Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গির দেগঙ্গায় নজরে মাত্র দুই পঞ্চায়েত

ডেঙ্গি রোধে এ বছর উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন যে খসড়া পরিকল্পনা করেছে, তাতে অগ্রাধিকার পেয়েছে মোট ১০টি পঞ্চায়েত। এর মধ্যে রয়েছে দেগঙ্গা ব্লকের দেগঙ্গা ১ এবং চাকলা।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১৮

উত্তর ২৪ পরগনার যে এলাকায় গত বছর ডেঙ্গি এবং অজানা জ্বর সব থেকে বেশি ছড়িয়েছিল, সেই দেগঙ্গার মাত্র দু’টি পঞ্চায়েতকে ডেঙ্গি মোকাবিলায় অগ্রাধিকার দিল জেলা প্রশাসন!

ডেঙ্গি রোধে এ বছর উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন যে খসড়া পরিকল্পনা করেছে, তাতে অগ্রাধিকার পেয়েছে মোট ১০টি পঞ্চায়েত। এর মধ্যে রয়েছে দেগঙ্গা ব্লকের দেগঙ্গা ১ এবং চাকলা। অথচ এই ব্লকের ১৩টি পঞ্চায়েত এলাকাতেই গত বার মারাত্মক ভাবে ছড়িয়েছিল জ্বর। কেন অগ্রাধিকারের তালিকায় তাঁদের এলাকা নেই, প্রশ্ন তুলেছেন দেগঙ্গার চাঁপাতলা, আমুলিয়া, কলসুরের মতো প়ঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা।

জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর একটু সক্রিয় হলেই উত্তর ২৪ পরগনা, বিশেষত দেগঙ্গার ডেঙ্গি পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যেত বলে সম্প্রতি বারাসতে উত্তর ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেও ডেঙ্গি মোকাবিলা পরিকল্পনায় দেগঙ্গা গুরুত্ব না পাওয়ায় অবাক জেলারই একাধিক কর্তা।

এক স্বাস্থ্য-কর্তার মন্তব্য, রোগ প্রতিরোধের নিয়মই হল, যে এলাকায় রোগ বেশি সংক্রমণ হয়, তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে ঘন ঘন সমীক্ষা চালানো। কোথায় কোথায় মশার ডিম পাড়ার অনুকূল পরিস্থিতি রয়েছে, কোথায় কোথায় কীটনাশক ছড়াতে হবে, কোন এলাকার মানুষকে বেশি করে সচেতন করতে হবে— এ সবের ভিত্তিতে তৈরি করতে হয় ডেঙ্গি মোকাবিলার আগাম পরিকল্পনা। কিন্তু যে এলাকায় সব থেকে বেশি সংক্রমণ ছড়িয়েছিল, সেই এলাকা অগ্রাধিকার না পেলে ডেঙ্গি মোকাবিলার প্রাথমিক শর্তই ভঙ্গ হয়।

অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই চাঁপাতলা পঞ্চায়েত। সেখানকার চাঁদপুর, কে এম চাঁদপুর গ্রামে সবথেকে বেশি মৃত্যু হয় জ্বরে। মা ও জামাইবাবুকে হারানো বাহারুল মণ্ডল বলেন, ‘‘জ্বরের চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমার মতো অনেকের সব টাকাপয়সা শেষ। এখনও সরকার থেকে কিছুই হয়নি।’’ চাঁপাতলার উপপ্রধান জাহাঙ্গির হোসেনের কথায়, ‘‘জ্বর আর ডেঙ্গিতে আমাদের পঞ্চায়েতের অনেকেই আক্রান্ত ছিল। কিন্তু আমাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখা হয়নি।’’ জেলাশাসক অন্তরা আচার্য অবশ্য বলেছেন, ‘‘সমস্ত প়ঞ্চায়েতকেই কাজে নামতে বলা হয়েছে। এই তালিকা প্রাথমিক। উপদ্রুত অন্য প়ঞ্চায়েতকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’’

অগ্রাধিকারের তালিকায় না থাকা পঞ্চায়েতগুলি যখন নিজেদের বঞ্চিত বলে ভাবছে, তখন ডেঙ্গি রোধে অগ্রাধিকারের তালিকায় দেগঙ্গা ১ এবং চাকলা পঞ্চায়েত এলাকায় কতটা সক্রিয় জেলা প্রশাসন? দেগঙ্গা ১ প়ঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান আব্দুল রউফের দাবি, ‘‘অঙ্গনওয়াড়ি ও আশা কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছেন। এলাকা পরিষ্কার, মশা মারার কাজ শুরু হয়েছে।’’

ওই প়ঞ্চায়েতের আমিনপুরের বিশ্বাসপাড়া, ঝুড়িপাড়ায় গত বছর ঘরে-ঘরে ছিল জ্বর। মারা যান জনৈক সফিকুল ইসলাম। প্রধানের বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে বাস করা আমিনপুরের বাসিন্দা জালালউদ্দিন বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমিও ডেঙ্গিতে ভুগেছিলাম। এখনও কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করতে আসেনি। এলাকায় কোনও কাজও হয়নি।’’ ঝুড়িপাড়ায় রাইমা বিবি, রাজিয়া সুলতানাদের অভিযোগ, ‘‘বাড়িতে এসে খোঁজ দূরের কথা, মশা মারা, আবর্জনা পরিষ্কারও হয়নি।’’ দেগঙ্গার বিডিও দেবব্রত সাউয়ের দাবি, জেলার নির্দেশে ব্লকের প্রতিটি স্কুলকে নিয়ে পদযাত্রা হয়েছে। আশা, অঙ্গনওয়াড়ি ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্মীরা বাড়ি-বাড়ি ঘুরে সচেতনতার কাজ করছেন।

Dengue Mosquito Deganga ডেঙ্গি দেগঙ্গা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy