীর সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিবাদ চলছিল বিলের টাকা মেটানো নিয়ে। পুষ্পা সেলসের দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের পাওনা ৬৩ লক্ষ টাকা কয়েক মাস ধরে আটকে রেখে দিয়েছিল। সংস্থাটি হুমকি দেয় যে টাকা না পেলে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করা হবে না। ৮ অগস্ট সেখানকার স্টোরে ৩৫০টি সিলিন্ডার থাকার কথা। কিন্তু ছিল মাত্র ৫২টি। ১০ অগস্ট সব ক’টি সিলিন্ডারই খালি হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: কোপে ‘নায়ক’ ডাক্তারই
রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ১ অগস্ট পুষ্পা সেলস চিঠি দিয়ে হাসপাতালকে জানায়, অবিলম্বে টাকা দিন। না হলে বিনা পয়সায় সিলিন্ডার পাঠানো যাবে না। ওই চিঠি উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছেও পাঠায় সংস্থাটি। এর পরে ৫ অগস্ট রাজ্য সরকার কোম্পানিটিকে দেওয়ার জন্য চেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। ৭ অগস্ট কলেজের অ্যাকাউন্টে টাকাও এসে যায়। তবে এত দিন আগে হাসপাতালে টাকা চলে এলেও ১১ অগস্ট শিশুমৃত্যুর তুলকালাম কাণ্ডের পরে ওই টাকা সংস্থাটিকে দেওয়া হয়। উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী আশুতোষ টন্ডনও প্রশ্ন তুলেছেন, টাকা পেয়েও কেন হাসপাতালের ‘বাবু’-রা তা নিয়ে বসেছিলেন? গোটা বিষয়টি নিয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব রাজীব কুমার এখন তদন্ত করছেন। তিনি ১৯ অগস্টের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পেশ করবেন।
প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে সন্দেহ দৃঢ় হয়েছে যে হাসপাতালের কিছু চিকিৎসক অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবসায় নিয়মিত ঘুষ নিতেন। এই বিপুল অঙ্কের টাকার একাংশ লখনউ তখত পর্যন্ত যায়— এমন সন্দেহও রয়েছে। সংস্থার আইনজীবী বিবেক গুপ্ত জানান, বকেয়া টাকার জন্য হাসপাতালকে ১৪ বার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। তার পর ৪ অগস্ট শেষ বার সিলিন্ডার সরবরাহ করা হয়। গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি কথা বলবে সরবরাহকারী সংস্থাটির সঙ্গে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy