রজনীশ রাই
অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ফের ‘শাস্তি-বদলি’-র মুখে পড়লেন গুজরাত ক্যাডারের বহু ‘বিতর্কিত’ আইপিএস অফিসার রজনীশ রাই।
সোহরাবুদ্দিন হত্যা মামলার এই তদন্তকারী অফিসারের তদন্তের জেরেই গুজরাতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ ছেড়ে জেলে যেতে হয়েছিল অমিত শাহকে। জেলে যান ডিজি বানজারা-সহ পদস্থ পুলিশ কর্তারাও। তার জের টেনে বদলি হতে হতে তিনি ঠেকেছিলেন সিআরপিএফের আইজি পদে। পোস্টিং হয় উত্তর-পূর্বে। শিলঙে। কিন্তু সেখানেও ভুয়ো সংঘর্ষে হত্যার প্রতিবাদ করে ফের ঠাঁইনাড়া হলেন ‘নন-অ্যাকটিভ’ পুলিশ পদে। তাঁকে বদলি করা হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুরে, অ্যান্টি-টেররিজম স্কুলের দায়িত্বে। প্রশিক্ষক পদে।
গত ৩০ মার্চ চিরাং জেলার সিমালগুড়িতে লুকাস নার্জারি ও ডেভিড ইসলারি নামে দুই বড়ো যুবককে হত্যা করে সেনা, পুলিশ, এসএসবি, সিআরপিএফের কোবরা কম্যান্ডোদের যৌথ বাহিনী। জানানো হয়, যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষেই বড়ো-জঙ্গি ওই দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত চালাতে গিয়ে সিআরপিএফের আইজি রজনীশ রাই দেখেন, এই সংঘর্ষ সাজানো।
সেই রিপোর্ট তিনি পাঠান অসম পুলিশের ডিজিপি, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে। প্রয়োজনীয় ‘ব্যবস্থা’ নেওয়ার সুপারিশ করেন রাই। এই রিপোর্টের কথা গোপন রাখা হলেও শেষ পর্যন্ত তা ফাঁস হয়ে যায়। নিন্দার ঝড় বয় রাজ্যে। উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো বিভিন্ন ‘ভুয়ো সংঘর্ষ’ নিয়ে ইতিমধ্যেই মামলা ঝুলে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালত এ নিয়ে তাদের অসন্তোষ ব্যক্তও করেছে। নানা মহলের সমালোচনার মুখে এবং সুপ্রিম কোর্টের বিষয়টি মাথায় রেখে ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেয় অসম পুলিশ। সে তদন্ত চলছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও আলাদা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু মাঝ পথেই রাইকে বদলি করা হল।
এই বদলিকে ‘শাস্তি-বদলি’ হিসেবেই দেখছে বড়ো ছাত্র সংগঠন আবসু। তারা বিষয়টি নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন। গুজরাতে সোহরাবুদ্দিন হত্যা মামলার জেরে রাজ্য ক্যাডার থেকে রজনীশকে কেন্দ্রীয় ক্যাডারে বদলি করা হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ২০১৫ সালে তাঁকে ঝাড়খণ্ডের জাদুগোড়ায় ইউরেনিয়াম কর্পোরেশনের (ইউসিল) চিফ ভিজিল্যান্স অফিসার হিসেবে বদলি করা হয়। রজনীশ প্রথমে ক্যাটে, পরে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করে অভিযোগ করেন, তাঁর বদলি পক্ষপাতদুষ্ট। তাঁকে পুলিশি পদে রাখা হোক। হাইকোর্ট সেই মর্মে রায় দেওয়ার পর তাঁকে সিআরপিএফের আইজি পদে বসানো হয়। তবে পাঠিয়ে দেওয়া হয় উত্তর-পূর্বে। কিন্তু বিতর্ক রজনীশ রাইয়ের পিছু ছাড়ল না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy