ধৃত এজাজ শেখ। নয়াদিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্টে। ছবি পিটিআই
পুলিশের জালে ফের এক ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন (আইএম) নেতা। ২০১০-এ দিল্লির জামা মসজিদ-সহ দেশের বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসবাদী হামলায় অন্যতম মূল অভিযুক্ত এজাজ শেখকে শুক্রবার রাতে উত্তরপ্রদেশের সহারনপুর থেকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল। আজ দিল্লির একটি আদালতে পেশ করা হলে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয় তাকে।
এজাজের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে দিল্লি পুলিশের ওই সেলের স্পেশ্যাল কমিশনার এস এন শ্রীবাস্তব জানান, “অনেক দিন ধরেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিল এজাজ। সম্প্রতি সহারনপুরে এসে গা ঢাকা দেয় সে। গোপন সূত্রে এই খবর পেয়ে শুক্রবার রাতেই গ্রেফতার করা হয় তাকে।” উত্তরপ্রদেশে আসার আগে এজাজ কিছু দিন নেপালে ছিল বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।
ধৃতের কাছে পাওয়া গিয়েছে একটি ল্যাপটপ, বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন, একাধিক সিম কার্ড এবং কিছু পেন-ড্রাইভ। পুলিশের দাবি, এজাজ সম্পর্কে মুজাহিদিনের শীর্ষ নেতা মহসিন চৌধুরির শ্যালক। আদালতে আজ ধৃতের পুলিশি হেফাজত চাইতে গিয়ে পুলিশ জানায়, পাকিস্তান থেকে চৌধুরি-সহ আইএমের আরও দুই শীর্ষ নেতা ইকবাল ভটকল এবং রিয়াজ ভটকলের নির্দেশ মতোই ‘অপারেশন’ চালাত বলে প্রাথমিক জেরায় স্বীকার করেছে এজাজ। ২০১৩-র অগস্টে নেপাল সীমান্ত থেকে ধৃত প্রাক্তন আইএম প্রধান ইয়াসিন ভটকলের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশের দাবি, পুণের একটি কল সেন্টারে কাজ করতে করতেই প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিষিদ্ধ এই জঙ্গি গোষ্ঠীতে নাম লেখায় এজাজ। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই হয়ে ওঠে দলের মাথা। গোয়েন্দাদের অনুমান, ভুয়ো পরিচয়পত্র, জাল সিম কার্ড ইত্যাদি তৈরির পাশাপাশি হাওয়ালার মাধ্যমে আইএমের হয়ে বিদেশে টাকা-পয়সার লেনদেনও করত ধৃত এই জঙ্গি নেতা।
পুলিশের আরও দাবি, ২০১০-এর ১৯ সেপ্টেম্বর জামা মসজিদে হামলার পরে কিছু সংবাদমাধ্যমকে ইমেল পাঠিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করে এজাজ-ই। মসজিদে ঢোকার তিন নম্বর গেটের সামনে সে দিন আচমকা হামলা চালায় দুই বন্দুকধারী আইএম জঙ্গি। ঘটনায় আহত হন তাইওয়ান থেকে আসা দুই পর্যটক। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় একটি বিস্ফোরণও ঘটায় জঙ্গিরা। ইমেল পাঠিয়ে দু’টি ঘটনাতেই দায় স্বীকার করে আইএম জঙ্গিগোষ্ঠী। গোয়েন্দাদের দাবি, প্রথমে ইউরোপের কোনও একটি সার্ভার থেকে বাউন্স করিয়ে সেই মেল পাঠায় ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞ এজাজ। ওই বছর বারাণসী বিস্ফোরণ কাণ্ডের পরেও একই ভাবে মেল পাঠায় সে।
মার্চে তেহসিন আখতারের পর, দিন কয়েক আগে দিল্লি পুলিশের এই শাখাই রাজস্থান থেকে গ্রেফতার করে আইএমের আর এক ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ নেতা জিয়া-উর রহমানকে। এ বার হেফাজতে এজাজ। পুলিশের দাবি, তাদের এই ধারাবাহিক সাফল্যে নিশ্চিত ভাবেই চাপে পড়বে আইএম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy