ঝাপসা: ধোঁয়াশায় ঢেকেছে রাজধানী। রুজির টানে তবু এরই মধ্যে নৌকা নিয়ে যমুনায়। শুক্রবার ভোরে। ছবি: রয়টার্স।
ফুসফুস তুমি কার! আপাতত এই প্রশ্নকে ঘিরে ক্ষোভ এবং আতঙ্ক বাড়ছে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মী, কূটনীতিকদের। দিল্লির বায়ুদূষণ নিয়ে দিল্লি সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রের তরজা চলছে। শুরু হয়েছে বিভিন্ন স্তরের রাজনীতি। ঘটনাপ্রবাহে এতই ক্ষুব্ধ বিদেশি কূটনীতিকেরা যে তাঁরা বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠকে বসার জন্য সময় চেয়েছেন। আতঙ্কিত বিদেশি কূটনীতিক ও দূতাবাসকর্মীদের বক্তব্যের নির্যাস এই রকম: ফুসফুসটা তো নয়াদিল্লির দূষণ নিয়ে রাজনীতির কারণে বিসর্জন দেওয়া চলে না!
কোস্টারিকার রাষ্ট্রদূত ম্যারিলা ক্রজ আলভারেজ ইতিমধ্যেই শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করেছেন। নোটিস দিয়ে জানিয়েছেন, দিল্লির বাতাসে নিশ্বাস নেওয়া অসম্ভব। আপাতত বেঙ্গালুরু থেকেই দূতাবাসের কাজ সামলাবেন। এটা ঘটনা, এখনই মারাত্মক শ্বাসকষ্ট অনুভব না করলেও অন্যান্য দূতাবাস-প্রধানেরা পড়েছেন ফাঁপরে। প্রতিনিয়ত অধস্তন কূটনীতিকেরা অভিযোগ জানাচ্ছেন পরিস্থিতি নিয়ে। অনেকেরই এখানে পরিবার রয়েছে। বাচ্চারা পড়ছে এখানকার স্কুলে। কেউ কেউ ছুটি নিয়ে ঘরবন্দি থাকতে চাইছেন। কেউ চাইছেন দেশে ফিরে যেতে। পরিস্থিতি এমনই যে দূতাবাসের কাজকর্ম চালানো দায়। যদি কিছু দিনের জন্য তালাও মেরে দেওয়া যায়... আসছে এমন প্রস্তাবও।
কিন্তু তাতে দ্বিপাক্ষিক কাজকর্ম মুখ থুবড়ে পড়বে। গোটা দেশের নাক কাটা যাবে দূষণ নিয়ে টালবাহানার কারণে। এই পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করার জন্য সমস্ত দূতাবাসের হয়ে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের কাছে সময় চেয়েছেন ডমিনিকান রিপাবলিকের রাষ্ট্রদূত ফ্রাঙ্ক হ্যান্স ক্যাস্টেলানোস। নয়াদিল্লিতে ডিপ্লোম্যাটিক কোর-এর ডিন হিসেবে আজ তিনি দেখা করেন বিদেশ মন্ত্রকের প্রোটোকল-প্রধানের সঙ্গে। তাঁদের আতঙ্কের কথা জানিয়ে বলেন, সরকার এ নিয়ে কী পদক্ষেপ করছে, তা জরুরি ভিত্তিতে নয়াদিল্লির সমস্ত দূতাবাসকে জানানো হোক। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা।
ক্যাস্টেলানোসের কথায়, ‘‘গত এক সপ্তাহে আমি বহু রাষ্ট্রদূতের ফোন পেয়েছি। তাঁরা নিজেদের ও দূতাবাস-কর্মীদের স্বজনদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন। বিদেশ মন্ত্রকের প্রোটোকল প্রধানের কাছে জানতে চেয়েছি, কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’’ পাশাপাশি, সাহায্যের হাত বাড়াতেও যে বিভিন্ন রাষ্ট্র তৈরি, সেই ইঙ্গিতও দেন তিনি। বলেন, ‘‘অন্যান্য দেশের মধ্যেও আলোচনা চলছে, কারও এমন অতীত অভিজ্ঞতা রয়েছে কি না। যদি থাকে, তা হলে দূষণ ঠেকাতে কী করা হয়েছিল সে সময়? কারণ, এটাও আমরা জানি বিদেশ মন্ত্রকের কাছেও এর চটজলদি কোনও সমাধান নেই। এটা তো শুধু বিদেশি কূটনীতিকদের সমস্যা নয়, গোটা শহরবাসীর সঙ্কট।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy