—ফাইল চিত্র।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র কটাক্ষ ফিরিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদী। নাম করলেন না। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের জনসভা থেকে চড়া স্বরে প্রধানমন্ত্রীর কটাক্ষ, যাঁর মদতে কোটি কোটি টাকা লুঠ করেছে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলো, তিনি আজ আমায় প্রশ্ন করছেন? চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ টেনে এনে নরেন্দ্র মোদী যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই খোঁচা দিতে চেয়েছেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক শিবিরের সংশয় নেই।
উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনী প্রচারকে এ বার ‘পরিবর্তন যাত্রা’ নাম দিয়েছে বিজেপি। ৫ নভেম্বর বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করেছেন। গোটা উত্তরপ্রদেশ জড়েই এই কর্মসূচির আওতায় সভা করবেন নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ। রবিবার আগরায় জনসভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর ভাষণে নোট বাতিলের প্রসঙ্গ যে আসবে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। কালো টাকা এবং জাল টাকার কারবার শেষ করতে এবং দেশের গরিব ও মধ্যবিত্তের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতেই যে তিনি নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সে কথা এ দিন ফের জোর দিয়ে বলেন প্রধানমন্ত্রী। তার পরই তিনি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। নাম না করে চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ টেনে তীব্র কটাক্ষ করেন মমতাকে। মোদী বলেন, ‘‘কারা আজ আমাকে প্রশ্ন করছেন? চিট ফান্ডে কাদের টাকা খাটত পুরো দেশ জানে। লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি মানুষ চিট ফান্ডে টাকা রেখেছিলেন আর রাজনৈতিক নেতাদের আশীর্বাদে সে টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছিল। বহু মানুষকে চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির জেরে আত্মহত্যা করতে হয়েছে, মরতে হয়েছে। ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে, এক বার দেখে নিন। আর তিনি আজ আমাকে প্রশ্ন করছেন?’’
আগরার জনসভা থেকে নরেন্দ্র মোদীর এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দেশের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। কিন্তু নোট বাতিল তথা কালো টাকা বিতর্কে কংগ্রেসকে কোনও আক্রমণ তিনি করলেন না। বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার প্রসঙ্গ টানলেন এবং নাম না করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন। বাংলার কোনও জনসভায় যদি মোদী মমতাকে আক্রমণ করতেন, তা হলে বিষয়টি অন্য রকম হত। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের কোনও এক মঞ্চ থেকে তিনি যখন মমতাকে আক্রমণ করলেন, তখন বিষয়টির তাৎপর্য সম্পূর্ণ আলাদা। নোট বাতিলের পর থেকে জাতীয় রাজনীতিতে যে তোলপাড় শুরু হয়েছে, তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিয়েই য়ে নরেন্দ্র মোদী সবচেয়ে চিন্তিত, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঙ্গা কংগ্রেস, ইন্দিরার পথেই ঘুরে দাঁড়াতে বার্তা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের
মমতাকে ঘিরে বিরোধী ঐক্যের আশঙ্কা, আচমকা আক্রমণে মোদী নিজেই
নোট সঙ্কট নিয়ে যে বিরোধী দলগুলি সরব, তাদের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠস্বরই সবচেয়ে চড়া। দিল্লিতে গিয়েও তুমুল বিক্ষোভ দেখিয়ে এসেছেন তিনি। এর পর ভারত পরিক্রমাও শুরু করতে চলেছেন। নোট সঙ্কট নিয়ে দেশ জুড়ে সরকার বিরোধী হাওয়া তোলার চেষ্টায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যে এখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তা স্পষ্ট। সেই কারণেই প্রধানমন্ত্রীর নিশানা ছিলেন এ দিন মমতা, বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনী প্রচারে বিজেপির স্লোগান অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্লোগানের সঙ্গেই মিলে গিয়েছে। ২০১১ সালে বাংলায় পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন মমতা। উত্তরপ্রদেশেও এ বার ক্ষমতায় আসার লক্ষেই বিজেপি পরিবর্তন যাত্রা শুরু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy