Advertisement
E-Paper

ভোটের মুখে ফের বিতর্ক, প্রেমিকের হয়ে ক্ষমাভিক্ষা কোণঠাসা শর্মিলার

প্রেমিকা অনশন ভাঙার পর থেকে নাম শোনা যাচ্ছিল না ডেসমন্ড কুটিনহোর। পরিবার-অনুগামীদের অভিযোগ ছিল, প্রেমিকের ‘চক্রান্ত’র ফলেই অনশন ভেঙেছেন ইরম শর্মিলা চানু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৬:৫০
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

প্রেমিকা অনশন ভাঙার পর থেকে নাম শোনা যাচ্ছিল না ডেসমন্ড কুটিনহোর। পরিবার-অনুগামীদের অভিযোগ ছিল, প্রেমিকের ‘চক্রান্ত’র ফলেই অনশন ভেঙেছেন ইরম শর্মিলা চানু। বিয়ের চিন্তা মুছে ফেলে, একমনে রাজনৈতিক ময়দানে পড়ে থেকে ভোটযুদ্ধের জন্য তৈরি হচ্ছিলেন শর্মিলাও। কিন্তু শর্মিলা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগেই ফের আসরে ডেসমন্ড। শর্মিলার ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে শুরু হল তাঁর অনলাইন তরজা। বিপাকে পড়ে, তড়িঘড়ি প্রেমিকের হয়ে জনতা ও সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চাইতে হল শর্মিলাকে। অবশ্য, সেই সঙ্গে চানু এটাও জানান, ভোটের পরে বিয়ে করতে পারেন। ডেসমন্ডকেই।

অনশন ভাঙার পর থেকেই জনমত ছিল শর্মিলার বিপক্ষে। তবু, বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে, সাইকেলে প্রচার চালিয়ে, ঘরে ঘরে গিয়ে এবং পাড়ায়-পাড়ায় হুইসেল বাজিয়ে তিনি ও তাঁর দল পিআরজেএ কিছুটা জনসমর্থন বাড়ায়। অনশন ভাঙার দিনে শর্মিলা ঘোষণা করেছিলেন, ভোটে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হতে চান। তারপর গড়বেন দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, আফস্পা-মুক্ত মণিপুর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাত্র চারটি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে পিআরজেএ। তাই, সরকার গড়তে পারছেন না তা নিশ্চিত। তবু, মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি-র বিরুদ্ধে চানুর লড়াই এখনও প্রধান চর্চার বিষয়। কিন্তু গত কাল সাইকেলে সমর্থকদের সঙ্গে ২১ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরে রাতে প্রেমিকের জন্য যে তাঁকে গলবস্ত্র হয়ে জনতার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, তা ভাবা যায়নি।


প্রেমিক ডেসমন্ড কুটিনহোর সঙ্গে শর্মিলা

ডেসমন্ডকে বরাবর ‘র’-এর এজেন্ট বলে মনে করেছে চানুর পরিবার ও দল। চানুর সঙ্গে দেখা করতে ইম্ফলে এসে মার খেয়েছেন ডেসমন্ড। জেলেও যান। বিস্তর ঝামেলার পরেও চানু প্রেমিকের পাশে দাঁড়িয়েছেন। অনশন ভাঙার পরে জানিয়েছিলেন, মণিপুরবাসী তাঁর সঙ্গ না দিলে তিনি ডেসমন্ডকে বিয়ে করে প্রবাসে চলে যাবেন। গত বছর অগস্টের পর থেকে ডেসমন্ড উধাও ছিলেন। শর্মিলা ঘনিষ্ঠরা জানান, ফের ডিসেম্বর থেকে শর্মিলার সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ান ডেসমন্ড। শর্মিলা যখন পুরোদমে রাজনৈতিক দল তৈরি করে প্রচার শুরু করেছেন, তখনই তাঁর দলের কর্মী ও নেতাদের উদ্দেশ্য, গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সোশ্যাল সাইটে তীর্যক মন্তব্য শুরু করেন ডেসমন্ড।

এমনকী, অনলাইনে এমনও বার্তা দেন যে, শর্মিলার পরিবারের সঙ্গে তাঁর ভুল বোঝাবুঝি কাটিয়ে দিতে তৈরি শর্মিলার ঘনিষ্ঠরা। তাঁদের শর্ত, ডেসমন্ড মণিপুর বা যে কোনও স্থানে শর্মিলাকে নিয়ে সুখে সংসার করতে পারেন। কিন্তু রাজনীতি থেকে সরে থাকতে হবে শর্মিলাকে। তিনি সমাজকর্মী হিসেবে কাজ করে গেলেই ভাল। এ ছাড়াও, চানু ঘনিষ্ঠ মানবাধিকার কর্মী বাবলু লৈতোম্বাম, ইরেন্দ্র লেইচোমবাম, সঞ্জু থংজাম, টোনি খাংগেমবাম, ইয়ামবেম লাবাদের সম্পর্কেও নেতিবাচর মন্তব্য করতে থাকেন ডেসমন্ড। অভিযোগ তোলেন, সরকারের পক্ষ নিয়ে চানুর লড়াইয়ে অন্তর্ঘাত করছেন তাঁরা।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরেই চানুকে সমর্থক ও অনুগামীদের রোষের মুখে পড়তে হয়। চাওয়া হয় জবাবদিহি। বাধ্য হয়ে গত রাতে লিখিত বিবৃতি দিয়ে ও প্রকাশ্যে চানু বলেন, ‘‘না বুঝে ডেসমন্ড সকলকে আঘাত করে ফেলেছেন। আমি তাঁর হয়ে ক্ষমা চাইছি। ডেসমন্ডের তিন বার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বয়সও হয়েছে। ওঁকে আর আক্রমণ করবেন না।’’

আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুর হ্রদে ভয়াবহ আগুন, রাস্তা-আকাশ ঢাকল ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে

শর্মিলা রাতে ক্ষমা চাওয়ার পরে এ-ও জানিয়ে দেন, ‘‘নির্বাচনের পরেই ডেসমন্ডের সঙ্গে বিয়ে সেরে নেওয়ার ইচ্ছে আছে।’’ শর্মিলার পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘ভোট নিয়ে দিনরাত পরিশ্রম, সাইকেলে বহু কিলোমিটার পাড়ি দেওয়া মেয়েটা মনে মনে একেবারে ভেঙেচুরে গিয়েছে। এক দিকে প্রেমিক, অন্য দিকে মণিপুরের জনতা, রাজনীতি, দলের চাপ ও ভোটের লড়াইয়ে সে ভাবে সাড়া না মেলা— শর্মিলাকে খুবই অস্থির করে তুলেছে। তার পরেও বাইরে থেকে মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করছে সে। এ জন্যই ওকে ‘লৌহমানবী’ বলা হয়।’’

Irom Sharmila Chanu
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy