স্বপ্নপূরণ। আরাধ্যার সঙ্গে ধোনির সেই নিজস্বী।
নিজস্বীর নেশায় মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ‘সুপার-কার’কে ধাওয়া করল তরুণীর স্কুটি!
গত কাল বিকেলে সেই বিপজ্জনক দৌড় দেখে থমকাল রাঁচির রাজপথ। হতবাক ট্র্যাফিক পুলিশের চোখের সামনে দিয়ে ১৭০-৭৫ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে সক্ষম মাহির ‘হামার’-এর পিছনে স্কুটি নিয়ে এগোলেন কলেজ পড়ুয়া আরাধ্যা।
শুধু ধোনির সঙ্গে একটা নিজস্বী তুলবেন বলে!
সমীক্ষার হিসেবে, ২০১৫ সালে গোটা বিশ্বে নিজস্বী তোলার নেশায় ২৭ জনের প্রাণ গিয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৯ জন। অনেকের মতে, ওই সংখ্যা আরও বেশি। মৃত্যু-তালিকায় প্রথমেই রয়েছে ভারত। তাজমহলের সিঁড়ি থেকে মুম্বইয়ের বান্দ্রা-কুর্লা সি-লিঙ্ক সেতু, খাদের কিনারার পাথর থেকে সমুদ্রতীর— সতর্ক না হয়ে নিজস্বী তুলতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রাণ গিয়েছে অনেকের। পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে মুম্বইয়ের কয়েকটি জায়গায় ‘নো-সেলফি এরিয়া’ নোটিস সেঁটেছে পুলিশ। রাঁচীর কাছে জোনহা জলপ্রপাতের পাশেও ওই সতর্কবার্তা ঝুলিয়েছে প্রশাসন।
তবে বরাতজোরে এ বার ঝাড়খণ্ডের রাজধানীতে তেমন কিছু ঘটেনি।
গত কাল মুম্বই যাওয়ার বিমান ধরতে হরমূর বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ‘ক্যাপ্টেন কুল’। রাঁচীতে থাকলে গাড়ি নিয়ে কোথাও গেলে, বেশিরভাগ সময় পুলিশের এসকর্ট নেন না ধোনি। একাই বেরিয়ে পড়েন। গত কালও পুলিশ-প্রহরা ছিল না তাঁর সঙ্গে। হামার নিয়ে বিমানবন্দরের দিকে রওনা দেন তিনি।
হিনুর কাছে রাস্তার পাশে বান্ধবীদের সঙ্গে দাঁড়িয়েছিলেন আরাধ্যা। তখনই ধোনিকে গাড়ি চালিয়ে যেতে দেখেন তিনি। আরাধ্যা বলেন, ‘‘নীল রংয়ের টি-সার্ট, নীল সানগ্লাস ছিল ওঁর চোখে। বিদ্যুৎগতিতে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ধোনির সঙ্গে নিজস্বী তোলার ইচ্ছা ছিল অনেক দিনের। সে জন্যই ওঁর গাড়ির পিছনে ধাওয়া করি।’’
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, শহরের ব্যস্ত রাস্তায় কোনও নিয়মের তোয়াক্কা না করে ধোনির গাড়ির পিছনে তাড়া করে এয়ারপোর্টে পৌঁছন আরাধ্যা। তাঁর পিছনে আরও তিনটে স্কুটিতে ছিলেন বান্ধবীরা।
ঝড়ের বেগে বিমানবন্দরে পৌঁছলেও আরাধ্যাকে প্রবেশপথে আটকে দেন নিরাপত্তাকর্মীরা। সেই সময় গাড়ি থেকে নেমে লাউঞ্জের দিকে এগোচ্ছিলেন ধোনি। মরিয়া কলেজপড়ুয়া চিৎকার করে বলেন — ‘‘স্যর, প্লিজ এক সেলফি’’।
ফিরে তাকান ধোনি। হাত নেড়ে তাঁকে ডেকে নেন ভিতরে। আরাধ্যার মোবাইল ফোন নিয়ে নিজস্বীও তোলেন মাহি। তারপর ঢুকে যান বিমানবন্দরে।
প্রাণ হাতে নিয়ে স্কুটি চালিয়েও শেষে স্বপ্নপূরণ হওয়ায় আত্মহারা আরাধ্যা। তিনি বলেন, ‘‘কী ভাবে ওঁর গাড়িকে ধাওয়া করেছি, তা শুনে ধোনি অবাক। উনি খুব ভাল। আমার স্বপ্নটা বাস্তব করে দিলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy