Advertisement
০২ মে ২০২৪

কত চাকরি হয়েছে, বলতে নারাজ কেন্দ্র

কর্মসংস্থান নিয়ে প্রশ্নের উত্তর লিখে কেউই বিপদে পড়তে চান না। কারণ, মোদী সরকারের সাড়ে তিন বছরে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা যে দু’টি বিষয় নিয়ে, তার একটি কৃষির সমস্যা হলে অন্যটি কর্মসংস্থান। আরএসএসও কর্মসংস্থানের বিষয়টি নিয়ে সাবধান করেছে।

নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:০৪
Share: Save:

বেকারের সংখ্যা নাকি খুব বেড়েছে?

গত তিন বছরে কত লোকের চাকরি গিয়েছে?

নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে কত লোকের চাকরি হল? প্রধানমন্ত্রীর নতুন আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদ কর্মসংস্থানের জন্য কোনও নীতি তৈরি করল কি?

সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে ঘুরে-ফিরে প্রশ্ন উঠছে। ঢিল ছোড়া দূরত্বে রফি মার্গের শ্রম মন্ত্রকে হুলস্থুল কাণ্ড। কে উত্তর তৈরি করবেন, তা নিয়ে দায় ঠেলাঠেলি চলছে। বছর শেষের ডিসেম্বরের প্রশ্নের জবাবে দেওয়া হচ্ছে গত জানুয়ারি মাসের তথ্য।

উদাহরণ? এ বছর কত লোকের নতুন চাকরি হয়েছে প্রশ্নের জবাব, তা নিয়ে এখনও তথ্য নেই। শেষ তথ্য ১ জানুয়ারির। শ্রম মন্ত্রকের সমীক্ষা বলছে, ২০১৭-র ১ জানুয়ারি ২০১৬-র ১ অক্টোবরের তুলনায় ১.২২ লক্ষ লোক বেশি কাজ করছিলেন। নোট বাতিলের ফলে লোকে কাজ হারিয়েছেন কি না, জিএসটি চালুর ফলে চাকরির সুযোগ বেড়েছে কি না, তারও নির্দিষ্ট জবাব নেই। বেকারির হার নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে বলা হচ্ছে, ২০১৫-’১৬-র পরে আর তথ্য নেই।

মন্ত্রীরা সংসদে প্রশ্নের জবাব দেন। কিন্তু সেই উত্তর তৈরি করতে হয় মন্ত্রকের অফিসারদের। কিন্তু কর্মসংস্থান নিয়ে প্রশ্নের উত্তর লিখে কেউই বিপদে পড়তে চান না। কারণ, মোদী সরকারের সাড়ে তিন বছরে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা যে দু’টি বিষয় নিয়ে, তার একটি কৃষির সমস্যা হলে অন্যটি কর্মসংস্থান। আরএসএসও কর্মসংস্থানের বিষয়টি নিয়ে সাবধান করেছে।

মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বছরে দু’কোটি চাকরি দেবেন। এ দিকে টেনেটুনেও দেড় লক্ষের বেশি হিসেব দেখানো যাচ্ছে না। উল্টে নোট বাতিলের পরে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন বলে অভিযোগ। এখন সংসদে প্রশ্নের উত্তরে বেফাঁস কোনও তথ্য বেরিয়ে গেলে, আরও মুশকিলে পড়তে হবে। কেউই সেই দায় নিতে রাজি নন। জবাবও লেখা হচ্ছে রাখঢাক করে।

কিন্তু কর্মসংস্থান সমস্যার সমাধান কী?

সরকারি সূত্রের খবর, বাজেটে নতুন ‘কর্মসংস্থান নীতি’ ঘোষণা করার প্রস্তাব নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। শ্রমভিত্তিক ক্ষেত্রে শিল্প সংস্থাগুলিকে আর্থিক সাহায্য করার রাস্তা খুঁজবে সরকার। এমনিতেই গত বছর চালু হওয়া ‘প্রধানমন্ত্রী রোজগার প্রোৎসাহন যোজনা’-য় প্রভিডেন্ট ফান্ড প্রকল্পের ৮.৩৩ শতাংশ দায় সরকার বইছে। বস্ত্র এবং চর্ম-জুতো শিল্পের বিশেষ প্যাকেজ হিসেবে নতুন নিয়োগ হওয়া কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ৩.৬৭ শতাংশ দায়ও সরকার নিচ্ছে।

সেটাই কি নতুন মোড়কে পেশ করা হবে বাজেটে? অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা জানিয়েছেন, শিল্পকে বেশি লোক নিয়োগ করতে বললে হয় উৎসাহ ভাতা দিতে হবে। নয়তো কর ছাড়। সরকারের রাজকোষ ঘাটতি যে ভাবে বাঁধনছাড়া, তাতে এই দুইয়েরই সুযোগ কম।

কর্মসংস্থান নিয়ে প্রশ্ন এলেই তাই এখন শ্রম মন্ত্রকের কর্তারা বাঁধা গতে উত্তর দিচ্ছেন, কর্মসংস্থান সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। ২২টি মন্ত্রক দক্ষতা বাড়ানোর (স্কিল ডেভেলপমেন্ট) প্রকল্প চালাচ্ছে। আর কর্মসংস্থানের সঠিক পরিসংখ্যান তৈরির পদ্ধতি চালু করতে নীতি আয়োগের টাস্ক ফোর্স কাজ করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi নরেন্দ্র মোদী
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE