Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

টকে যাওয়া ডাল রাজধানীতে

খাবারে বাসি ডাল আর আধসেদ্ধ পনির দেওয়ার অভিযোগ উঠল অসমের ডিব্রুগড়গামী রাজধানী এক্সপ্রেসে। টকে যাওয়া খাবার মুখে তুলতে না পেরে, রেলের কর্মীদের জানানো হলেও, তা বদলে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ক্ষুব্ধ যাত্রীদের কয়েকজন রেলকর্মীদের কাছে লিখিত ভাবেও অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

শৌচাগারের সামনে পড়ে বিছানার চাদর ভরা থলে।—নিজস্ব চিত্র।

শৌচাগারের সামনে পড়ে বিছানার চাদর ভরা থলে।—নিজস্ব চিত্র।

অনির্বাণ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৫ ০২:৫৪
Share: Save:

খাবারে বাসি ডাল আর আধসেদ্ধ পনির দেওয়ার অভিযোগ উঠল অসমের ডিব্রুগড়গামী রাজধানী এক্সপ্রেসে। টকে যাওয়া খাবার মুখে তুলতে না পেরে, রেলের কর্মীদের জানানো হলেও, তা বদলে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ক্ষুব্ধ যাত্রীদের কয়েকজন রেলকর্মীদের কাছে লিখিত ভাবেও অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

শুধু মঙ্গলবার রাতের খাবার নয়, বুধবার সকালে রেলের প্যান্ট্রি থেকে বিলি করা প্রাতঃরাশের মান নিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) স্টেশনে পৌঁছে ক্ষোভ উগরে দিলেন যাত্রীদের অনেকেই। নয়াদিল্লি থেকে ডিব্রুগড়গামী এই রাজধানী এক্সপ্রেসে খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ নতুন কিছু নয়। মাস দুয়েক আগেও রাজধানীর খাবারের মান নিয়ে এনজেপি স্টেশনেই যাত্রীদের ক্ষোভ শুনেছিলেন রেলের কর্তারা। পদক্ষেপের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল রেলের তরফে। তার পরেও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি।

সম্প্রতি, রেলের যাত্রীদের মতামত, অভিযোগ শুনতে বিভিন্ন ট্রেনে পরিদর্শন করেছিলেন রেলের আধিকারিকরা। দেশ জুড়ে উদযাপিত হয়েছিল রেল যাত্রী উপভোক্তা পক্ষ। এনজেপি স্টেশনেও উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কর্তারা ডিব্রুগড়গামী রাজধানী এক্সপ্রেসে উঠে যাত্রীদের মতামত শুনতে গিয়ে খাবারের মান নিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। গত ২৭ মে সেই ঘটনার পরে দু’মাস কেটেছে। বুধবার সকালেও এনজেপি স্টেশনে ডিব্রুগড় রাজধানীর যাত্রীদের মুখে একই ক্ষোভ শোনা গেল। বাতানুকূল কামরার যাত্রী অমন সাথী রেল কর্মীদের লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন। তিনসুকিয়া যাওয়ার জন্য গত মঙ্গলবার সপরিবারে রাজধানীতে চেপেছিলেন তিনি। মঙ্গলবার রাতের খাবারে আধসেদ্ধ পনির ও সব্জির তরকারি দেওয়া হয়েছিল বলে তাঁর অভিযোগ। এ দিন সকালে প্রাতঃরাশে সরু দু’পিস পাউরুটি টোস্ট পেয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। পাশের ক্যুপেই ছিলেন ব্যবসায়ী অজিত জৈন। গুয়াহাটির বাসিন্দা এই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, ‘‘ডাল মুখে দিয়েই বুঝতে পারি পুরো টকে গিয়েছে। মোটা চালের ভাত দেওয়া হয়েছিল। কোনও খাবারেই স্বাদ পাইনি। ’’

প্যান্ট্রিকারের দায়িত্বে থাকা এক কর্মীর কথায়, ‘‘আমরা কিছু বলতে পারব না। যা বলার দিল্লি থেকে বলবে।’’ উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের এনজেপির এরিয়া ম্যানেজার পার্থসারথী শীল বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখব। সদর দফতরে অভিযোগের কথা জানানো হবে। পরিষেবার মান বজায় রাখতে সবসময়েই চেষ্টা হয়।’’ কিন্তু রেল কর্তারা আশ্বাস দিলেও, যাত্রীদের অভিযোগ চলছেই।

ট্রেনের বি-১০ নম্বর কামরার যাত্রী জয়পুরের বাসিন্দা অঞ্জনা সাহেরিয়া দাবি করেছেন রাতের বেলায় তিনি খাবার মুখেই তুলতে পারেননি। রাতভর বিস্কুট আর চা খেয়ে কাটিয়েছেন। প্রাতঃরাশের ওমলেট খানিকটা কাঁচা অবস্থাতেই পরিবেশন করা হয়েছিল বলে অঞ্জনাদেবীর দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘রান্নার কথা তো ছেড়েই দিলাম। যে সব্জি রান্না হয় সেগুলির মান কেমন ছিল তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। রাজধানীর মতো ট্রেনে এমন অভিজ্ঞতা হবে তা ভাবতে পারিনি।’’

এ দিন এনজেপির রেলযাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধিদের কাছেও যাত্রীদের একাংশ অভিযোগ জানিয়েছেন। দিল্লির বাসিন্দা নিরঞ্জন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘চা যে এত খারাপ হতে পারে, তা রাজধানী এক্সপ্রেসে না উঠলে জানতে পারতাম না। রান্নায় নুন ছিল না। ফয়েল প্যাকের ভিতর ভাত ঘেমে গিয়েছিল।’’ ট্রেনের পরিচ্ছন্নতা নিয়েও অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা। শৌচাগারের সামনেই বিছানার চাদর-কম্বল-বালিশের ঢাকনা ব্যাগে পুরে ফেলে রাখা হয়েছিল বলে যাত্রীরা জানিয়েছেন। এ দিন এনজেপি স্টেশনে ট্রেন পৌঁছলে তা দেখাও যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE