কড়াকড়ি বেড়েছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সীমান্তে। ভরসা তাই নেপাল। সীমান্তে কাঁটাতার নেই। পার হতে লাগে না ভিসা-পাসপোর্টও। তাই ভারতে জাল টাকা ঢোকাতে দু’দেশের খোলা সীমান্তকেই পাখির চোখ করেছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। অন্য দিকে, এ দেশে নাশকতায় মদত দিতে পাল্লা দিয়ে প্রবেশ করানো হচ্ছে অস্ত্রশস্ত্রও। এমনকী, ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড অপরাধীদের নিরাপদ আস্তানাও হতে শুরু করেছে নেপাল।
তবে এই চিত্রটি পাল্টাতে তৎপর হয়েছে দু’দেশ। সার্ক দেশগুলির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের আসন্ন বৈঠকে নেপাল ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে সন্ত্রাস মোকাবিলা ছাড়াও, ভারতে জাল টাকা ঢোকা আটকানো নিয়েও নেপালের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। আগামিকালই সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে নেপাল যাচ্ছেন তিনি।
সন্ত্রাস মোকাবিলায় ভারত-নেপাল যৌথ ভাবে কাজ শুরু করেছিল ইউপিএ আমলে। নরেন্দ্র মোদীর সফরের সময়েও সন্ত্রাস মোকাবিলায় কী ভাবে নেপালকে সাহায্য করা সম্ভব, তা নিয়ে সে দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। সন্ত্রাসবাদী হামলা মোকাবিলায় নেপালের নিরাপত্তাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেবেন ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা। আধুনিক প্রযুক্তি ও হাতিয়ার দিয়েও সাহায্য করা হবে। জাল টাকা আটকানো নিয়েও দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্র বলছে, সন্ত্রাসের কাছে আর্থিক মদত দিতে হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার করে থাকে জঙ্গি সংগঠনগুলি। বর্তমানে শুধু ভারত থেকেই নয়, দুবাই, মালয়েশিয়া থেকে হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পাঠানো হয় নেপালে। যা পরে সন্ত্রাসের কাজে ব্যবহার হয়। হাওয়ালা চক্র রোখা এবং কী ভাবে সন্ত্রাসবাদীদের তহবিলগুলিকে চিহ্নিত করা যায়, তা নিয়ে নেপালের বিভিন্ন ব্যাঙ্ককর্তা, অর্থ মন্ত্রকের জালিয়াতি দমন শাখা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক-সহ প্রায় ৬০ জনের একটি দলকে প্রশিক্ষণ দেবে ভারত।
দু’দেশের মধ্যে নিয়মিত গোয়েন্দা তথ্য আদানপ্রদানের জন্য লাভবান হয়েছে ভারত। ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন সংগঠনের মাথা ইয়াসিন ভটকলকে ভারত-নেপাল সীমান্ত থেকেই গ্রেফতার করা হয়। তার কয়েক দিন আগেই গ্রেফতার করা হয় লস্কর-ই তইবার সদস্য আব্দুল করিম টুন্ডাকে। ওই দু’জনের গ্রেফতারের পিছনে নেপাল প্রশাসন সর্বশেষ তথ্য জুগিয়ে সাহায্য করে ভারতকে। তবে ভারতের মূল চিন্তা হল ভারত-নেপাল সীমান্তে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর সক্রিয়তা। গত সপ্তাহেই জাল টাকা নিয়ে বিহারের রকসৌল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় সারদাশঙ্কর কুশওয়া নামে এক আইএসআই চরকে গ্রেফতার করে জাতীয় তদন্তকারী দল। গোয়েন্দাদের মতে এই কাজে আইএসআই ও দাউদ ইব্রাহিম একযোগে কাজ করছে।
পাশাপাশি, নেপালের মাওবাদীদের সঙ্গে এ দেশের মাওবাদীদের এখনও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলেই দাবি ভারতীয় গোয়েন্দাদের। বিষয়টিও চিন্তায় রেখেছে ভারতকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy