ধিক্কার: মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রবীণ সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ খুনের প্রতিবাদ। শুক্রবার অমৃতসরে। ছবি: পিটিআই।
হত্যা তদন্তে এক পা-ও অগ্রগতি হয়নি। তার মধ্যেই দেশের আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বুঝিয়ে দিলেন, মাওবাদীদের হাতেই খুন হয়েছেন সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ! আর দেশের আইনমন্ত্রী এমন তত্ত্ব সামনে আনলেন গৌরীর ভাই ইন্দ্রজিতের বক্তব্যকে ঢাল করে!
কালই ইন্দ্রজিতের বিরুদ্ধে গেরুয়া-শিবিরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ উঠেছিল। তাই তিনি যখন মাওবাদীদের দিকে আঙুল তুলেছিলেন, তখনই অনেকে বলেছিলেন, বিজেপি এটাকে ঢাল করবে। তা-ই হয়েছে। রবিশঙ্কর অবশ্য বিজেপি নেতা হিসেবেই মন্তব্য করেন। তাঁর দাবি, গৌরীর ভাই যখন বলছেন মাওবাদীদের মূলস্রোতে ফেরানোর উদ্যোগের জন্য প্রাণনাশের হুমকি ছিল, তখন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী কেন তাঁকে নিরাপত্তা দিলেন না? সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, গৌরী খুনের একদিনের মাথায় রাহুল গাঁধী নিজে যখন সঙ্ঘ তথা দক্ষিণপন্থীদের নিশানা করেন, তখন সেই দলের মুখ্যমন্ত্রী কী করে নিরপেক্ষ তদন্ত করবেন? তিনি এ দিন বিশিষ্টজনেদেরও তোপ দাগেন।
দেশের আইনমন্ত্রী গৌরী হত্যার পিছনে পরোক্ষে মাওবাদী-তত্ত্ব তুলে ধরায় ক্ষুব্ধ বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, বিজেপি-সঙ্ঘের ঘৃণার রাজনীতির বিরুদ্ধে আগাগোড়া সরব ছিলেন গৌরী। ভাইয়ের সঙ্গে গৌরীর বিরোধও মতাদর্শগত। তাই ভাই সঙ্ঘকে আড়াল করতে মাওবাদী তত্ত্ব খাড়া করেনি, তা কে বলল?
আরও পড়ুন:ডেরার একান্ত নিজস্ব, সমান্তরাল মুদ্রা ব্যবস্থা!
রবিশঙ্কর তথা বিজেপিকে বিঁধে কংগ্রেসের বক্তব্য, বিজেপির বিধায়ক বলেছেন, সঙ্ঘের বিরুদ্ধে লিখে গৌরীর প্রাণ গিয়েছে। তাই মোড় ঘোরাতে চান রবিশঙ্কর। আর যে কোনও বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা প্রধানমন্ত্রী এখন চুপ কেন? তা ছাড়া, যাঁরা গৌরী-হত্যা নিয়ে টুইটে ‘উল্লাস’ করছেন, তাঁদের এখনও ‘আনফলো’ না করে কী বার্তা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী?
ইন্দ্রজিৎ প্রথম থেকেই মাওবাদী তত্ত্ব দেন। সিবিআই তদন্তের কথাও বলছেন। গৌরীর বোন কবিতা কিন্তু ভাইয়ের সঙ্গে একমত নন। এই অবস্থায় তাদের দিকে ওঠা তির ঘোরাতে বিজেপি ইন্দ্রজিতের মন্তব্যকেই ঢাল করছে। সেই সঙ্গে প্রশ্ন তুলছে, এর আগে এম এম কালবুর্গি হত্যা হয়েছে কর্নাটকে। কিন্তু সেই রহস্যের কিনারা করতে পারেনি কংগ্রেস সরকার।
বিরোধীদের বক্তব্য, সিপিআই নেতা গোবিন্দ পানসারে, যুক্তিবাদী নরেন্দ্র দাভোলকরের হত্যা হয়েছে বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রে। কালবুর্গি হত্যার মতো ওই দুই ঘটনাতেও গেরুয়া শিবিরের সনাতন সংস্থার হাত রয়েছে বলে মহারাষ্ট্র সরকারের গঠিত ‘সিট’ বলেছে। কিন্তু মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকারই তদন্ত এগোয়নি। এক বিরোধী নেতা বলেন, ‘‘সিবিআই তো বিজেপির পোষা তোতা! ওদের হাতে তদন্তভার গেলে কী হবে, সেটা তো বলার দরকার নেই!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy