রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার কক্ষ পরিণত হল ভারত-পাকিস্তান বাগযুদ্ধের মঞ্চে।
একদিকে সন্ত্রাস প্রশ্নে চাঁছাছোলা ভাষায় পাকিস্তানকে আক্রমণ করল ভারত। ইসলামাবাদের তোলা কাশ্মীর নিয়ে অভিযোগের উত্তরে পাকিস্তানকে ‘টেররিস্তান’ হিসেবে উল্লেখ করা হল। অন্য দিকে কাশ্মীর নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে বিশেষ দূত নিয়োগের দাবি জানিয়ে ইসলামাবাদের বক্তব্য, ভারত যদি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এলাকাভিত্তিক যুদ্ধ চালিয়ে যায়, তবে তার সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।
এই যুদ্ধংদেহি বাতাবরণে পাকিস্তান আজ ডেকে পাঠিযেছে ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার গৌতম বাম্বেওয়ালেকে। অভিযোগ, নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় সেনার গুলিতে নিহত হয়েছেন ৬ পাক নাগরিক। পাশাপাশি আজ থেকে শুরু হওয়া দু’দেশের ডিজিএমও বৈঠকেও একই অভিযোগে সরব হয়েছে ইসলামাবাদ। ভারতের পাল্টা বক্তব্য, গুলিগোলা চালিয়ে সংঘর্ষ বিরতি ভঙ্গের কাজটি সর্বদাই শুরু করে পাকিস্তান। ভারতকে যার উপযুক্ত জবাব দিতে হয়। তবে কোনও পাকিস্তানি নাগরিককে গুলি করার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ভারতীয় ডিজিএমও, লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ কে ভট্ট।
আজ রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতীয় মিশনের সচিব এনাম গম্ভীর একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘পাকিস্তান তার স্বল্প ইতিহাসের মধ্যেই তাদের ভূগোল এমন ভাবে গড়ে তুলেছে, যা সন্ত্রাসের সঙ্গে সমার্থক! পবিত্রতার জন্য তৈরি হওয়া ভূমি আসলে সন্ত্রাসের জন্য তৈরি হওয়া ভূমিতে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তান এখন টেররিস্তান! যেখানে সন্ত্রাসের কারখানার বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের রফতানিও ঘটছে।’’
আরও পড়ুন: অর্থনীতির হাল নিয়ে স্বামীর প্রশ্নে চাপে মোদী
সাধারণ অধিবেশনের বিতর্কে পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খকন আব্বাসি কাশ্মীর প্রশ্নে ভারতকে খোঁচা দেওয়ার পরেই সাউথ ব্লক স্থির করে, আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের সামনে কোনও রাখঢাক না করেই কঠিনতম ভাষায় আক্রমণ করা হবে পাকিস্তানকে। রাষ্ট্রের মদতেপুষ্ট সন্ত্রাসের বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন নয়। তাই রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চকে ব্যবহার করে কিছুটা অভিনব ভাষায় ইসলামাবাদকে বেঁধার কৌশল নেওয়া হয়। তৈরি করা হয় ‘টেররিস্তান’ শব্দটি, যা এখনও পর্যন্ত ভারত-পাকিস্তানের কূটনৈতিক অভিধানে ব্যবহার করা হয়নি।
ভারত তার বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘পাকিস্তানের পরিস্থিতি ঠিক কী রকম, তার সবচেয়ে ভাল উদাহারণ রাষ্ট্রপুঞ্জের জঙ্গি তালিকায় থাকা লস্কর নেতা হাফিজ সঈদ। সে এখন পাকিস্তানে রাজনৈতিক দল খুলতে বসেছে! এ এমন একটা দেশ যার সন্ত্রাসবাদের নীতিই হল, হয় জঙ্গিদের নিরাপদ স্বর্গোদ্যান তৈরি করে দেওয়া, নয়তো রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া।’
অন্য দিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, ভারত কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের আশা আকাঙ্খাকে দমিয়ে রেখেছে। অভিযোগ, সেখানে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপ চালাচ্ছে ভারত। পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘যে হেতু ভারত কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে অনাগ্রহী, আমরা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদকে অনুরোধ জানাচ্ছি, তারা জম্মু-কাশ্মীরে নিজেদের প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত করুক। এই কাজে রাষ্ট্রপুঞ্জ একজন বিশেষ দূতও নিয়োগ করুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy