Advertisement
০২ মে ২০২৪

আধার যোগের সর্বশেষ সময়সীমা জানাতে নির্দেশ

মোবাইল বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার না জুড়লে সেগুলি বাতিল হয়ে যাবে বলে প্রচার শুরু করেছে টেলিকম সংস্থাগুলি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪১
Share: Save:

মোবাইল ফোন কিংবা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার জোড়া নিয়ে অযথা ভয়ের বাতাবরণ সৃষ্টি করা হচ্ছে কেন, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। তবে নরেন্দ্র মোদী সরকারের এই উদ্যোগকে আজ স্থগিত করে দিতে রাজি হয়নি শীর্ষ আদালত। যে হেতু আধারের বৈধতা সংক্রান্ত মামলা সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে রয়েছে, তারাই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছে কোর্ট। তবে এই মুহূর্তে আধার নিয়ে আতঙ্ক না ছড়িয়ে ব্যাঙ্ক ও মোবাইলের জন্য আধার যোগের সর্বশেষ সময়সীমা গ্রাহকদের জানাতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি এ কে সিক্রি ও অশোক ভূষণের বেঞ্চ।

মোবাইল বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার না জুড়লে সেগুলি বাতিল হয়ে যাবে বলে প্রচার শুরু করেছে টেলিকম সংস্থাগুলি। এ নিয়ে নিয়মিত ভাবে গ্রাহকদের কাছে এসএমএসও আসতে শুরু করেছে। যা নিয়ে গ্রাহকদের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে বলেই মনে করছে কোর্ট। তবে আদালতে আজ কেন্দ্রের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়, এই ধরনের কোনও এসএমএস পাঠানো হয়নি। আর সেই সময়েই সরকারকে কার্যত অপ্রস্তুত করে দিয়ে বিচারপতি এ কে সিক্রি মন্তব্য করেন, ‘‘এখানে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। তাই শুরুতে আমি কিছু বলতে চাইছিলাম না। কিন্তু এমন এসএমএস আমিও পাচ্ছি।’’

এর পরেই সরকারকে কোর্ট নির্দেশ দেয়, তারা যেন ব্যাঙ্ক ও মোবাইলে আধার যোগের সর্বশেষ সময়সীমার কথা জানিয়ে টেলিকম সংস্থাগুলিকে এসএমএস পাঠাতে বলে। কেন্দ্র জানিয়েছিল, মোবাইল নম্বরের সঙ্গে আধার জোড়ার সর্বশেষ সময়সীমা ৬ ফেব্রুয়ারি রাখা হয়েছে। আর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার জোড়ার সময়সীমা রাখা হয়েছে ৩১ ডিসেম্বর। এই তারিখ দু’টি যাতে টেলিকম সংস্থার পাঠানো এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহকদের জানানো হয়, সেই ব্যবস্থা করতে সরকারকে বলেছে কোর্ট।

আরও পড়ুন: আড়াল থেকেই কি মুকুলের পাশে যাওয়ার বার্তা

আধারের বৈধতা নিয়ে যে মামলা সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে রয়েছে, নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে তার শুনানি রয়েছে। যত ক্ষণ না পর্যন্ত মামলাটির নিষ্পত্তি হচ্ছে, তত ক্ষণ সরকারের তরফে মোবাইল ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আধার জোড়ার চেষ্টা স্থগিত রাখতে আর্জি জানিয়েছিলেন মামলাকারীরা। শীর্ষ আদালত অবশ্য সেই আবেদন মেনে নেয়নি। কিন্তু কোর্ট জানিয়েছে, সাংবিধানিক বেঞ্চের শুনানি যদি দীর্ঘায়িত হয়, তা হলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আধার জোড়ার সময়সীমা বাড়ানোর আর্জি জানানোর সুযোগ রয়েছে। কেন্দ্রের তরফে আদালতে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, ১১৮ কোটিরও বেশি মানুষের আধার কার্ড রয়েছে। ফলে আধারের বিরুদ্ধে কোনও রায় দেওয়া হলে তা মানুষের স্বার্থে আঘাত করবে।

আধারের ব্যবহার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফনামা পেশ করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেখানে বলা হয়েছে, এত বিরাট সংখ্যক মানুষের আধার কার্ড জারির পাশাপাশি সেগুলি বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পেও জোড়া হয়েছে। সরকার বোঝাতে চেয়েছে, আধারের বৈধতা নিয়ে বিপক্ষে রায় দেওয়া হলে তা কোটি কোটি মানুষের স্বার্থে আঘাত করবে। মোদী সরকারের দাবি, ১২ অঙ্কের আধার নম্বর এই মুহূর্তে দেশের নাগরিকদের সারা জীবনের পরিচয়পত্র হয়ে উঠেছে। নিজেদের পরিচয়কে তুলে ধরতে নাগরিকরা কত বার আধার কার্ডকে ব্যবহার করেছেন, সেই পরিসংখ্যানও সরকারের তরফে তুলে ধরা হয়েছে। ব্যাঙ্কের খাতা খুলতেও ভারতে বিরাট সংখ্যক মানুষ আধারের ব্যবহার করেছেন বলে সরকার জানিয়েছে।

তবে এখন সবটাই নির্ভর করছে সুপ্রিম কোর্টের উপরে। আধার কী ভাবে মানুষের ব্যক্তি পরিসরের অধিকারে আঘাত করছে, এর মাধ্যমে মানুষের উপরে কী ভাবে নজরদারি চালানো হতে পারে— তা তুলে ধরে মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এ বার তা খতিয়ে দেখবে সাংবিধানিক বেঞ্চ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE