ফিরছেন ফেলে আসা মুখ্যমন্ত্রিত্বে।
ত্রিশঙ্কু গোয়ার দখল নিল বিজেপিই। মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। সংখ্যায় পিছিয়ে থাকলেও তাঁকে সামনে রেখে সরকার গড়ার চেষ্টায় নেমেছিল বিজেপি। সরকার গড়তে দরকার ২১ বিধায়কের সমর্থন। রাজ্যপালের কাছে আজ মোট ২২ জন বিধায়ককে হাজির করে সরকার গড়ার দাবি জানান পর্রীকর। রাতেই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের চিঠি পাঠিয়ে দেন রাজ্যপাল মৃদুলা সিন্হা। একক দল হিসেব সংখ্যায় এগিয়ে থেকেও ম্যাচ হাতছাড়া হওয়ায় কংগ্রেস বিধায়ক কেনাবেচার অভিযোগ তুলেছে।
রাজ্যপাল তাঁর চিঠিতে শপথের দিনক্ষণ না লিখলেও দলীয় সূত্রের খবর, আগামী মঙ্গলবার শপথ নিতে পারেন পর্রীকর। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে পর্রীকরের ইস্তফা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ পর্রীকরের দক্ষ ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কথা মাথায় রেখেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ভার দিয়েছিলেন। তাঁকে গোয়ায় ফেরত পাঠালে মোদীকে নতুন কোনও স্বচ্ছ মুখ খুঁজে নিতে হবে ওই পদে। সেটি কে হতে পারেন তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে বিজেপিতে।
দলীয় সূত্রের খবর, পর্রীকরকে রাজ্য রাজনীতিতে ফেরত পাঠানোর পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানকে এ বার কেন্দ্রে নিয়ে আসা হতে পারে। তবে মন্ত্রিসভার পরবর্তী রদবদলে মোদী তাঁকে কোন মন্ত্রকের ভার দেবেন তা নিয়ে দলেই যথেষ্ট কৌতূহল রয়েছে।
মন্ত্রী হতে পারেন পানাজির বিধায়ক পান্ডুরঙ্গ। ছবি পিটিআই।
গত কাল অমিত শাহ দাবি করেছিলেন, সংখ্যা না থাকলেও গোয়াতে বিজেপিই সরকার গড়বে। লক্ষ্য পূরণে আজ সকালেই গোয়াতে পৌঁছে যান নিতিন গডকড়ী। গোয়া বিধানসভার ৪০টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ১৩টি। সেখানে কংগ্রেস পেয়েছে ১৭টি আসন। ১টি আসন পাওয়া শরদ পওয়ারের দল এনসিপি কংগ্রেসের পাশে রয়েছে। ফলে সরকার গড়তে কংগ্রেসের দরকার ছিল মাত্র ৩টি আসন। তুলনায় লড়াইটি কঠিন হওয়া সত্ত্বেও আজ সকাল থেকেই কংগ্রেসের বাড়া ভাতে ছাই দিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন বিজেপি নেতৃত্ব। দিনের শেষে তাঁদের শক্তি দাঁড়ায় ২২। মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি, গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি ও নির্দলেরা ৩টি করে আসন পেয়েছেন। গডকড়ী গোয়া পৌঁছেই ওই ৯ বিধায়কের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।
আরও পড়ুন: মণিপুরে ধোঁয়াশা অব্যাহত, এনপিপিকে নিয়ে সরকার গড়ার দাবি কং-বিজেপির
এঁদের মধ্যে প্রাক্তন শরিক মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি আগেই আশ্বাস দিয়ে রেখেছিল, বিজেপিকে তারা সমর্থন করবে। গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি এবং নির্দল বিধায়কদের প্রতিনিধি গোবিন্দ গাউড়ে জানিয়ে দেন, পর্রীকরের নেতৃত্বে সরকার গড়া হলে তাঁদের সমর্থন করতে আপত্তি নেই। মনে করা হচ্ছে, ওই ৯ জনকে পাশে পেলে তবে গোয়া হাতে রাখা যাবে, এটা বুঝেই সম্ভবত দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পর্রীকরকে রাজ্য রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে রাজি হয়েছেন। বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে থেকেই দাবি ওঠে পর্রীকরকে মুখ্যমন্ত্রী করে সরকার গড়ুক দল।
সরকার গড়ার লক্ষ্যে কংগ্রেসও আজ দিনভর গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি ও নির্দল বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু বিজেপির অগ্রাসী মনোভাবের কাছে শেষ পর্যন্ত তাদের হার মানতে হচ্ছে বুঝে পর্রীকর নিয়োগপত্র পাওয়ার আগেই বিধায়ক কেনাবেচার অভিযোগ তুলতে শুরু করে কংগ্রেস। দিগ্বিজয় সিংহ বলেন, ‘‘গোয়ায় সরকার গড়তে বিধায়ক কেনাবেচায় নেমে পড়েছেন বিজেপি নেতারা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy