চার বছর আগে আইএসের জঙ্গিডেরা থেকে পালিয়ে বেঁচে যান তিনি। অপহৃত ভারতীয় নাগরিক হরজিত মাসি-র দাবি ছিল তেমনই। ইরাক থেকে ফিরে এসে তিনি বলেছিলেন, আইএস জঙ্গিদের হাতে অপহৃত বাকি ৩৯ জন ভারতীয় নির্মাণকর্মী আর বেঁচে নেই। সরকার তখন তাঁর দাবি মানতে রাজি হয়নি।
বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ইরাকে অপহৃত ৩৯ জন ভারতীয়ের মৃত্যুর কথা আজ স্বীকার করে নিলেও বলেছেন, ‘‘ফের প্রমাণ হল, হরজিত মিথ্যেবাদী। কারণ তিনি বলেছিলেন, জঙ্গিদের হত্যালীলার মধ্যে তিনি প্রাণ বাঁচিয়ে ফিরেছিলেন। তেমনটা ঘটেনি। বাংলাদেশি কিছু নির্মাণকর্মীদের সঙ্গে আলি নাম নিয়ে তিনি পালিয়ে আসেন। আরবিলে ভারতীয় অফিসাররা তাঁকে খুঁজে পান।’’ সুষমার আরও সংযোজন, ‘‘আমরা ওঁকে বারবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, কী করে তিনি আরবিলে পৌঁছলেন। হরজিত শুধু বলে যান, আমি জানি না, আমায় এখান থেকে নিয়ে চলুন।’’
সরকার ৩৯ জন ভারতীয়র নিহত হওয়ার খবর জানাতেই গুরদাসপুরের কালা আফগানা গ্রামের বাসিন্দা হরজিত সরব হন। তিনি আজ বলেন, ‘‘গত তিন বছর ধরে বলে যাচ্ছি যে, ৩৯ জন ভারতীয়কেই মেরে ফেলা হয়েছে। আমি নিজে চোখে দেখেছি। আজ প্রমাণ হল, আমি সত্যি বলেছি।’’
সরকার কেন কখনও তাঁর বক্তব্যে গুরুত্ব দেয়নি, তা নিয়ে ক্ষোভও জানান তিনি। ২০১৪ সালের সেই দিনের কথাও বলেন হরজিত, যখন ইরাকের মসুলে কারখানায় কাজের মধ্যেই ৪০ জন ভারতীয়কে অপহরণ করে আইএস জঙ্গিরা। তাঁদের বন্দি করেও রাখা হয় বলে দাবি তাঁর।
আরও পড়ুন: আগে আমাদের বলল না, গোটা দুনিয়া জেনে গেল!
চার বছর আগে সংবাদমাধ্যমে একটি ওয়েবসাইটে হরজিতের দেওয়া বয়ানের সঙ্গে অবশ্য সুষমার বক্তব্য মেলে না। সে সময় হরজিতের বক্তব্য ছিল, ‘‘অপহরণের চার দিন পরে জঙ্গিরা একটা রেললাইনের কাছে ভারতীয়দের বলেছিল হাঁটু মুড়ে বসতে। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই অ্যাসল্ট রাইফেল থেকে ক্রমাগত গুলিবৃষ্টি। একের পর এক জন পড়ে মরে যাচ্ছিল।’’ হরজিতের দাবি, তাঁর পায়ে গুলি লেগেছিল। জঙ্গিরা চলে না যাওয়া পর্যন্ত তিনি মড়ার মতোই সেখানে পড়েছিলেন। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল পা। সেই অবস্থায় কোনওমতে সেখান থেকে পালিয়ে রাস্তায় ওঠেন। আরবিল পর্যন্ত গিয়ে ইরাকি সেনাছাউনিতে ঢোকেন। সেখান থেকেই তাঁকে উদ্ধার করে ভারতীয় দূতাবাস। ওই সাইটে লেখা হয়েছিল, ঘটনার কিছু দিন পরে হরজিতকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়। তিন মাস হেফাজতে রাখা হয়েছিল তাঁকে।
২০১৪ সালের নভেম্বরে সুষমা জানান, হরজিত মাসি-কে ‘সরকারি সুরক্ষা বলয়ে’ রাখা হয়েছে। সংসদে আজ সুষমা ফের দাবি করেন, ‘‘হরজিতের বয়ান সঠিক ছিল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy