গণতন্ত্র: ভোট দিয়ে বেরিয়ে এলেন ইরম শর্মিলা চানু। শনিবার ইম্ফলের একটি বুথে।— নিজস্ব চিত্র।
সাধারণত নির্বাচনে মাত্র তিনটি আসনে প্রার্থী দেওয়া দলকে ধর্তব্যের মধ্যে রাখা হয় না। সরকার গড়া দূরের কথা, ত্রিশঙ্কু ফলেও তাদের তেমন কোনও গুরুত্ব থাকে না। কিন্তু ইরম শর্মিলা চানু, নাজমা বিবি ও ইরেন্দ্র লেইচমবাম—মণিপুরের নির্বাচনে এঁদের ঘিরেই সংবাদমাধ্যমের ভিড়। প্রথম পর্যায়ের ভোটের দিনেও কংগ্রেস-বিজেপি দ্বৈরথ পিছনে ঠেলে ফের শিরোনামে শর্মিলাই।
১৬ বছরের অনশন ভেঙে চানু লড়তে নেমেছেন ভোটে। বহু বছর পর ভোট দিলেন তিনি। নাজমা বিবি কবরের জমি মিলবে না বলে হুমকি পাওয়ার পরেও ভোটের ময়দান ছেড়ে যাননি। ইরেন্দ্র গত এক দশক আমেরিকায় ছিলেন। বহুজাতিক সংস্থার লোভনীয় চাকরি ছেড়ে এখন প্রিয় নেত্রীর হয়ে দল সামলাচ্ছেন।
প্রথম পর্যায়ের ভোটে ইরেন্দ্রর ভাগ্য নির্ণয় হচ্ছে। আজ মণিপুর ভোটের প্রথম পর্বে সাধারণ ভাবে ৮৪ শতাংশ ভোট পড়ার কথা ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে তাদের ঘোষণা, ভোট হয়েছে নির্বিঘ্নেই। তবু এর মধ্যেই এ দিন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের হাতে মার খেলেন ইরেন্দ্র। গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে, পিআরজেএ-র পতাকার ডান্ডা দিয়েই তাঁকে পেটানো হয়েছে। চলছে হামলাকারীদের সন্ধান।
আরও পড়ুন: বিবিসিকে নিষিদ্ধ করে চাপে কাজিরাঙা
কিন্তু সব ছাড়িয়ে ফের গত রাত থেকে আলোচনার কেন্দ্রে শর্মিলার প্রেমিক ডেসমন্ড কুটিনহো। শর্মিলার অনুগামীদের তিনি ফেসবুকে আক্রমণ করায় শর্মিলা সকলের কাছে লিখিত ভাবে ক্ষমা চেয়েছিলেন। ডেসমন্ডও বলেছিলেন, ভোট না মেটা পর্যন্ত ফেসবুক করবেন না। কিন্তু গত রাতে তিনি লেখেন, ‘‘স্পষ্ট করে দিতে চাই, এই নির্বাচনে ফল যাই হোক, আমি ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে শর্মিলাকে বিয়ে করব না। বিধায়ক হিসেবে বা দলের সংগঠক হিসেবে এই দু’বছর তাঁর অনেক কাজ। আমরা কেউ ছোট নেই। তাই অপেক্ষা করতে পারব।’’
এ দিকে, শর্মিলা একাধিকবার ঘোষণা করেছেন, নির্বাচনের পরেই বিয়ে করবেন। আচমকা ভোটের আগের রাতে কুটিনহোর এই ঘোষণায় বেজায় চটেছেন শর্মিলার অনুগামীরা। লাবা ইয়ামবেম বলেন, ‘‘ডেসমন্ড এখন শর্মিলাকে নিয়ে নীচ খেলায় মেতেছে। এর ফলে শর্মিলার যদি দুর্ভাগ্যজনক কিছু ঘটে, তবে তার জন্য ডেসমন্ডই দায়ী হবেন।’’ ডেসমন্ড পাল্টা লেখেন, ‘‘শর্মিলার সঙ্গে আমার ব্যাপারটা আমি ইচ্ছে মতো কথা বলে মিটিয়ে নেব। তোমরা তো শর্মিলাকে খুনের হুমকি আগে থেকেই দিচ্ছ। এ আর নতুন কী? আমি এ সব হুমকিতে ভয় পাই না।’’ ডেসমন্ড শর্মিলার আশপাশে থাকা মানুষদের মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবির চামচা বলতেও ছাড়েননি।
শর্মিলার পরিবার ও সমর্থকদের আশঙ্কা, প্রেমের ফাঁদে ফেলে শর্মিলাকে অনশন ভাঙিয়েছেন ডেসমন্ড। দ্বিতীয় পর্যায়ের ভোটের মুখে শর্মিলার মনকে আরও দুর্বল ও বিক্ষিপ্ত করে দিতেই এখন এই কাণ্ড শুরু করছেন।
আজ রাতে ডেসমন্ড আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘অনেক ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ তাঁর বক্তব্য, শর্মিলার আশপাশের লোকেরা প্রচার করছিল, শর্মিলা বিয়ের আগে সময় কাটাতে ভোটে লড়ছে। মণিপুর নিয়ে তাঁর মাথাব্যথা নেই। সেই প্রচারকে ভুল প্রমাণ করতেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy